ইউসুফ আলী সুমন, নওগাঁ প্রতিনিধি: বাংলাদেশের শস্যভাণ্ডার খ্যাত নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা। চলতি বছরে এ উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতে ফসল ক্ষতিগ্রস্তের শঙ্কায় ছিল এখানকার কৃষকরা। তবে, শঙ্কার মধ্যেই রোপণ করা রোপা আমনের ভালো ফলনে খুশি তারা।

দীর্ঘস্থায়ী বৃষ্টিপাতের কারণে কৃষকের যে ক্ষতি হয়েছে সেটা যাতে কৃষক অন্য ফসল দিয়ে পুষিয়ে নিতে পারে সেজন্য নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন করছেন উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা ও ব্লক সুপারভাইজাররা। নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শামসুল ওয়াদুদকেও মাঠ পরিদর্শনে দেখা যায়।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ মৌসুমে উপজেলার আটটি ইউনিয়নে ১৩ হাজার সাত’শ ৭০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্জিত হয়েছে ১৪ হাজার এক’শ ৫০ হেক্টর। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় তিন’শ ৮০ হেক্টর বেশি।

আরো জানা যায়, যেসব কৃষক আগাম জাতের স্বর্ণা, ব্রিধান-৭১, গোল্ডেন আতব রোপণ করেছিলেন তারা ইতোমধ্যে ধান কেটে ঘরে তুলতে শুরু করেছেন। যেসব কৃষক ব্রিধান-৩৪, ব্রিধান-৩২, রনজিত, পাজাম, ব্রিধান-৪৯, বিনা-১১, বিনা-১৭, বিনা-২০, ব্রিধান-৬২, ব্রিধান-৩৯, ব্রিধান-৭৫সহ স্থানীয় চিনি আতব, খাটোবাদা ও জগডলা জাতের ধান আবাদ করেছেন তারা সপ্তাহ দুয়েক পর থেকে ধান কাটতে শুরু করবে।

আধাইপুর ইউপির উত্তর আধাইপুর গ্রামের কৃষক সোহেল রানা বলেন, ছয় বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করেছি। দুই বিঘা জমির আগাম জাতের ব্রিধান-৭১ ধান কেটে ঘরে তুলেছি। দুই বিঘায় ৩৬ মণ ধান পেয়েছি। ১৪ থেকে ১৬ দিন পর থেকে অবশিষ্ট ধানগুলো কাটতে শুরু করবো। আল্লাহর রহমতে ফলন যা হয়েছে তাতে আমি খুশি।

বদলগাছী সদর ইউপির গাবনা গ্রামের কৃষক সাহাব উদ্দিন বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে রোপা আমন ধান চাষাবাদ নিয়ে শঙ্কায় ছিলাম। আমার ২০ বিঘা জমির মধ্যে ২ বিঘা জমি একটু নিচুতে থাকায় বৃষ্টির পানি জমেছিল। তবে পানি বের হয়ে যাওয়ার পর ঐ ২ বিঘাতেও চাষাবাদ করেছি। সবগুলো জমিতে আমার আশানুরূপ ফলন হয়েছে। আগাম জাতের গোল্ডেন আতব ধান কেটেছি। গোল্ডেন আতব ধান বিঘাতে ১৭ মণ হারে পেয়েছি। অন্য ধানগুলো ১৯ থেকে ২০ মণ হারে পাবো বলে আশা করছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাসান আলী এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, দীর্ঘস্থায়ী বৃষ্টির কারণে কৃষক রোপা আমন চাষ নিয়ে শঙ্কায় থাকলেও ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। শুধু বিলাশবাড়ী ইউনিয়নে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার কারণে আনুমানিক ২০ হেক্টর জমির ক্ষতি হয়েছে। তারপরেও এই উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে রোপা আমন ধান চাষাবাদ হয়েছে। আগাম জাতের ধানগুলো কৃষক কাটতে শুরু করেছে। আশা করা যায় মাস খানিকের মধ্যে মাঠের সবধান কৃষক ঘরে তুলতে পারবে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ