নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে রাজশাহীতে প্রতিকেজি ব্রয়লার ও সোনালী মুরগির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা উঠানামা করেছে। অন্যদিকে লাল ও সাদা ডিমের দাম থমকে আছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রাজশাহীর সাহেববাজার মাষ্টারপাড়া কাঁচাবাজারের পাইকারি মুরগি বিক্রেতা মিঠু এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, ডিসেম্বরের শুরুর দিকে সব ধরনের মুরগির দামই কমেছে। তার কয়েকদিন পরেই আবার দাম বেড়ে যায়। কদিন আগে সোনালী মুরগির দামটা বেশ চড়া ছিল। এরপর সব ধরনের মুরগি মোটামুটি কম দামে বিক্রি করছি। এখন আবার আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাজার কখনো টান আবার কখনো ঢিল!

এই ব্যবসায়ী জানান, বড় ব্রয়লার ১৩৫ টাকা বিক্রি করেছি এবং ছোট ব্রয়লার ১৪৫ টাকা কেজি বিক্রি করলেও এখন ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার। সোনালী ২৭০ টাকা থেকে কমে ২১৫ টাকা হয়েছিল; এখন ২৩০ টাকা কেজি, লেয়ার সাদা ১৮০ টাকা, লেয়ার লাল ১৯০ টাকা যা আগে ছিল ২২০ টাকা এবং দেশী মুরগি ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন সাড়ে ৩’শ করে বিক্রি হচ্ছে। হাঁস বিক্রি করছি ৩০০ টাকা কেজি।

আরেক ব্যবসায়ী নাদের হোসেন এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, মুরগির দাম আর বাড়বে বলে মনে হয়না। যা দাম আছে এই দামেই চলবে। আবার বলাও যায় না, বাজার টান পড়লে দাম বাড়ে। তবে মনে হচ্ছে আর দাম বাড়বে না।

বাজারের ডিম ব্যবসায়ী শামীম হোসেন এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, শীতে ডিমের দাম কিছুটা বাড়ে। কিন্তু এবার তেমন বাড়লো না। বাজার থমকে আছে।

দাম থমকে থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাঁচাবাজারের ঠিক নাই। ডিম একটু টান পড়লে দাম বাড়ে আবার ক্রেতা কমে গেলে বা চাহিদা না থাকলে দাম কমে যায়। শীতের সময় বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ডিম বিক্রি হওয়ায় চাহিদা একটু বাড়তিই থাকে। তবে ডিমের দাম বাড়লো না কেন তা সঠিক জানা নাই।

এই ব্যবসায়ী জানান, প্রতিহালি (৪টি) লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩২ টাকায়। সাদা ডিম ৩০ টাকা ও হাঁসের ডিম ৪৮ টাকা হালি দরে বিক্রি করছেন।

আজ রোববার (২৬ ডিসেম্বর ২০২১) নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

পোল্ট্রি খাদ্যের দাম বাড়ার কারণে মুলত বাচ্চা তুলছেন না খামারিরা। আগে খামারিরা লোকসান করেছে। মুরগি উৎপাদন না হওয়ার কারণেই মূলত দাম বেড়ে ৩০০ টাকা কেজি লাগে।

রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, রাজশাহীতে বার্ড ফ্লু রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক মুরগি মারা গেছে। ভয়ে আর নতুন বাচ্চা তুলেননি খামারিরা। যেসব খামার বন্ধ ছিল তারা উৎপাদনে ফিরেছেন তাই একটু দাম কমেছে। তবে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।

ডিমের দাম থমকে থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডিমের দাম আর বাড়বে না বলেই মনে হচ্ছে। খাদ্যের দাম বেড়েছে বস্তাপ্রতি ৪০০ টাকা। কিন্তু ডিমের দাম সেভাবে বাড়েনি। বড় বড় কোম্পানিগুলো ডিম উৎপাদনে নেমেছে তাই প্রান্তিক খামারিদের দু:খ ঘোঁচে না। আর খাদ্যের দাম বাড়ানো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। সরকার সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছে না। বৈশ্বিকভাবে দাম ১২ টাকা থেকে ১৩ টাকা বাড়লে বাংলাদেশে সিন্ডিকেটে দাম বাড়ায় ৭০-৮০ টাকা। এটা কোন নীতি নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না। ডিমের দাম বাড়ানো প্রয়োজন। সর্বনিম্ন ৩৬ টাকা হালি লাল ডিম থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক।

মুরগি ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, কয়েকদিন আগেও ব্রয়লার ১৪০ টাকা, সোনালী ২৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এছাড়াও লেয়ার ও দেশি মুরগির দামও কেজি ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। কিন্তু আগে দাম ভালোই ছিল। বর্তমানে বাজার আগের দিকেই যাচ্ছে।

রাজশাহীর সাহেববাজার মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজার ঘুরে জানা গেছে, বেগুন ১৫-২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ১৫ টাকা, বরবটি ২০-২৫ টাকা, করলা ৩০ টাকা, সজনে ডাটা ৬০-৭০ টাকা, ঢেড়স ২০ টাকা, পটল ২০-২৫ টাকা, ঝিঙে ২০-২৫ টাকা, কচুর লতি ২০-২৫ টাকা, পেঁেপে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

মসলার বাজারে দেখা যায় বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪০টাকা, আদা ৯০-১০০ টাকা, রসুন ১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা ও শুকনো মরিচ ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ