রাজধানীতে তিনদিনব্যাপী খাদ্য মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাজধানীতে তিনদিনব্যাপী খাদ্য মেলা শুরু হয়েছে। মেলায় নিরাপদ খাদ্য ও ফসল উৎপাদনসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নানা তথ্য মিলছে।

আজ বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) প্রাঙ্গনে এ মেলা শুরু হয়েছে। খাদ্য দিবস উপলক্ষে কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থা (এফএও) এ মেলার আয়োজন করেছে।



মেলায় সরকারি ও বেসরকারি ৪৬ টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকছে। রাজধানীতে তিনদিনব্যাপী খাদ্য মেলা শুরু হওয়ায় এখান থেকে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।

এবারের খাদ্য দিবসরে মূল প্রতিপাদ্য হলো আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ, পুষ্টিকর খাদ্যেই হবে আকাক্সিক্ষত ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী। এ প্রতিপাদ্যের ওপর অনুষ্ঠিত হয় সেমিনার।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। সেমিনারে কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব আরিফুর রহমান অপুর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু ও সম্মানীয় অতিথি ছিলেন এফএও বাংলাদেশ প্রতিনিধি মি. রবার্ট ডি. সিম্পসন।

আয়োজিত সেমিনারে প্রতিপাদ্যের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন থাইল্যান্ডের মাহিডল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. ভিসিথ চাভাসিট।

মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাজমা শাহীন, আইসিডিডিআরবির সিনিয়র পরিচালক ডা. তাহমিদ আহমেদ ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান। সবশেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মো. কবির ইকরামুল হক। কৃষি মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ বিভিন্ন সংস্থার উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, বিজ্ঞানী, গণমাধ্যমকর্মী প্রমুখ সেমিনারে অংশ নেন।

এর আগে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী অন্যান্য অতিথিদের নিয়ে কেআইবি চত্বরে তিন দিনের খাদ্য মেলা উদ্বোধন করে স্টলগুলো ঘুরে দেখেন। সকালে বের হয় এবারের খাদ্য দিবসের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে শুরু হওয়া শোভাযাত্রাটি মেলা প্রাঙ্গনে এসে শেষ হয়।

বিশ্ব খাদ্য দিবসের উদ্দেশ্য হল, ক্ষুধা, অপুষ্টি ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলা, কৃষির উন্নতিতে মনোযোগ দেওয়া, কৃষিভিত্তিক উৎপাদনে উৎসাহ দান করা, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সহায়তা গ্রহণে উৎসাহ প্রদান,  গ্রামীণ মানুষ, মূলতঃ মহিলা ও কম উন্নত মানুষদের অবদানে উৎসাহ দান, প্রযুক্তির সমৃদ্ধিকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ছড়িয়ে দেওয়া।

উল্লেখ্য বিশ্বব্যাপি খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) দীর্ঘদিন কাজ করে চলেছে। এফএও ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও ১৯৭৯ সালে এ সংস্থার ২০তম সাধারণ সভায় হাঙ্গেরির তৎকালীন খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী বিজ্ঞানী ড. পল রোমানি বিশ্বব্যাপি খাদ্য দিবস পালনের প্রস্তাব করেন।

তার প্রস্তাবের পর ১৯৮১ সাল থেকে বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিষ্ঠার দিনটিতে (১৬ অক্টোবর, ১৯৪৫) বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে এ দিবসটি গুরুত্বের  সাথে পালিত হয়ে আসছে।

আরও পড়ুন: ডেইরি ও পোল্ট্রির উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত; ষড়যন্ত্রে স্বার্থন্বেষী ব্যবসায়ী এবং বিদেশীরা