এগ্রিকেয়ার২৪.কম ডেস্ক: চলতি বোরো মৌসুমে রংপুর অঞ্চলে উচ্চফলনশীল (উফশী) ব্রি ২৮ জাতের ধানে আশঙ্কাজনকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে নেক ব্লাস্ট। ফসল ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিতে শুরুর মহুর্তে এ রোগের আক্রমণে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন ধান চাষীরা।

তবে কৃষি বিভাগ ও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন তবে এখনো যদি সঠিক মাত্রায় ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা যায়, তবে বহুলাংশেই এ সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

কৃষি বিভাগ জানায়, বিরূপ আবহাওয়াই নেক ব্লাস্ট ছড়িয়ে পড়ার প্রধান কারণ। তবে এখনো যদি সঠিক মাত্রায় ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা যায়, তবে বহুলাংশেই এ সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত রংপুর অঞ্চলে রোগটিতে আক্রান্ত ধানের ক্ষেতের পরিমাণ ১১ দশমিক ৫২ হেক্টর। এর মধ্যে রংপুর জেলায় আক্রান্ত হয়েছে ১ দশমিক ৯৭ হেক্টর, গাইবান্ধায় ৩ দশমিক ১৫, কুড়িগ্রামে ৪ দশমিক ২, লালমনিরহাটে দশমিক ৯৫ এবং নীলফামারীতে ১ দশমিক ২৫ হেক্টর।

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়নের বিরাহীমপুর পাড়ার কৃষক ইয়াকুব আলী জানান, তার ৩০ শতক জমিতে ব্রি ২৮ ধানে নেক ব্লাস্ট দেখা দিয়েছে। নষ্ট হয়ে গেছে এক-তৃতীয়াংশ ধান। নীলফামারীর সদর উপজেলার চরাই খোলা ইউনিয়নের কৃষক দুলু রায় জানান, তিনি ধান ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। কিন্তু নেক ব্লাস্টে তার ক্ষেতেরে ৬০ শতাংশ ধান আক্রান্ত হয়েছে। নিয়মিত ছত্রাকনাশক ব্যবহারেও সুফল মিলছে না।

এ এলাকার কৃষক আব্দুর রহিম বলেন, ‘অন্য জাতের ধান গাছে নেক ব্লাস্ট দেখা দেয় নি। যারা ব্রি ২৮ জাতের ধান আবাদ করেছেন, তাদের জমিতেই রোগটির প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বাজারে ব্রি ২৮ জাতের চালের অনেক বেশি চাহিদা থাকায় বোরো মৌসুমে রংপুর অঞ্চলে উফশী জাতের এ ধানের ব্যাপক আবাদ হয়। ব্রি ২৮ মূলত বোরো মৌসুমের ধান। এবার এপ্রিলে তাপমাত্রা বেশি ওঠানামা করায় ধানটি রোগাক্রান্ত হচ্ছে।

রংপুর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আক্রান্ত জমিতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে সঠিক মাত্রায় করতে হবে। না হলে ফল পাওয়ায় যাবে না।

প্রসঙ্গত, রংপুর অঞ্চলে ২০১৭-১৮ মৌসুমে ৫ লাখ ১৯ হাজার ১৩২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এ থেকে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ লাখ ৭০ হাজার ৭৩২ টন। প্রতি হেক্টরে ধানের উৎপাদন ধরা হয়েছে ৪ দশমিক ১৫ টন। এর মধ্যে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৬২১ হেক্টর জমিতে উফশী জাতের ব্রি ২৮ ধানের আবাদ হয়েছে। সূত্র: বণিক বার্তা।