এগ্রিকেয়ার২৪.কম ডেস্ক: কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে প্রচলিত জুম চাষের স্থলে উচ্চ ফলনশীল জাত নির্ভর ফসল চাষ প্রবর্তনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা প্রদান করেছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের আয়োজনে ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় বান্দারবান জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দিনব্যাপি ‘পাহাড় অঞ্চলে নেরিকাসহ অন্যান্য উন্নত আউশ ধানের জাতের গ্রহনযোগ্যতা ও লাভজনকতা নির্ধারণ’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্ পার্বত্য অঞ্চলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে নেরিকা ও এই এলাকার জন্য উপযোগী অন্যান্য আউশ ধানের আবাদ বাড়ানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, পার্বত্য এলাকায় জুম চাষ এই এলাকার ঐতিহ্যবাহী চাষ পদ্ধতি হলেও জুমে ধান সহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন কম। পাহাড়ের সমতলে ও ঢালে স্বল্প পানি নির্ভর খরা সহনশীল নেরিকা জাতের ধান চাষের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।

কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে সূচনা বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো: আসলাম হোসেন। টেকনিক্যাল সেশনে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর পক্ষ থেকে বিষয় ভিত্তিক পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করা হয়। এতে বলা হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল আয়োতনে দেশের মোট আয়োতনের ১০ ভাগ হলেও দেশের চাল উৎপাদনে এই অঞ্চলের অবদান ১ শতাংশের কম। তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের জন্য উপযোগি উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত ও চাষাবাদ প্রযুক্তি উন্নয়নে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহন ও বাস্তবায়ন একান্ত অপরিহার্য।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষে এ বিষয়ে উপস্থাপনা করেন রাঙ্গামাটি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ প্রনব ভট্টাচার্য্য। তিনি রাঙ্গামাটি অঞ্চলের বর্তমান ফসল বিন্যাস ভিত্তিক ফসল আবাদ পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং খরিপ-১ মৌসুমে আউশ ধান চাষে উচ্চ ফলনশীল নেরিকা ধানের আওতা বাড়ানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

কর্মশালায় কৃষি মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি) মোহাম্মদ নজমুল ইসলাম বলেন কৃষির সার্বিক উন্নয়নে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন বাস্তবমুখী পদক্ষেপের কারনে বাংলাদেশের কৃষি বর্তমান বিশ্বের নিকট একটি মডেল। জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদা মেটানোর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রচলিত কৃষিকে লাগসই প্রযুক্তি নির্ভর কৃষিতে পরিনত করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মহসীন বলেন, বোরো ধান চাষে সেচের পানি হিসাবে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যাহারের ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। সেজন্য বৃষ্টি নির্ভর আউশ ধান চাষ বাড়ানোর জন্য কৃষকদের বিভিন্ন প্রণদনা ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি পাহাড় অঞ্চলে নেরিকাসহ অন্যান্য উন্নত আউশ ধানের জাত কৃষকদের মাঝে দ্রুত গ্রহনযোগ্য করার ব্যপারে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মীদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বিত প্রয়াসের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. মো: শাহজাহান কবীর এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক ড. মো: ফরিদ উদ্দিন, বান্দারবান পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন, বান্দারবান পার্বত্য জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার। সূত্র: কৃষি তথ্য সার্ভিস। ছবি: ব্রি নেটওয়ার্কস ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া।