ভারতে গরু জবাই, পশু

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: দেশে ভারত থেকে আসছে ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত গরু। বাইরের এসব গরুর থেকে ভাইরাস জনিত ক্ষুরা রোগ ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন গরুর খামারে। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ৪০টি গরু মারা গেছে বলে জানা গেছে।

কুড়িগ্রামের সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতীয় এসব গরু কোনরকমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছা্ড়াই দেশে ঢুকছে। উপজেলার চিলমারী হাটে হরমহামেশায় বিক্রি হচ্ছে আক্রান্ত গরু। ফলে আক্রান্ত পশুর সংস্পর্শে নতুনভাবে ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাসজনিত ভয়ংকর রোগ। তবে, যেসব খামারিরা ভারত থেকে গরু আমদানি করেছিলেন তারা প্রাণিসম্পদ অফিসের কাছে দোষ স্বীকার করেছেন।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, ভারতীয় গরু দেশে প্রবেশ না করলে এভাবে সংক্রমণ হতো না। বছরের বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষুরা রোগ দেখা দেয়। কিন্তু একসাথে এরকম হয় না। উপজেলার চাঁদনী বজরা এলাকার আরাফ ডেইরি ফার্মের একটি গাভীসহ ৮টি বাছুর আক্রান্ত হয়। এর আগে চিলমারী হাট থেকে একটি ভারতীয় ক্রস বাছুর গরু কিনে খামারে নিয়ে আসা হয়েছিল বলে জানা গেছে।

উপজেলার ভুক্তভোগী খামার মালিক ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চাঁদনী বজরা এলাকায় ১০টি খামারে গরুর ক্ষুরা রোগের সংক্রমণ ঘটেছে। আবুল কালামের ৫টি এবং এন্তাজ মিয়ার একটি, যাদুপোদ্দার গ্রামের আফজাল মিয়ার ২টি, একই গ্রামের হায়দার আলীর ৬টি, কামাল পাশার ৩টি এবং তবকপুর মিয়াপাড়া গ্রামের রোকুনুজ্জামানের ৫টি, হায়দার আলীর ৩টি, হাতিয়া হিজলী গ্রামের হারুন মিয়ার ৩টি ও পরেশ চন্দ্রের ২টি গরুসহ ৪০টি গরু মারা গেছে।

আরোও পড়ুন: গবাদিপশুর ক্ষুরা রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

ক্ষুরাক্রান্ত গরুর চিকিৎসা দিতে এবং খামারিদের পরামর্শ প্রদাণে উপজেলায় গঠন করা হয়েছে ২টি টিম। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ ঠেকাতে খামারে এবং বাড়িতে বাড়িতে গরুকে এফএমডি ভ্যাকসিন দিচ্ছেন প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

চিকিৎসা হিসেবে, ১০ লিটার পানিতে এক গ্রাম পটাশিয়াম পারমেঙ্গানেট মিশিয়ে আক্রান্ত গরুর মুখ ও পা দিনে ২ বার পরিষ্কার করা এবং এরপর মধুর সাথে সোহাগা ভাজা মিশিয়ে মুখে ও জিহ্বায় এবং সালফা লিনমাইট পাউডার পায়ে লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল আজিজ এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, কুড়িগ্রামের সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে গরু নিয়ে আসা হয়। এসব গরু চিলমারী হাটে বিক্রি হয়। মূলত আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে এখান থেকেই। উপজেলার চাঁদনী বজরা এলাকার আরাফ ডেইরি ফার্মের একটি গাভীসহ ৭টি বাছুর আক্রান্ত হওয়ার খবর জানা গেছে। তিনি একটা ভারতীয় বাছুর কিনে খামারে এনেছিলেন।

তিনি আরো বলেন, উপজেলায় বড়-ছোট ও প্রান্তিক পর্যায়ে ২৫০টির মতো গরুর খামার রয়েছে। এরমধ্যে ৪-৫টি খামারে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ