মাঠ জুড়ে সোনালী শীষ

এম. আব্দুল বাতেন, গোদাগাড়ী, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: মাঠজুড়ে সোনালী ধানের শীষ। বাতাসের তালে ধানের শীষের ঢেউ খেলানো নয়নাভিরাম দৃশ্য। এখানে লুকিয়ে রয়েছে কৃষকের স্বপ্ন। মাঠ জুড়ে সোনালী শীষ, আমনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা।

বাড়ি বাড়ি চলছে ধান কাটার প্রস্তুতি। সপ্তাহ খানেক পরেই পুরোদমে ধান কাটা শুরু হলে গোলা ভর্তি হবে চাষিদের। মেতে উঠবে নবান্ন উৎসবে।



গোদাগাড়ী উপজেলায় এমনই সব দৃশ্যের দেখা মিললো। এবার এ উপজেলায় আমন মৌসুমে ধানের আবাদ হয়েছে ২৪ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে।

লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২৩ হাজার ৭৪৬ হেক্টর। এবার সেই আবাদ লক্ষ্য মাত্রা ছড়িয়েছে। সময়মত বৃষ্টি হওয়ায় এবং আবহাওয়া ফসল উৎপাদনের অনুকূলে থাকায় ধানের বাম্পার ফলনের উৎপাদনের আশা করছেন কৃষকরা। তবে গত দুই বছর হতে ধানের দাম ভালো দাম না পাওয়ার হতাশায় আছে তারা।

গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, এবছর রোপা আমন উৎপাদনের জন্য সময়মত বৃষ্টি হয়েছে এবং আবহাওয়া অনুকূলে ছিলো। এছাড়া ফসলে বড় ধরনের পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় উৎপাদন ভালো হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

গোদাগাড়ী পৌর এলাকার কৃষক আবুল হোসেন জানিয়েছেন, এবার ৮ বিঘা জমিতে বোরো আমন ধান আবাদ করেছি। সার-সেচ সহ প্রতি বিঘা আবাদে ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

আশা করা যাচ্ছে প্রতি বিঘাতে ২০-২২ মন ধানের ফলন হবে। ধানের ফলন নিয়ে এই কৃষক খুশি হলেও ধানের নায্য দাম নিয়ে তিনি বলেন, আমরা কৃষি কাজ করেই সারা জীবন জীবিকা নির্বাহ করে সংসার ও ছেলে মেয়েদের খরচ চালায় কিন্তু ধানের নায্য দাম না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি।  এমন চলতে থাকলে আমাদের হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হবে।

কৃষক শাহজাহান জানান, এবার ধানের ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি। বৃষ্টিতে সামান্য রোগ বালাই দেখা দিলেও কীটনাশক স্প্রে করে স্বল্প সময়ে তা কাটিয়ে উঠেছি।

বিঘা প্রতি প্রায় ২২ বিঘা ধানের ফলন হবে। তবে ধানের দাম বাড়ানোর জন্য তিনি সরকারের দৃষ্টি কামনা করে বলেন, ধানের বাজারের দাম পাওয়া যায় না। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কম দামে ধান কিনে ফলে আমরা মধ্য থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হই।

সরকারি ভাবে ধান ক্রয়য়ের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার কৃষকদের কাছে হতে ধান ক্রয়ের ঘোষনা দিলেও প্রকৃত কৃষক তা দিতে পারে না। খাদ্য গুদাম গুলোতে দালাল ও রাজনৈতিক নেতারা ধান সরবরাহ করে থাকে। মাঠ পর্যায়ে এসে সরাসরি কৃষকের কাছ হতে ধান কেনার দাবি জানান এই কৃষক।

গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, আগাম জাতের ধান ব্রি-৭১ মাঠে কাটা শুরু হইে আর ১০ দিনের মধ্যেই ধান কাটাকাটি পুরোদমে শুরু হয়ে যাবে। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকাই ধানের বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মাঠ জুড়ে সোনালী শীষ, আমনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা এতে কৃষকের মনেও আনন্দ দেখা দিয়েছে।

আরও পড়ুন: ২৬ টাকা কেজিতে ৬ লাখ মেট্রিক টন আমন ধান কিনবে সরকার