ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কেস স্টাডিজ চিকিৎসকদের ক্লিনিকাল গবেষণার পরিচালনা কমিটির প্রধান ডাঃ হানা কাহেলোভা বলেছেন, “দশকের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে উদ্ভিদ-ভিত্তিক (ভেষজ) ডায়েটগুলি টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। এই যুগান্তকারী কেস স্টাডি করে যা বোঝা যায় টাইপ ১ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রেও এটি একই হতে পারে’

নতুন কেস স্টাডিতে দেখা গেছে, ভেষজ ডায়েটগুলি পুরো কার্বোহাইড্রেটে সমৃদ্ধ। যা টাইপ ১ ডায়াবেটিসযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য চিহ্নিতকারীদের উন্নতি করতে সহায়তা করে। ভেষজ ডায়েট হলো দুগ্ধজাত পণ্য, ডিম এবং মাংস বাদ দেয়া। এতে ঐ ব্যক্তির ইনসুলিনের ডোজ হ্রাস করতে সক্ষম হন। কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমতে দেখা গেছে।

কেস স্টাডিজ ফিজিশিয়ানস কমিটি ফর রেসপন্সিবল মেডিসিনের গবেষকরা এটা বের করেছেন। ভেষজ এই পদ্ধতি ডায়াবেটিস এবং বিপাক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল।

ইমপালস্ হসপিটাল ক্লিনিক্যাল ডায়টেশিয়ান এন্ড কনসালটেন্ট মাহফুজা নাসরীন (শম্পা) ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপদেশ হিসেবে কিছু তথ্য দিয়েছেন যা খুবই উপকারী:

সকাল: সকাল সাতটা থেকে আটার মধ্যে সকালের নাস্তা শেষ করতে হবে। সকালের নাস্তাটা দেরিতে হলেও যেন ৯.০০টার পর না যায় তা খেয়াল রাখতে হবে।

নাস্তায় আপনি রুটি/চিড়া/খই/ মুড়ি/ওটস্/ যেটা আপনার পছন্দ সেটাই নিতে পারেন। সাথে নিরামিষ আার একটা ডিম।

মধ্য সকাল: ১০.০০.থেকে ১১.০০ টার মধ্যে আপনি নিতে পারেন আপনার পছন্দমতো কোনো একটা ফল। মিষ্টি ফল হলে ১/২ কাপ পরিমাণে খাবেন।

দুপুরের খাবার: দুপুর বেলায় আপনি আপনার খাবারে পরিমানমত ভাত, মাছ/মুরগীর মাংস, শাকসবজি, সালাদ ও লেবু ইত্যাদি রাখবেন। দুপুরের খাবার হবে ১.০০ থেকে ২.০০ টার মধ্যে।

বিকালের নাস্তা: বিকালের নাস্তায় আপনি রাখতে পারেন সুপ, ছোলা, চিনি ছাড়া বিস্কুট, মিষ্টি ছাড়া পিঠা, বাদাম, মুড়ি, রং চা ইত্যাদি।

রাতের খাবার: রাতে আপনি আপনার পছন্দমতো এবং পরিমানমতো রুটি বা ভাত বা ওটস নিতে পারেন। সাথে দুপুরের মতো মাছ/মুরগী, সবজি, সালাদ, লেবু ইত্যাদি রাখতে হবে। তবে রাতের খাবারটা আপনাকে রাত আটটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে শেষ করে ফেলতে হবে।

শোবার আাগে: রাতে শোবার এক ঘণ্টা আগে এক কাপ দুধ আপনি খেয়ে নিবেন। দুধে সমস্যা থাকলে দই, ছানা পনিরও আপনি নিতে পারেন পরিমাণমতো।

যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে:

১. মিষ্টি জাতিয় খাবার
২. ডুবোতেলে ভাজা খাবার
৩. অতিরিক্ত তেলে রান্না করা খাবার
৪. চর্বি জাতিয় খাবার; যেমন- ডালডা, ঘি ইত্যাদি
৫. গরু, খাসী, হাঁস ও পাখির মাংস এড়িয়ে চলতে হবে

গবেষণাপত্রে দেখা গেছে, একটি মহিলা টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এ সময় তার এ ১ সি ছিল ৮.৭ শতাংশ। তিনি প্রথমে স্বল্প-কার্বোহাইড্রেট (প্রতিদিন ৩০ গ্রাম কম কার্বোহাইড্রেট) গ্রহণ করেছিলেন, উচ্চ ফ্যাটযুক্ত ডায়েট যা মাংস এবং দুগ্ধের পরিমাণ বেশি ছিল। তার ব্লাড সুগার স্থিতিশীল, তবে তার প্রতি গ্রাম গ্রাম কার্বোহাইড্রেট বেশি পরিমাণে ইনসুলিনের প্রয়োজন ছিল। তার মোট কোলেস্টেরলও ১৭৫ থেকে ২২১ মিলিগ্রাম / ডিএল বেড়েছে।

দ্বিতীয় ক্ষেত্রে, একজন ৪২ বছর বয়সী পুরুষ টাইপ ১ ডায়াবেটিস আক্রান্ত এবং ফলাফল ঠিক আগের মতোই।

গবেষকরা লক্ষ করেছেন যে এর আগে করা একটি ছোট্ট গবেষণাটি কেস স্টাডি ফলাফলকে সমর্থন করে – উচ্চ-কার্বোহাইড্রেট, উচ্চ ফাইবারযুক্ত ডায়েট টাইপ ১ ডায়াবেটিসযুক্ত ১০ জনের গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণ উন্নত করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, লো-ফ্যাটযুক্ত, উদ্ভিদ-ভিত্তিক ডায়েটগুলি টাইপ ২ ডায়াবেটিসযুক্তদের উপকৃত করে। নিরামিষাশীদের তুলনায় যারা উদ্ভিদ-ভিত্তিক ডায়েট খান তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার প্রায় অর্ধেক ঝুঁকি থাকে।

কয়েক দশকের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে উদ্ভিদ-ভিত্তিক ডায়েটগুলি টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে। এখন, এই যুগান্তকারী কেস স্টাডিজ আশা জাগিয়ে তুলেছে যে টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও এটি একই হতে পারে, বলে জানিয়েছেন ডাঃ কাহেলোয়া।

ভেষজ ডায়েট ডায়াবেটিসযুক্ত ব্যক্তিদের যেভাবে সহায়তা করে শিরোনামে সংবাদের তথ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।