মেহেদী হাসান, নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আদনান শফিক। পড়াশুনার শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে বায়োফ্লকে মাছ চাষের পাশাপাশি চাষ করতেন ফুলকপি, মূলা, বেগুন, ঢেঁড়সসহ বিভিন্ন সবজি। কিন্তু বর্তমানে দাম না থাকায় ফুলকপি ক্ষেতে ক্ষোভের প্রকাশ করলেন তিনি।

জানা গেছে, বর্তমানে রাজশাহীর কাঁচাবাজারে পাইকারিতে প্রতি মণ ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে। অপরদিকে ফুলকপি ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করে বাজার পর্যন্ত আনতে খরচ হয় ৪০০-৫০০ টাকা। ক্ষেত থেকে কপি আশেপাশের মানুষকে বিনামূল্যে বিতরণ করছেন। লাভের আশায় কপি চাষ করলেও তা লোকসানে পরিনত হওয়ায় চরম হতাশা আর ক্ষোভের সৃষ্টি হয় শফিকের। আর ক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে গতকাল বুধবার দুপুরে দিকে নিজের কপি ক্ষেতে হাসুয়া দিয়ে একটির পর একটি কপি কাটতে থাকেন।

এ ব্যপারে আদনান শফিক এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে জানান, বায়োফ্লকে মাছ চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন সবজি চাষ করি। ক্যাপসিকাম চাষ করে ধরা খেয়েছি। রাজশাহীতে ক্যাপসিকাম তেমন চলে না। করোনায় ঢাকায় নিয়ে যেতে পারিনি। এদিকে কপির দাম কমে গেছে। এখন বাজারে নিয়ে গেলে লোকসান হবে। ভাড়া- একটা শ্রমিকের খরচ হবে না। তাই কপি আর করব না। আবাদে এখন আর কোনো ইচ্ছে নেই। ২ বিঘা জমিতে ৩০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে।

রাজশাহীর পবা উপজেলার সিলিন্দা এলাকায় জমি বর্গা নিয়ে সবজি চাষ করে শফিক। সাথে তাঁর আরো দুই বন্ধু এ কাজে সহযোগিতা করে। বন্ধুদেও সাথে নিয়ে সবজি চাষ ও মাছ চাষ করে উদ্যোক্তা হতে চান রাবি শিক্ষার্থী। পড়াশোনার সাথে আয় রোজগারের পথ হওয়ায় বেশ ভালোই দিন যাচ্ছিল তাঁর। কিন্তু ক্যাপসিকাম ও কপিতে বেশ লোকসান হয়েছে। এতে ক্ষোভে জমির অবশিষ্ট কপি কেটে ফেলেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, বিঘাপ্রতি কপি উৎপাদন খরচ মৌসুম ভেদে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ফলন ২২ থেকে ২৩ মণ। আগাম কপি চাষে বেশি খরচ হয়ে থাকে আবার মৌসুমে কম খরচ হয়। আগাম কপি প্রায় শেষ হয়ে গেছে এখন আবারও নতুন ভাবে কপি লাগাচ্ছেন চাষিরা। আপাতত দাম কমলেও দাম বাড়বে।

রাজশাহীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫০০-৭০০গ্রাম ওজনের প্রতি পিস ১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে  পাইকারিতে প্রতি ৫ কেজি কপি ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ