ইউসুফ আলী সুমন, মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: দেশের অন্যতম ধান-চাল উৎপাদনকারী উপজেলা নওগাঁর মহাদেবপুরে ২০২১-২০২২ খরিপ-২ মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে চিনি আতব (সুগন্ধি) ধানের চাষ হয়েছে। এখন শেষ মহূর্তের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। কৃষি বিভাগ বলছে, মহাদেবপুরে ৩১ হাজার টন আতপ ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা কোনো বিপর্যয় না ঘটলে কৃষকের বাড়ির আঙ্গিনা সোনালি ধানে ভরে উঠবে। আগামী ৭-৮ দিনের মধ্যে কাটা-মাড়াই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আমন মৌসুমে উপজেলায় ১০ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের চিনি আতব ধান চাষ হয়েছে। এ পরিমাণ জমি থেকে ৩১ হাজার ২০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।

আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে, উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রমের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। উপজেলার প্রায় ২০টি অটো রাইসমিলে প্রতিদিন এক হাজার মেট্রিক টনের অধিক চিনি আতব চাল উৎপাদন হয়। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে সরবরাহ করা হয়।

এ চালের পোলাও, বিরিয়ানি, পায়েস ইত্যাদি খাবার আদিকাল থেকেই ব্যাপক জনপ্রিয়। এসব খাবার বাদ দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন কিংবা অনুষ্ঠান যেন অপূর্ণ থেকে যায়। বিয়ে জন্মদিনসহ সকল সামাজিক উৎসবে চিনি আতব চালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কৃষকদের মতে, ফলন ভালো হলে বিঘাপ্রতি ১২-১৪ মণ ধান পাওয়া যায়। একবিঘা জমিতে খরচ হয় ৮-৯ হাজার টাকা।

উপজেলার সফাপুর গ্রামের রকেট সোসেন, হোসেন আলী ও ঝলঝলি এলাকার ফারুক হোসেনসহ ২০-২২ জন চাষি জানান, গোল্ডেন ও স্থানীয় জাতের চিনি আতব ধান চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে তারা সার-কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন। এ মৌসুমে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তারা।

উপজেলা সদরের ধান-চাল ব্যবসায়ী আইনুল ইসলাম জানান, বাজারে প্রতিমণ নতুন চিনি আতপ ধান ১৫০০-১৬০০ টাকা দরে বিক্রি হবে। স্থানীয় বাজারে ধানের দাম ভালো রয়েছে। এমন দাম থাকলে কৃষকরা লাভবান হবেন বলেও জানান তিনি।

মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় জানান, ধান-চাল এ উপজেলার প্রধান অর্থকরী কৃষিপণ্য হিসেবে অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। উপজেলা পর্যায়ে দেশের সর্বাধিক চিনি আতব ধান মহাদেবপুরে চাষ হয়। মৌসুমের শুরু থেকে চাষিদের পরামর্শ দিয়ে আসছেন তারা। এবার কৃষকরা অধিক মুনাফা লাভ করবে বলে আশা করছেন তিনি।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ