কে জে এম আবদুল আউয়াল, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: মরিচ গাছের পাতা কোঁকড়ানো রোগের ভুক্তভোগী প্রায় সকল বাগানি হয়ে থাকেন। তাদের নিত্যনৈমত্তিক যন্ত্রণার একটি কারণ। জেনে নিন মরিচের পাতা কোঁকড়ানো রোগের সমাধান সম্পর্কে-

মরিচের গাছের পাতা কোঁকড়ানো রোগের সমাধান শিরোনামে বিষয়টি আলোচনা করেছেন রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কে জে এম আব্দুল আউয়াল।

মরিচের পাতা কোঁকড়ানো রোগের অন্যতম হল মাকড় বা পোঁকা। সাধারণত কয়েক ধরণের মাকড় মরিচ গাছকে আক্রমণ করে থাকে। মাকড়ের কারণে পাতাগুলো নষ্ট হয়ে যায়। মরিচের গোড়া পোঁচে যায়। নতুন করে কুশি নেয়না। মরিচের বাটগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে। যার ফলে ফলন কমে যায়। সাধারণত রাজশাহীতে এই রোগ কম হয়। তাই মরিচের উৎপাদন বেশি।

লক্ষণ
এই মাকড়ের আক্রমণে মরিচের পাতা কুঁকড়ে যায়। এটি ভাইরাসের মত কিন্তু ভাইরাস নয়। অনেকে মনে করেন ভাইরাসের কারণে হয় তো এমন হয়েছে । আসলে কিন্তু ভাইরাস নয়। কচি পাতার রস এই থ্রিপস পোকা গাছের কচি পাতা ও ডগার রস শুষে খেয়ে ফলে পাতা উপরের দিকে কুঁকড়ে যায় এবং গাছ দূর্বল হয়ে পরে।
পাতার মধ্যশিরায় আশে-পাশে বাদামী রঙ হয়ে যায় ও শুকিয়ে যায় নতুন বা পুরানো পাতার নিচের পিঠে অনেক ক্ষতি হয় যার ফলে নৌকার খোলের মতো করে পাতা উপরের দিকে কুঁকড়ে যায়। আক্রান্ত পাতা দেখতে বিকৃত দেখায়।

সমাধান
এই ধরণের সমস্যা হলে ১ দশমিক ৮ ইসি এবামেকটিন বা সানমেকটিন প্রয়োগ করতে হবে। এটি স্প্রে করতে হবে। এতে মাকড় নিয়ন্ত্রনে আসে। সাধালনত মানুষ মাকড় নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে কিছু ভূল করে । থাকে তাহলো মাকড়ের যে জন্ম হয় তখন একবার মাকড় নিয়ন্ত্রক দিয়ে থাকে। কিন্তু এই পোঁকা ৯ থেকে ১১ দিন স্থায়ী থাকে। দিয়ে থাকে। সেই স্পে করলে পোঁকাটা হয়তো মারা যায় কিন্তু ডিমটা মারা যায় না। সেই ডিম থেকে ৩ দিন পর আবার বাচ্চা দেয়। এর জন্য সঠিক পদ্ধতি হলো জোড়া পদ্ধতিতে মাকড় নিয়ন্ত্রক দিতে হবে। জোড়া পদ্ধতি হলো একবার দেয়ার পর ৩ থেকে পাঁচদিনের মধ্যে আবার দিতে হবে। আবার এই দিকে খেয়াল রাখতে হবে যেন সমস্থ পাতা যেন ভিজে যায়। ফাঁকা না থাকে।

এগুলো যদি দেখা দেয় তাহলে সালফারের জিংক এসব ব্যাবহার করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর করে এবং ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। যদি ভালোভাবে আক্রান্ত হয়ে যায় তাহলে কপার অক্সাইড বা কপার জিংক ব্যবহার করতে হবে। সালফার জাতীয় কীটনাশক ১ লিটার পানিতে ৫ গ্রাম মিশিয়ে বা প্যাকের গায়ে লেখা মাত্রা অনুযায়ী সকালে বা বিকালে সূর্য ডোবার পর স্প্রে করতে হবে। প্রায় ১০ দিন পরপর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে। ঔষধ স্প্রে করায় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ। পাইরিথ্রয়েড জাতীয় কীটনাশক ব্যবহার পরিহার করতে হবে।

প্রিয় চাষী মনে রাখতে হবে, যে কোন সমস্যা হলে প্রথমে আপনাকে যেতে হবে স্থানীয় কৃষি সম্পদ অফিসে। অভিজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে আপনাকে সেবা দিতে হবে। এছাড়া এগ্রিকেয়ার২৪.কম এর ফেসবুক পেজে ম্যাসাঞ্জারে আপনার সমস্যা জানাতে পারেন, আমরা বিশেষজ্ঞ এর কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে আপনাদের জানাবো।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ