ইউসুফ আলী সুমন, মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর মহাদেবপুরে আমন ধান কাটা-মাড়াই শেষে অধিক লাভের আশায় আগাম জাতের আলুচাষে ব্যস্ত কৃষকরা। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে কেউ খেতে সেচ দিচ্ছেন, কেউ টপ ড্রেসিং (আলু গাছের সারিতে মাটি তুলে দেয়া ও সরিয়ে দেয়ার কাজ) করছেন।

আবার কেউ কেউ নিড়ানি দেয়াসহ সার-কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। যেন দম ফেলার সময় নেই চাষিদের। দিনে পরিমিত রোদ ও রাতে কুয়াশা। নেই পোকা-মাকড়, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। আগামী ২০-২২ দিনের মধ্যে আগাম জাতের আলু বাজারে উঠবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আগাম লাগানো আমন ধান কর্তণের পর কৃষকরা জমি পতিত রাখে না। বছরের পর বছর যেসব জমি পড়ে থাকতো কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় কয়েক বছর থেকে সেসব জমিতে আলুচাষ করে বিপ্লব ঘটিয়েছেন কৃষকরা। ২০২১-২০২২ রবি মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ৩০টি ব্লকে এক হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে আলুচাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

১৯ নভেম্বর শুক্রবার পর্যন্ত ৩৯০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী), ষাটাল ও স্থানীয় জাতের আলুচাষ হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে আলু রোপণ চলছে, লক্ষ্যমাত্রার অধিক জমিতে আলুচাষ হবে বলে প্রত্যাশা করছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। কৃষকদের মতে, ফলন ভালো হলে বিঘাপ্রতি ৬০-৭০ মণ আলু পাওয়া যায়। একবিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয় প্রায় ১৩-১৫ হাজার টাকা।

উপজেলার আখেড়া গ্রামের আলুচাষি মিঠু কুমার মন্ডল জানান, এ বছর আড়াই বিঘা জমিতে আলুচাষ করেছেন। এখন খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন। গত বছরের ন্যায় এবারও বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি। নাটশাল গ্রামের ওমর আলী জানান, গত বছর দুই বিঘা জমিতে আলুচাষ করেছিলেন। এবার চাষ করছেন চার বিঘা। এতে খরচ কম লাভ বেশি।

তিনি আরও জানান, হিমাগারে আলুর বীজ রেখে ভালো মানের বীজ পেয়েছেন। গত বছর দুই বিঘা জমিতে আলুচাষ করে খরচ সেরে ২৭ হাজার টাকা লাভ করেছেন। এবার তার চেয়ে বেশি লাভের আশা করছেন তিনি।

মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন, প্রকৃতি চলতি মৌসুমে আলুচাষের অনুকূলে রয়েছে। এখন পর্যন্ত খেতে রোগ-বালাইয়ের প্রকোপ নেই। কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের পরিচর্যার বিষয়ে পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ