ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বাজারে বিভিন্ন রকমের ফল কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। এসব ফলের মধ্যে লিচু, তরমুজ, কলা, পেয়ারা, পেঁপেসহ হরেক রকমের ফল ছাড়াও অনেক ফল যেসব ফল গরমে ক্লান্তি দূর করে।রসালো, পানিযুক্ত ফল গরমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। এসব ফলের উপকারিতা নিয়ে দৈনিক ইনকিলাব, কালের কন্ঠ, প্রথম আলো বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে প্রচণ্ড গরমে শরীর ভালো রাখতে এবং গরমে ক্লান্তি দূর করতে যেসব ফল খাওয়ার কথা বলা হয়েছে…

লিচু: লিচু বা লেচু (বৈজ্ঞানিক নাম Litchi chinensis) একটি নিরক্ষীয় ও ক্রান্তীয় অঞ্চলের ফল। লিচুর ফল রসালো। গরমে মানুষের শরীরে যেসব জিনিসের প্রয়োজন হয় তার সব কিছুই রয়েছে লিচুতে। ভিটামিন, প্রোটিন, সাইট্রিক অ্যাসিড, ফ্যাট, আইরন, ফসফরাস সবই লিচুতে পাওয়া যায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

                                                       ছবি: লিচু

কলা:কলা বিভিন্ন গুণাগুণে সমৃদ্ধ একটি ফল। এর পুষ্টিগুণ অধিক। এতে রয়েছে দৃঢ় টিস্যু গঠনকারী উপদান যথা আমিষ, ভিটামিন এবং খনিজ। কলা ক্যালরির একটি ভাল উৎস। এতে কঠিন খাদ্য উপাদান এবং সেই সাথে পানি জাতীয় উপাদান সমন্বয় যে কোন তাজা ফলের তুলনায় বেশি। একটি বড় মাপের কলা খেলে ১০০ ক্যালরির বেশি শক্তি পাওয়া যায়। কলাতে রয়েছে সহজে হজমযোগ্য শর্করা। এই শর্করা পরিপাকতন্ত্রকে সহজে হজম করতে সাহায্য করে। কলার মধ্যে থাকা আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন উত্‍পাদনে সাহায্য করে। গবেষকরা জানান, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ নিশ্চিত করতে দেহে পটাশিয়ামের উপস্থিতি অত্যন্ত জরুরি। এছাড়াও দেহে পটাসিয়ামের আদর্শ উপস্থিতি নিশ্চিত করা গেলে কমে যায় স্ট্রোকের ঝুঁকিও। আর এই উপকারী পটাশিয়াম কলায় আছে প্রচুর পরিমাণে। গবেষকরা দেখেছেন, একটি কলায় প্রায় ৫০০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে। আর মানবদেহে প্রতিদিন ১৬০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়ামের যোগান দেয়া গেলেই স্ট্রোকের হাত থেকে বছরে বেঁচে যেতে পারে ১০ লক্ষ মানুষ। কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও পটাশিয়ম, যা শরীরকে চনমনে রাখতে সাহায্য করে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

                                                                   ছবি: কলা

পেয়ারা: গরমে পেটের সমস্যা হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। তার সঙ্গে সর্দি কাশি। পেয়ারায় ভিটামিন সি রয়েছে। তাই এ ধরনের সমস্যা থেকে পেয়ারা আপনাকে দূরে রাখে। লাইকোপেন(Lycopene), কোয়ারকেটিন(Quercetin), ভিটামিন সি এবং আরো কিছু পলিফেনল আছে যা কিনা শক্তিশালী এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে আর এই এন্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার হওয়ার ঝুকি কমায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

  ছবি: পেয়ারা

আম: একে ফলের রাজা। আম গরমকালেই বেশি পাওয়া যায়। স্বাদের পাশাপাশি আয়রন ও সেলেনিয়মের জন্যও আম খুবই উপকারী। আয়ুর্বেদ ও ইউনানি পদ্ধতির চিকিৎসায় পাকা ফল ল্যাকজেটিভ, রোচক ও টনিক বা বলকারকরূপে ব্যবহৃত হয়। রাতকানা ও অন্ধত্ব প্রতিরোধে পাকা আম এমনকি কাঁচা আম মহৌষধ। কচি পাতার রস দাঁতের ব্যাথা উপশমকারী। আমের শুকনো মুকুল পাতলা পায়খানা, পুরনো অমাশয় এবং প্রস্রাবের জ্বালা-যন্ত্রনা উপশম করে। জ্বর, বুকের ব্যথা, বহুমূত্র রোগের জন্য আমের পাতার চূর্ণ ব্যবহৃত হয়।

 

পেঁপে: পাকা পেঁপেতে ফলে প্রচুর এনজাইম রয়েছে, যার ফলে হজমের সমস্যাই কমে যায় গরমকালে। রক্ত কাশে, রক্তার্শে, মূত্রনালীর ক্ষতে, দাদ ও সোরিয়াসিস-এ, কোষ্ঠকাঠিণ্যে এবং কৃমিতে হিতকর। পাকা পেঁপে অর্শরোগ ও কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে হিতকর। পেঁপেতে প্রচুর পেপেন এনজাইম আছে যা মানুষের পাকস্থলীতে আমিষ হজমে সাহায্য করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে হজমকারী এনজাইম প্যাপাইন। পাতায় অ্যালকালয়েড, গ্লুকোসাইড এবং ফলে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন আছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

                                                           ছবি: পেঁপে

আনারস: এই ফলে রয়েছে ব্রোমেলিয়ন এনজাইম যা ফ্যাট ও প্রোটিন হজম করতে সাহায্য করে।পুষ্টির অভাব দূর করে: আনারস পুষ্টির বেশ বড় একটি উৎস। আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। এসব উপাদান আমাদের দেহের পুষ্টির অভাব পূরণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। ওজন নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে এই ফল। শুনতে অবাক লাগলেও আনারস আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে। কারণ আনারসে প্রচুর ফাইবার এবং অনেক কম ফ্যাট রয়েছে। সকালে আনারস বা সালাদ হিসেবে এর ব্যবহার অথবা আনারসের জুস অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।

 

 

 

 

 

 

                                                               ছবি: আনারস

তরমুজ: পানিতে ভরা এই মিষ্টি ফলে রয়েছে ‘লাইকোপেন’ যা রোদের তেজ থেকে ত্বককে রক্ষা করে।তরমুজে খুব সামান্য ক্যালরি আছে। তাই তরমুজ খেলে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো আশঙ্কা থাকে না। তরমুজের ৯২ শতাংশই পানি। শরীরে পানির অভাব পূরণে ফলের মধ্যে তরমুজই হলো আদর্শ ফল। তরমুজে আছে পর্যাপ্ত ভিটামিন এ, সি, পটাশিয়াম ও আঁশ। মওসুমি এই ফলটির রয়েছে নানা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তরমুজ হলো ভিটামিন ‘বি৬’-এর চমৎকার উৎস, যা মস্তিষ্ক সচল রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তরমুজে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি খেলে দেহের অক্সিডেটিভ স্ট্রেসজনিত অসুস্থতা কমে।

       ছবি: তরমুজ