রাজশাহী প্রতিনিধি, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কন্দের নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসলেও দাম এখনো স্থিতিশীল হয় নি। দাম ভাল এবং আবহাওয়া অনূকুল থাকায় চাষিরা মাঠে পেঁয়াজের চারার যত্নে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আর ক’দিন পরেই উঠবে চারা পেঁয়াজ।

এদিকে চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গতবারের চেয়ে আবাদের লক্ষমাত্রা কম নির্ধারণ করেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ‍সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ১৪ হাজার ৯১০ হেক্টর (১ লাখ ১১ হাজার বিঘা) জমিতে পেঁয়াজের আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। যা গতবারের চেয়ে ৬৭৬ হেক্টর (৫ হাজার ২৯ বিঘা) কম। গতবার আবাদ হয়েছিল ১৫ হাজার ৫শ’ ৮৬ হেক্টর (১ লাখ ১৬ হাজার বিঘা)।

এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে কন্দ পেঁয়াজ আসলেও দাম স্থিতিশীল হয় নি। চারা (আইল) পেঁয়াজ বাজারে না আসা পর্যন্ত দাম খুব একটা কমবে না বলে মত প্রকাশ করেছেন অনেকে।

দাম ভাল থাকায় এবং উৎপাদন খরচের তুলনায় আয় বেশী হওয়ার সম্ভাবনায় চাষিরা পেঁয়াজ ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কোন ক্ষেতে সেচ নিচ্ছেন, কোন ক্ষেতে আগাছা পরিস্কার করছেন, আবার কোন ক্ষেতে সার প্রয়োগ করছেন এমন দৃশ্য রাজশাহী অঞ্চলের মাঠে দেখা গেছে।

বিক্রেতারা এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে জানান, যে পর্যন্ত দেশি চারা পেঁয়াজ (রাজশাহীর ভাষায় আইল থেকে পেঁয়াজ) বাজারে না আসছে, সে পর্যন্ত দাম কমার  তেমন লক্ষণ নেই। আর কদিন পরেই চারা পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করবে।

পেঁয়াজ চাষি মোবারক হোসেন এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, প্রতি বিঘা পেঁয়াজ রোপনে চাষাবাদসহ উঠা পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবাদ ভাল হলে প্রতি বিঘায় উৎপাদন হবে প্রায় ৫০-৫৫ মণ (প্রতি ৪০ কেজি)। দাম ভাল থাকলে প্রতি বিঘায় লাভ হবে প্রায় ২০ হাজার টাকা।

পেঁয়াজ চাষে এ অঞ্চলের আবহাওয়া টেকসই হওয়ায় কৃষি বিভাগ, কৃষক ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিরা এ মৌসুমে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন আশা করছে।

মোহনপুর বেড়াবাড়ি গ্রামের কৃষক আকরাম হোসেন এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, গতবার তিনি ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছিলেন। কিছু পেঁয়াজ প্রথমে বিক্রি করে ঠকেছেন। তবে অবশিষ্ট পেঁয়াজে তিনি ভাল দাম পেয়েছেন। এবারো তিনি ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপন করেছেন বলে জানান।

রাজশাহীর মতিহারে ২৫ হেক্টর, বোয়ালিয়ায় ৩০ হেক্টর, পবা উপজেলায় ৯২৫ হেক্টর, মোহনপুর উপজেলায় ৫৩৫ হেক্টর, বাগমারায় ৩ হাজার ৮শ হেক্টর, চারঘাটে ৪১০ হেক্টর, পুঠিয়ায় ৩ হাজার ৩৫০হেক্টর, তানোরে ৪১০ হেক্টর, গোদাগাড়িতে ১ হাজার ৮৭৫ হেক্টর, বাঘায় ৫৮০ হেক্টর ও দুর্গাপুর উপজেলায় ২ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে কৃষি সম্পসারণ বিভাগের উপপরিচালক দেব দুলাল ঢালী এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে জানান, বাজারে পেঁয়াজের দাম ও আবহাওয়া চাষের অনুকুল হওয়ায় আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। তিনি আরো জানান, অন্যান্য ফসলের চেয়ে মসলা জাতীয় আবাদে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন।