ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কমলা আর বাতাবি লেবুর সংকরায়ণে তৈরি ফল মাল্টা বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই বিদেশি ফল চাষ করতে বেশ ধকল সহ্য করছেন চাষিরা। মাল্টা গাছের পাতা হলুদ হয়ে মারা গেলে করণীয়।

ভিয়েতনাম, দক্ষিণ চীন এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতে এই ফল উৎপত্তি বলে ধারণা করা হয়। দেশি বিদেশি বিভিন্ন জাত রয়েছে। তবে এদেশে চাষ উপযোগী জাতের মধ্যে বারি মাল্টা-১ অন্যতম। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত এ জাতটি উচ্চফলনশীল। গাছের ডালপালা ছড়ানো এবং ঝোপানো থাকে।

মধ্য ফাল্গুন (মার্চ) থেকে মধ্য চৈত্রে (এপ্রিল) ফুল আসে। ফল পাকে কার্তিক মাসে। ফল দেখতে সবুজ। তবে পরিপক্ব অবস্থায় কিছুদিন রেখে দিলে কমলা রঙ ধারণ করে। ফলের নিচে ছোট গোলাকার চিহ্ন থাকে। প্রতিটির ওজন প্রায় ১৫০ গ্রাম। ফলের শাসের রঙ হালকা হলুদ। গাছপ্রতি ফল ধরে ৩০০ থেকে ৪০০। সে হিসেবে হেক্টরপ্রতি গড় ফলন প্রায় ২০ টন।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় একটি জাত উদ্ভাবন করেছে। নাম এফটিআইপি বাউ মাল্টা-১। প্রতিটি ফলের ওজন ১৭০ হতে ২০০ গ্রাম। মিষ্টতা ১৭-২১ টি.এস.এস.। গাছ বামনাকৃতি। বিচি কম হয়। ফল রসালো ও মিষ্টি। মার্চ- এপ্রিল মাসে ফুল আসে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ফল পাকে।

রোগ প্রতিরোধ:

মাল্টা গাছের পাতা হলুদ হয়ে মারা গেলে বুঝতে হবে মাল্টা গাছের গ্রিনিং রোগ হয়েছে। এই রোগ হলে গাছের পাতার মধ্যশিরা হলদে হয়ে যায় এবং শেষ পর্যায়ে হলুদাভ রং ধারণ করে। পাতার শিরা-উপশিরাগুলো ক্রমশ গাঢ় সবুজ হতে থাকে, ও পাতা কুঁকড়িয়ে ডাই-ব্যাক রোগের এর সৃষ্টি করে।

সাইলিড পোকা দ্বারা এই রোগ বিস্তার লাভ করে থাকে। এই পোকা সাইট্রাস গ্রিনিং ভাইরাস বহন করে।

গ্রিনিং রোগ : এ রোগে পাতার মধ্যশিরা হলদে হয়ে যায় এবং শেষ পর্যায়ে হলুদাভ রঙ ধারণ করে। শিরা উপশিরাগুলো ক্রমশ গাঢ় সবুজ হতে থাকে, শিরা দুর্বল ও পাতা কুঁকড়ে যায়। এটি ভাইরাসজনিত রোগ। সাইলিড পোকা এর বাহক। তাই পোকা দমন (ব্যবস্থাপনা আগে দেয়া আছে) করতে হবে। আক্রান্ত হলে অন্য গাছে রোগ যেন না ছড়ায় সেজন্য গাছ উঠিয়ে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

ফলের মাছি পোকা : এ পোকার আক্রমণে ফল নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিকার হিসেবে সেক্স ফেরোমোন ফাঁদ ব্যবহার করে পোকা দমন করা সম্ভব।

মাকড় : এক ধরনের ক্ষুদ্র মাকড়ের কারণে গাছের পাতা নিচের দিকে কুঁকড়ে যায়। প্রতিকার হিসেবে ভার্টিম্যাক অথবা ইকোম্যাক ১ মিলিলিটার হারে প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে পাতার নিচের ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।

আগামরা রোগ : এ রোগ দেখা দিলে পুরো গাছ বা গাছের ডাল আগা থেকে শুরু করে ক্রমে নিচের দিকে মরে যায়। রোগটি ছত্রাকের আক্রমণে হয়। প্রতিকার হিসেবে কিছুটা সুস্থ অংশসহ আক্রান্ত স্থান কেটে পুড়ে ফেলা এবং কর্তিত অংশে বোর্দোমিশ্রণ বা নোইন (ছত্রাকনাশক) ২ গ্রাম/লিটার অথবা কুপ্রাভিট ৭ গ্রাম/ লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

মাল্টা গাছের পাতা হলুদ হয়ে মারা গেলে করণীয় সংবাদের তথ্য কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ