নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাজশাহীর বাজারগুলো মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের কেজিতে কমেছে ৫ টাকা। গত সপ্তাহে পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজে বেড়েছিল ৬ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বাড়ার কারণে দাম কমেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর ২০২২) রাজশাহীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, চলতি সপ্তাহের শনিবার থেকে পেঁয়াজের দাম কমার পূর্বাভাস পাওয়া গেছে। দুদিনের মধ্যে ৪৫ টাকা কেজির পেঁয়াজ একলাফে ৪০ টাকা হয়েছে। বিক্রেতারা বিড়ম্বনায় পড়লেও খুশি হয়েছেন ক্রেতা।

নিত্যপ্রয়োজনীয় এ মসলা পণ্যের দাম কমায় চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এমনটিই বলছেন বাজার বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, উৎপাদন খরচের সাথে বিক্রির বাজারদর মিলে গেলে লোকসান গুনতে হয়। দাম নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন তারা। পাইকারি বাজারে ৮’শ টাকা মণ পেঁয়াজ বিক্রি করে কোন লাভ হয়না। হটাৎ দাম বাড়ার কারণে পেঁয়াজ পাইকারিতে হাজার-বারো’শ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। এতে কিছুটা আশার মুখ দেখেছিলেন চাষিরা। কিন্তু সেই আশায় গুড়েবালি।

পড়তে পারেন: কমেছে চাল তেল পেঁয়াজ ডিম-মুরগির দাম

রাজশাহীর সাহেববাজর মাষ্টারপাড়া এলাকার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, খুচরা বাজারে ১৮০ টাকা পাল্লা বিক্রি করছি। এককেজি ৩৮ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি করছি। রসুনের দাম আগের মতোই ১৬০ টাকা কেজি। পেঁয়াজের দাম বাড়ার সম্ভাবনা ছিল কিন্তু ভারতীয় পেঁয়াজ আসার কারণে চাষিরা লাভবান হতে পারবেন না।

এই ব্যবসায়ী আরোও বলেন, পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। প্রতিবছর রোজায় মসলাজাতীয় পণ্যের দাম বেড়ে যায়। এবার উল্টো হয়েছে। সারাবছরই দাম বেশি। উঠানামার মধ্যে আছে।

আরেক ব্যবসায়ী আবু বক্কার এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, পেঁয়াজের দাম হয়ত বাড়তে পারে। তবে, পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকা লাগার সম্ভাবনা জোরালো। আগামী তিন-চার দিনে ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা হতে পারে। কৃষকরা অন্তত বাঁচবে। হটাৎ দাম কমার কারণে সাময়িক সমস্যা হবে। পেঁয়াজের দাম কমার কারণে বিক্রি বেড়ে গেছে বলেও জানান এই পেঁয়াজ ব্যবসায়ী।

পড়তে পারেন: বিশ্বে পেঁয়াজ আমদানিতে শীর্ষে বাংলাদেশ, নিয়ন্ত্রণ সিন্ডিকেটের হাতে

দাম বাড়তে পারে এমনই আভাস দিয়েছে পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতারা। তারা বলছেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ার তেমন কোন কারন নাই। তবে, দেশে যে পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে তা মানুষের খাবারের মূল জায়গায় রয়েছে। ভারতীয় পেঁয়াজে ক্রেতাদের আগ্রহ নেই। বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, বড় বড় মেসে মূলত ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা। যারা দু এককেজি পেঁয়াজ কেনেন তারা দেশী কেনেন।

সাহেববাজার মাস্টারপাড়ার পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মাসুদ রানা বলেন, পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হলে দেশীয় কৃষকের লাভ। দাম কিছুটা বাড়বে। তবে, আমদানি বন্ধ করবে কে?

উল্লেখ্য, ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা বন্ধ থাকার সময় পেঁয়াজের কেজি লেগেছিল ৫০ টাকা। আমদানির অনুমোদনের পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে এখন ভারতীয় পেঁয়াজ আসছে। ফলে দেশীয় পেঁয়াজের চাহিদা ও দাম দুটোই কমেছে। বর্তমানে রাজশাহীর বাজারে দেশী পেঁয়াজ ৪০ টাকা এবং আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা কেজি দরে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ