আতাউর রহমান, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: শীতকালে কিংবা বর্ষাকালে মুরগির ঠান্ডাজনিত হাঁচি, কাশি, সর্দি, মাথা ফুলে যাওয়াসহ বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। এছাড়া আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়ও মুরগির ঠান্ডা লাগা এসব একাধিক রোগ হতে পারে। ব্রয়লার, লেয়ার ও সোনালী মুরগির সর্দির লক্ষণ ও কারণ এবং প্রতিকার বিষয়ে আজকের আলোচনা। আশা করছি মুরগির সর্দি শতভাগ ভালো হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ!

সব ধরণের মুরগিতে এই ঠান্ডা জনিত রোগের প্রকোপ অত্যন্ত বেশি থাকে। শীতকালে এ রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। প্রধানত Mycoplasma gallisepticum জীবাণু এ রোগের কারণ হলেও শ্বাসতন্ত্রের অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের জটিলতায় দীর্ঘস্থায়ী রোগের সৃষ্টি হয়।

সোনালী মুরগির সর্দির লক্ষণগুলো আগে জেনে নেওয়া যাক:

১. শ্বাসনালীর ভেতর ঘড় ঘড় শব্দ হওয়া।
২. মুরগির নাক দিয়ে তরল পদার্থ বের হওয়া।
৩. মুরগির খুশখুশি কাশি হওয়া।
৪. আক্রান্ত মুরগির খাদ্য গ্রহণে অনীহা।
৫. ওজন কমে যাওয়া।
৬. ডিম পাড়া মুরগির ডিম পাড়া বন্ধ হয়ে যাওয়া।
৭. ডিম উৎপাদন ১৫ থেকে ২০ পার্সেন্ট নেমে আসে।
৮. এ রোগে মৃত্যুর হার কম হলেও জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হয়।
৯. পোস্টমর্টেমে দেখা যায় হৃদপিণ্ড বড় হয়ে যাবে এবং সাদা ফাইব্রিন দেখতে পাওয়া যাবে।
১০. শ্বাসনালী লালচে দেখাবে এবং শ্বাসনালী ফুলে যাবে।
১১. বায়ুকোষ প্রদাহ (এয়ার সেকুলেটিস) দেখা যাবে।

সোনালী মুরগির সর্দির জীবানু ছড়ানোর মাধ্যম :

১. বাতাসের মাধ্যমে এ রোগের জীবাণু ছড়াতে পারে।
২. আক্রান্ত মুরগির ডিম হতে বাঁচাতে এই রোগ সংক্রমিত হয়।
৩. রোগাক্রান্ত এবং বাহক মুরগির দেহ হতে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে রোগের জীবাণু বের হয়ে আসে। ফলে খাদ্য, পানি এবং লিটার দূষিত হয় এবং এগুলোর মাধ্যমে সুস্থ মুরগির রোগ সংক্রমিত হয়।
৪. ইঁদুর, আঠালির সাহায্যে ও এ রোগ সংক্রমিত হতে পারে।

ব্রয়লার, লেয়ার ও সোনালী মুরগির মুরগির ঠান্ডার বা সর্দির ঔষধ :

১. টাইলোসিন: প্রতি লিটার খাবার পানিতে ২ গ্রাম মিশিয়ে তিন থেকে পাঁচ দিন খাওয়াতে হবে দিনে ৩ বার।
২. মাইক্রোনিড ভেট: প্রতি লিটার খাবার পানিতে ১ গ্রাম মিশিয়ে তিন থেকে পাঁচ দিন খাওয়াতে হবে।
৩. পালমোকেয়ার ভেট: ৪ লিটার খাবার পানিতে ১ গ্রাম মিশিয়ে দুই বার দুই থেকে পাঁচ দিন খাওয়াতে হবে।
৪. নেফটনিক: প্রতি লিটার খাবার পানিতে ১ গ্রাম মিশিয়ে তিন থেকে পাঁচ দিন খাওয়াতে হবে।

ব্রয়লার, লেয়ার ও সোনালী মুরগির সর্দির লক্ষণ ও কারণ এবং প্রতিকার লেখাটি লিখেছেন মো: আতাউর রহমান নওগাঁ জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ