নাটোর প্রতিনিধি, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: লাগাতার ভারী বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় চলনবিলের উঠতি বোরো ধান ডুবে গেছে। কেউ কেউ ধান ঘরে তুলবেন কেউ বা তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এমন সময়ে এই দূর্ভোগে পরে হতাশ কৃষকেরা।

এর ফরে নানা সংকটেও পরেছেন ধান চাষিরা। তাদের শ্রমিক সংকটে পানি থেকে ধান কেটে ঘরে তুলতে অতিরিক্ত মজুরী দিতে হচ্ছে। ভেজা ধান শুকানো নিয়েও রয়েছে বেশ দূর্ভোগ। কয়েক মাস পরিশ্রম আর বিনিয়োগের ফল ঘরে তোলার সময়ে এমন দূর্দশায় পরতে হয়েছে তাদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলনবিলের নাটোর, সিরাজগঞ্জ জেলাসহ একাধিক এলাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ধান চাষিরা জানান, শ্রমিকের মজুরী দিতে হচ্ছে প্রতিমণে ২০ কেজি। এতে লোকসান গুনতে হবে তাদের। তবে আবহাওয়া ভালো থাকলে ধানের ক্ষতি হবে না বলে জানান স্থানীয় কৃষি বিভাগ ।

গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষনে সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম, তাজপুর, ইটালী ও ডাহিয়া ইউনিয়নের খাল উপচে তৈরী হওয়া জলাবদ্ধতায় বোরো ধানের জমি গেছে ডুবে। এতে করে পানির মধ্যে থেকে ধান কেটে ঘরে উঠাতে গিয়ে দুর্ভোগে পরেছেন কৃষক।

গতবছর আগাম বন্যায় বিলাঞ্চলের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও বাম্পার ফলনে লাভের আশা করেছিলেন। কিন্ত ভারী বর্ষনে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্থরা এবারও লাভের পরিবর্তে লোকসানের শঙ্কায় পরে গেছেন।

জয়নগর এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আরমান আলী জানান, ভারী বৃষ্টিপাতে নদী ও খালের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বোরো ধানের জমিতে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় তাদের পাঁকা ধান কেটে নিতে চরম দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। অর্ধেক ধানে ফসল ঘরে তুলতে হচ্ছে তাদের। এতে লাভতো দুরের কথা খরচের টাকা তোলাই সম্ভব হবে না বলে হতাশ তিনি।

ওই এলাকায় বগুড়া থেকে ধান কাঁটতে আসা শ্রমিক মতলেব ও সালাম ডুবে যাওয়া ধান কাঁটায় নানান সমস্যা তুলে ধরে জানান, এতে স্বাভাবিকের থেকে সময় ও পরিশ্রম দুই বেশি লাগে। সারাদিন পানিতে দাঁড়িয়ে ধান কাঁটলে অসুখ-বিসুখে পড়তে হয়। তাই মালিকের  পানিতে ডোবা ধান ঘরে তুলতে খরচ বেশী পড়ছে।

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে জানান, ভারী বর্ষণে আত্রাই নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় চলনবিলের কিছু বোর ধানের জমিতে পানি প্রবেশ করে। এতে মাত্র ৬০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

চলতি বছর সিংড়া উপজেলায় ৩৮ হাজার ১শ’ হেক্টর বোরো ধানের আবাদ হয়। আবহাওয়া ভালো থাকলে কিংবা পানি বৃদ্ধি না পেলে  ধানের ক্ষতি হবে না। তবে তীব্র শ্রমিক সংকটের কারণে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এতে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার কৃষকরা।