নিজস্ব প্রতিবেদক, (পুঠিয়া) রাজশাহী: রাজশাহীর পুঠিয়ায় সরকারি খাদ্য গুদামে বোরো ধান দিতে কৃষকদের আগ্রহ নেই। স্থানীয় খোলা বাজারের চেয়ে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ধানের দাম কম হওয়ায় কৃষকরা সরকারি গুদামে ধান দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

উপরুন্ত উপজেলা খাদ্য গুদামে গত বছরের ন্যায় চলতি অর্থ বছরেও ধান ক্রয়ের লক্ষমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কার মধ্যে রয়েছেন। অপরদিকে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় ধানের আর্দ্রতা অনেক কমে যায়। যার কারণে বরাদ্দকৃত ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশি।

তবে স্থানীয় চাষিরা বলছেন, বিগত সময়ে খোলা বাজারে ধানের দাম কম ছিল। সে সময় খাদ্য গুদাম নানা অজুহাত দেখিয়ে কৃষকদের নিকট থেকে ধান ক্রয় করেনি।

বরং একটি সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে নিজেরাই তা সরবরাহ করেছেন। এখন বাজারে ধানের দাম বেশী তাই ওই চক্রটি গত এক বছর থেকে গুদামে ধান দিচ্ছেন না।

উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, সরকার নির্ধারিত প্রতিমণ এক হাজার ৪০ টাকা দরে মোট ৩৪৮ মে.টন ধান ক্রয়ের নির্দেশনা আসে। সে মোতাবেক গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ধান ক্রয়ের সময় সীমা নিধারণ করা ছিল।

তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও কৃষকরা খাদ্য গুদাম একমণ ধানও বিক্রয় করতে আসেনি। অপরদিকে চলতি মৌসুমে এক হাজার ৮০ টাকা দরে ৩৩০ মে.টন ধান ক্রয়ের নির্দেশনা আসে। তবে গম ক্রয়ের লক্ষমাত্রা অর্জিত হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো কৃষক গুদামে ধান বিক্রি করতে আসেননি।

আসাদুল হক নামের একজন স্থানীয় চাষি বলেন, বর্তমানে স্থানীয় খোলা বাজারে প্রতিমণ ধান প্রকার ভেদে এক হাজার ১৫০ থেকে ১২শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

অপরদিকে খাদ্য গুদাম প্রতিমণ ধান কিনছেন এক হাজার ৮০ টাকা দরে। তার ওপর পরিবহণ খরচ, গুদাম কর্মচারী ও লেবারদের বকসিস দিয়ে প্রতিমণে অতিরিক্ত আরো খরচ হয়।

এরপর খাদ্য কর্মকর্তা আর্দ্রতার অযুহাত দেখিয়ে চাষিদের অনেক রকম হয়রানি করেন। তবে গত বছরের মত এবারও চাষিরা বাজারে ধানের দাম ভালো পাচ্ছেন। তাই তারা খাদ্য গুদামে বিক্রি করতে আগ্রহী নয়।

এদিকে এবার উপজেলায় খাদ্য গুদামের চাহিদা অনুসারে ৫১৬ মে.টন গম দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে প্রকৃত কৃষক এক টন গমও দেয়নি। খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার সহায়তায় একটি সিন্ডিকেট চক্র চাষিদের কৃষিকার্ড ব্যবহার করে আমদানিকৃত গম সরবরাহ করেছেন।

অপরদিকে গত বছর থেকে খোলা বাজারে ধানের দাম বেশি। যার কারণে ওই চক্রটি গতবার থেকে এখনো পর্যন্ত একমণ ধান সরবরাহ করেনি। এর ফলে এবারও খাদ্য গুদামের ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্র অর্জিত হবে না।

এ ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আলী বলেন, কৃষক খোলা বাজারে ধানের দাম বেশি পাচ্ছেন, তাই খাদ্য গুদামে বিক্রি করতে আসছেন না। তবে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় ধানের আর্দ্রতা অনেক কমে যায়।

অপরদিকে এবার ধান ক্রয়ে এখনো দুই মাসের বেশি সময় আছে। এর মধ্যে যদি চাষিরা গুদামে ধান নিয়ে আসেন তবে আমরা অবশ্যই তা কিনে নিব।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ