নিজস্ব প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রজনন ও চাষ প্রযুক্তি নির্দেশিকা উন্মোচন করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ।

বুধবার (০৯ জুন) রাজধানীর মৎস্য ভবনে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) আয়োজিত ‘বাণিজ্যিক গুরুত্বসম্পন্ন দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছের প্রজননকাল নির্ধারণ ও সংরক্ষণ’ বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় সচিব বলেন, ‍‍“দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ রক্ষায় প্রজননকাল নির্ধারণ করে ঐ সময় মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হবে। তবে নিষিদ্ধকাল হবে স্বল্প সময়ের জন্য। এক্ষেত্রে সবচেয়ে কম সময় মাছ ধরা নিষিদ্ধ করে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পেতে হবে। এজন্য একটি কারিগরী কমিটি গঠন করা হবে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রয়োজনে উপজেলাভিত্তিক পাইলটিং এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ সংরক্ষণে সম্মিলিতভাবে কাজ করার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে জনসম্পৃক্ততাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. এ এইচ এম কোহিনুর।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব আরো বলেন, “দেশের মৎস্য খাতের প্রবৃদ্ধি অভাবনীয়। আমরা দেশের যে কয়টি বিষয়ে সফলতার কথা বলি, গর্বের কথা বলি মৎস্য খাত তার মধ্যে অন্যতম। জলাশয় কমে যাওয়াসহ নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বর্তমানে দেশে মাছের উৎপাদন প্রায় ৪৬ লক্ষ মেট্রিক টন।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজ বলেন, “দেশীয় মাছের প্রজননকাল নিয়ে মৎস্য অধিদপ্তর কাজ করছে। দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে নতুন প্রকল্পও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তাছাড়া জনগণকে সচেতন করতে মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মাছের অভয়াশ্রম সংরক্ষণ ও বিএফআরআই উদ্ভাবিত মাছের চাষ প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য মৎস্য অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে।”

সম্মানীয় অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে। এজন্য স্থায়ীভাবে মা মাছ সংরক্ষণে বছরব্যাপী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে প্রজননকাল নির্ধারণ করে সাফল্য আসবে না।”

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, “গবেষণার ফলাফল মাঠে সম্প্রসারণ করা না গেলে গবেষণার কোন মূল্যই নেই। এজন্য বিএফআরআই এর সব গবেষণায় মৎস্য অধিদপ্তরকে সম্পৃক্ত করা হবে। তাছাড়া জনগণকে সম্পৃক্ত করতে না পারলে কোন গবেষণায় সাফল্য পাওয়া যাবে না।”

কর্মশালা শেষে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক প্রকাশিত ‘বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রজনন ও চাষ প্রযুক্তি নির্দেশিকা’ নামক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজ এবং সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম। কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, যুগ্ম সচিব ড. মোঃ মশিউর রহমান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের উপপরিচালক শেফাউল করিম, মৎস্য অধিদপ্তর ও বিএফআরআই-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক এবং মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ