ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: আম এ একটি সুস্বাদু মিষ্টি রসালো ফল। ল্যংড়া, ফজলি, আম্রপালি, লখনাসহ আমের বিভিন্ন জাত রয়েছে। তার মধ্যে হাড়িভাঙ্গা জাতের আম সারা দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। দেশের অন্যান্য স্থানের আম শেষ হয়ে যাওয়ার পরই এই আম বাজারে পাওয়া যায়। এবছর ঝড়-বাদলে কিছুটা ক্ষতি হলেও ফলন ভালো হয়েছে। প্রতিবছর এ আম বিক্রি করে রংপুরের চাষিরা দুই’শ কোটি টাকা আয় করেন।

বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারিতে স্থবির হয়ে পড়েছে ব্যবসা বাণিজ্য। আঘাত হেনেছে মানুষের জীবন যাত্রায়। সারাদেশের আম চাষীদের মতো রংপুরের আম চাষিদের কীটনাশক সংকট, শ্রমিক সংকটে পরিচর্যার অভাবসহ বেশকিছু কারণে সুস্বাদু হাড়িভাঙ্গা আমে স্বপ্ন ভঙ্গের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

চাষিরা আম গাছের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ছেন আর ভাবছেন এই আম যথা সময়ে পরিপক্ক হলেও তা বাজারজাত করবেন কিভাবে। করোনা ছোবলে চারিদিকে সব কিছু স্থবিব। সেখানে এই আম পরিবহন হবে কিভাবে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে আম চাষিদের তালিকা তৈরী করা হচ্ছে। সরকারি ভাবে এই আম বাজারজাত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

রংপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার রংপুর জেলায় ৩ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে আমের ফলন হয়েছে। এর মধ্যে হাড়িভাঙ্গার ফলন হয়েছে ১ হাজার ৪৫০ হেক্টরে। গত বছর প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছিল ৯ দশমিক ৪ মেট্রিক টন। এবার শ্রমিক সংকটে অযত্ন-অবহেলায়, কীটনাশকের সংকটসহ নানা কারণে কৃষকরা আম ক্ষেত ঠিক মত পরিচর্যা করতে পারেনি। ফলে এবার ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে এই আমের দাম কিছুটা কম থাকলে প্রতি কেজি হাড়িভাঙ্গা আম ৮০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়।

আরোও পড়ুন:রাজশাহীতে আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করলো জেলা প্রশাসন

মিঠাপুকুরের আম চাষি বকুল হোসেন, শ্যামপুরের সামছুজ্জামানসহ বেশ কয়েকজন আম চাষি জানান, প্রতিবছর কীটনাশক ব্যবসায়ীরা বাকিতে কীটনাশক দিয়ে যেত, সেই সাথে ক্ষেত পরিচর্যার বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিত। কিন্তু করোনা কারণে কীটনাশক বাকি পাওয়াতো দূরের কথা নগদ টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছেনা। এছাড়া করোনার ক্ষেত পরিচয়ার জন্য এবার শ্রমিক পাওয়া যায়নি। ফলে ক্ষেত ঠিক মত পরিচর্যা করা যায়নি। তারা আরো জানান, সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে এই আম পরিপক্ক হলে তা বাজারজাত করা হবে কি ভাবে। আম যদি বাজারজাত করা না যায় তালে গাছেই পঁচে যাবে।

তবে কৃষি বিভাগ হাড়িভাঙ্গা আম বাজারজাত করার পরিপল্পনা গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছেন রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন করোনা প্রভাবে অনেক কিছুই এলোমেলো হয়ে গেছে। দেশের বিখ্যাত এই আমের যাতে কৃষক ন্যায্য মূল্য পায় সে লক্ষে কৃষি বিভাগ আম বাজারজাত করণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে আম চাষিদের তালিকা প্রণোয়নের কাজ শুরু হয়েছে। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন