ডেস্ক প্রতিবেদন: বিশ্বজুড়ে গমের রেকর্ড উৎপাদন বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইনস কাউন্সিল (আইজিসি)। ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমের জন্য গমের এ বৈশ্বিক উৎপাদন পূর্বাভাস পাওয়া গেছে।

মোট উৎপাদন প্রায় ৮০ কোটি টনে উন্নীত হতে পারে, যা রেকর্ড সর্বোচ্চ। অন্যতম শীর্ষ উৎপাদক ও রফতানিকারক দেশ ইউক্রেনে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি জমিতে আবাদ হওয়ায় এ পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।

মাসভিত্তিক প্রতিবেদনে আইজিসি জানায়, এ বিপণন মৌসুমে বিশ্বজুড়ে রেকর্ড ৭৯ কোটি ৬০ লাখ টন গম উৎপাদন হতে পারে। এর আগের মৌসুমে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৭৮ কোটি ১০ লাখ টন। আগের মাসের তুলনায় ৫০ লাখ টন বেশি উৎপাদনের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

ইউক্রেনে শস্যটির উৎপাদন ২ কোটি ৫২ লাখ টনে উন্নীত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এক মাস আগে দেয়া পূর্বাভাসে ২ কোটি ১৫ লাখ টন উৎপাদনের প্রাক্কলন করা হয়েছিল। এদিকে পূর্বাভাস বাড়লে গত মৌসুমের তুলনায় উৎপাদন অনেক নিম্নমুখী থাকবে। ওই সময় দেশটি ৩ কোটি ৩০ লাখ টন গম উৎপাদন করেছিল।

আইজিসি বলছে, চলতি মৌসুমে বাড়লেও আগামী মৌসুমে আবাদি জমির পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে। ফলে উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৭৮ কোটি ৮০ লাখ টনে, যা এ মৌসুমের তুলনায় ১ শতাংশ কম।

এদিকে চলতি মৌসুমের জন্য ভুট্টা উৎপাদনের পূর্বাভাস কমিয়েছে কাউন্সিল। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১১৬ কোটি ১০ হাজার টনে, যা আগের পূর্বাভাসের চেয়ে ৫০ লাখ টন কম।

মার্কিন কৃষি বিভাগ (ইউএসডি) জানিয়েছে, এ মৌসুমে ইউরোপীয় ইউনিয়নে গম উৎপাদন বেড়ে ২ কোটি ১০ লাখ টনে উন্নীত হতে পারে। এর আগের পূর্বাভাসে ২ কোটি ৫ লাখ টন উৎপাদনের প্রাক্কলন করেছিল সংস্থাটি। এছাড়া আর্জেন্টিনায় ১ কোটি ২৫ লাখ ও কানাডায় ৩ কোটি ৩৮ লাখ ২০ হাজার টন গম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

ইউএসডিএ অস্ট্রেলিয়ার উৎপাদন পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রেখেছে। উৎপাদনের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৬৬ লাখ টন। এছাড়া রাশিয়ায় ৯ কোটি ১০ লাখ ও যুক্তরাষ্ট্রে ৪ কোটি ৪৯ লাখ টন উৎপাদনের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

ইউএসডিএ বলছে, ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে গমের বৈশ্বিক মজুদ বেড়ে দাঁড়াতে পারে ২৬ কোটি ৮৩ লাখ ৯০ হাজার টনে, আগের মৌসুমে যা ছিল ২৬ কোটি ৭৩ লাখ ৩০ হাজার টন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপের শীর্ষ দেশগুলোয় অনুকূল আবহাওয়া এবং ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগরীয় রফতানিতে ইতিবাচক প্রবণতা বৈশ্বিক গম রফতানিকে গতিশীল করে তুলছে। ইউএসডিএর প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, এ মৌসুমে মোট রফতানির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ২১ কোটি ১৬ লাখ ২০ হাজার টন। এর মধ্যে ইইউর রফতানি বেড়ে ৩ কোটি ৬৫ লাখে এবং ইউক্রেনের ১ কোটি ৩০ লাখ টনে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে অস্ট্রেলিয়া ২০২২-২৩ মৌসুমে ২ কোটি ৭৫ লাখ টন গম রফতানি করতে পারে। রাশিয়ার রফতানি দাঁড়াতে পারে ৪ কোটি ৩০ লাখ টনে। তবে আর্জেন্টিনার রফতানি ৭৫ লাখ টনে অপরিবর্তিত থাকবে।

স্থানীয় সরবরাহ নিশ্চিত করতে গম রফতানি বন্ধ রেখেছে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ উৎপাদক ভারত। এতে দেশটির রফতানি সাড়ে ৬২ লাখ টন থেকে কমে ৫৯ লাখ টনে নামতে পারে বলে মনে করছে ইউএসডিএ।