নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কৃষি খাতে ফড়িয়াদের দৌরাত্ম্যে নাজেহাল কৃষকরা। কৃষকদের কথা ভেবে ফড়িয়া রুখতে এবার কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারণ করলো সরকার। একইসাথে নির্ধারিত বাজারে ব্যবসা করতে হলে লাইসেন্স নিতে হবে বলে জানা গেছে।

মধ্যস্বত্বভোগীদের হাত থেকে বাঁচতে কৃষিপণ্যের উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ মুনাফার পরিমাণ নির্ধারণ করে দিচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় হয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে গেছে। এ সম্পর্কিত গেজেট প্রকাশ হলেই কৃষিপণ্য বিপণন বিধিমালা কার্যকর হবে।

সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছেন, পণ্যভেদে উৎপাদন পর্যায়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ, পাইকারি পর্যায়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ মুনাফা করা যাবে। এমন বিধান রেখে কৃষিপণ্য বিপণন বিধিমালা-২০২১ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে সরকার। কৃষি বিপণন আইন-২০১৮-এর ক্ষমতাবলে এই বিধিমালা শিগগির গেজেট আকারে প্রকাশ হবে।

এ বিষয়ে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (নীতি ও পরিকল্পনা) শাহানাজ বেগম নীনা গণমাধ্যমকে বলেন, কৃষিপণ্য বিপণন বিধিমালা প্রণয়নের সব কার্যক্রম শেষ করে নথিপত্র গত ২৬ অক্টোবর আইন মন্ত্রণালয়ে গেছে। সেখান থেকে এটি গেজেট প্রকাশের জন্য বিজি প্রেসে পাঠানো হয়েছে।

একজন কর্মকর্তা জানান, এখন থেকে কৃষিপণ্যের জন্য। পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা সবাইকে লাইসেন্স নিতে হবে। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে গুদাম পরিচালনার জন্যও প্রয়োজন হবে লাইসেন্সের।

বিধিমালায় বলা হয়েছে- খাদ্যশস্য, অর্থকরী ফসল, ডাল ও কলাই, মসলা (ধনিয়া, কালিজিরা, শুকনো মরিচ), ডিম, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, পান, সুপারি, ভুসি, ডাল, নারিকেল, প্রক্রিয়াজাত পণ্য (চিড়া, মুড়ি, সুজি, সেমাই, আটা, ময়দা, কৃষিপণ্যের জুস, আচার, বেসন, চিপস ইত্যাদি) এবং মাছ (তাজা, শুকনো, লবণজাত ও হিমায়িত) উৎপাদক সর্বোচ্চ পর্যায়ে ৩০ শতাংশ, পাইকারি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে ২৫ শতাংশ মুনাফা করা যাবে।

এছাড়া তেলবীজ (রাই, সরিষা, তিল, তিশি, বাদাম, নারিকেল, রেঢ়ি, সূর্যমুখী, সয়াবিন) উৎপাদক সর্বোচ্চ পর্যায়ে ৩০ শতাংশ। পাইকারি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে ৩০ শতাংশ; ইক্ষু ও গুড় উৎপাদক সর্বোচ্চ পর্যায়ে ৩০ শতাংশ, পাইকারি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে ৩০ শতাংশ; ফল উৎপাদক সর্বোচ্চ পর্যায়ে ৩০ শতাংশ, পাইকারি পর্যায়ে ২০ শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে ৩০ শতাংশ; ফুল (সব শুকনো ও কাঁচা, ক্যাকটাস, অর্কিড, পাতাবাহার) উৎপাদক সর্বোচ্চ পর্যায়ে ৪০ শতাংশ, পাইকারি পর্যায়ে ২৫ শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে ৩০ শতাংশ; শাকসবজি (আলুসহ সব শাকসবজি) উৎপাদক সর্বোচ্চ পর্যায়ে ৪০ শতাংশ, পাইকারি পর্যায়ে ২৫ শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে ৩০ শতাংশ; মসলা (পেঁয়াজ, রসুন, আদা, হলুদ, কাঁচামরিচ) উৎপাদক সর্বোচ্চ পর্যায়ে ৪০ শতাংশ, পাইকারি পর্যায়ে ২০ শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে ৩০ শতাংশ মুনাফা অর্জন করা যাবে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ