নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, এভাবে চলতে থাকলে উত্তরাঞ্চলে পানি নির্ভর চাষাবাদ ব্যাপক ব্যয়বহুল হয়ে পড়বে। এক সময় বলতাম লবণের বাটিতে ধান চাই, এখন বলবো মরুভূমিতেও আমি ধান চাই।

আজ শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বার্ষিক পর্যালোচনা কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গাজীপুরের প্রধান কার্যালয়ে আজ থেকে শুরু হওয়া ছয় দিনব্যাপী এ বৈজ্ঞানিক কর্মশালায় পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলায় মরুভূমিতে চাষ উপযোগী ধানের জাত উদ্ভাবনে আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী।

কম পানিতে কীভাবে বেশি ধান উৎপাদন করা যায়, সেদিকে নজর দিতে হবে উল্লেখ করে তিনি পানির অর্থনীতি নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে বলে জানান।

আগে শুধু বোরো জাত উদ্ভাবনের উপর গুরুত্ব দেওয়া হতো জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, বর্তমানে আউশ ও আমনের উপরও জোর দিচ্ছি। বোরো কিন্তু ইনকিউবেটর বেবি। তাই বোরোর উৎপাদনে পানির খরচও বেশি।

তিনি বলেন, আমাদের প্রয়োজন কী, তা আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমি কিন্তু খুব সাধে উত্তর থেকে দক্ষিণে যেতে বলছি না। এতো পানি খরচ করে কতোদিন বোরো করবো তা চিন্তা করতে হবে।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, শুধু বন্যার পানিই যে, গত মৌসুমে ক্ষতি করেছে তা নয়, ব্লাস্ট রোগেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। যেখানে ৫০ মণ করে ধান হতো সেখানে তা ৪০ মণে নেমে এসেছে। সব যায়গায় এ ক্ষতি হয়নি, তবে কিছু জায়গায় হয়েছে। এতে মোট উৎপাদন কিছুটা হলেও প্রভাব পড়েছে। তাই ব্লাস্ট প্রতিরোধী ধানের জাত উদ্ভাবনে জোর দিতে হবে।

ব্রি উদ্ভাবিত যন্ত্রপাতি কেন মাঠ পর্যায়ে সমাদৃত হচ্ছে না সে দিকেও বিজ্ঞানীদের নজর দিতে বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবীর বলেন, বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে চারটি হাইব্রিডসহ আউশ, আমন ও বোরো ধানের সর্বমোট ৪০টি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। শুধু গত বছরেই ব্রি ১০টি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে, যা ব্রির ইতিহাসে মাইলফলক।

এ সময় তিনি ব্রির বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন। এর মধ্য হলো ধানের জাত উন্নয়নে আমরা আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি। বর্তমানে আমাদের জিংক ব্যাংকে ৯৫০ ধরনের বিদেশি জার্মপ্লাজম সংরক্ষিত আছে।

চীন থেকে প্রাপ্ত ৪১টি উচ্চফলনশীন আউশ ধানের মৌলিক সারির গবেষণা চলছে। এ ছাড়াও খরা সহনশীল ৪৫২টি মৌলিক সারি নিয়ে ব্রির আঞ্চলিক কার্যালয় রাজশাহী ও কুষ্টিয়ায় গবেষণা চলছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনুদ্দীন আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনার নানা তথ্য তুলে ধরেন ব্রির উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান ও মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. তমাল লতা আদিত্য।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মহসীনসহ কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ত একাধিক প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।