আমের ফুল ও ফল

দিলরুবা খাতুন, মেহেরপুর, (বাসস): মেহেরপুর জেলার আম বাগানগুলোতে গাছে গাছে আমের গুটিতে ভরে গেছে। একইসঙ্গে বেড়েছে আম চাষিদের ব্যস্ততা।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এ বছর আমের বাম্পার ফলন হবে। স্বাদের দিক থেকে মেহেরপুরের আম জগত জুড়ে। মেহেরপুরের আম সুস্বাদু হওয়ায় এ জেলার আমের চাহিদা দেশের বাইরে ইউরোপ মহাদেশেও তার সুখ্যাতি ছড়িয়েছে। চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে আমের বাগানও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মেহেরপুরের মুজিবনগরে বৃটিশ শাসনামলে তৈরি মুজিবনগর আম্রকাননে ১২শ’ আমগাছ আছে। ওই এক বাগানে ১২শ’ আমগাছ ১২শ’ জাতের। জেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সব জাতের আমেরই চাষ হচ্ছে। লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছর কৃষিজমিতে তৈরি করা হচ্ছে আমের বাগান।

কৃষি বিভাগ আশা করছে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে থাকা আম বাগানে ৩৩ হাজার টন আম উৎপাদনের। যা থেকে ১৬০০ কোটি টাকার বেচা-কেনা হবে। আম চাষিদের মতে অনুকূল পরিবেশের কারণে আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ কারণে এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

আমচাষি নুর হোসেন জানান- এবছর তিনি চারটি আমবাগান কিনেছেন প্রায় ৮ লাখ টাকায়। প্রতিটি বাগানের গাছে গাছে আমের গুটিতে ভরে গেছে। তিনি আশা করছেন- বড় প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে ১৬ থেকে ১৭ লাখ টাকার বেচা কেনা হবে বলে।

আমচাষি বজলুর রহমান জানান- কীটনাশকসহ আম সংগ্রহ শ্রমিকের মুজুরি চরমভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই তুলনায় আমের দাম বাড়েনি। তাছাড়া আম বাগান ব্যবসা চরম ঝুঁকিপূর্ণ হওয়াতে তিনি বাগান কেনা ছেড়ে দিয়েছেন। তবে ভরা মৌসুমে বাগান থেকে আম কিনে বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করেন। তাতে ঝুঁকি কম বলে জানান।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শঙ্কর কুমার মজুমদার জানান, জেলায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। এখানকার মাটির গুণেই হিমসাগর, লেংড়া, বোম্বাই, তিলি বোম্বাই ইত্যাদি জাতের আম খুবই সুস্বাদু। বিশেষ করে নিয়মিত জাত ল্যাংড়া, গোপালভোগ, ক্ষীরসাপাতি, আশ্বিনা জাতের বাগান বেশি থাকলেও গবেষণাকৃত বারি-৩, বারি-৪ জাতের বাগান তৈরির ক্ষেত্রেও আগ্রহী হয়ে উঠছে অনেকে। সেই সঙ্গে নতুন নতুন বাগানগুলো তৈরি হচ্ছে বনেদি ও হাইব্রিট জাতের।