নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাজশাহীর বিভিন্ন আমের আড়তে বেঁচাকেনা শুরু হয়েছে মৌসুমি ফল আম। আমের জাত ও স্বাদের ওপর নির্ভর করে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দামে। জেলার চারঘাট বাজারে প্রতি মণ গুটি জাতের আম ৮শ’ টাকা, গোপালভোগ ২৩শ’ টাকা, লক্ষণ ভোগ ৭শ’ টাকা, ল্যাংড়া ১৬শ’ টাকা ও কিছু জায়গায় হিমসাগর আম বিক্রি হচ্ছে ২১শ’ টাকা পর্যন্ত।

দেশে আম্পানসহ বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক তাণ্ডবের পরও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে চারঘাটের আমের ফলন। শুরুতেই পাড়া হচ্ছে গুটি, গোপালভোগ ও খিরশাপাত জাতের আম। গত মাসের ১৫ মে থেকে রাজশাহীতে আনুষ্ঠানিকভাবে আম পাড়া শুরু হয়েছে।

উপজেলার রায়পুর গ্রামের আম চাষি মকবুল হোসেন বলেন, ১৫ বিঘা জমির ওপর আম বাগান আছে আমার। বাগানে গোপালভোগ, ক্ষিরশাপাত, হিমসাগর ও ল্যাংড়া জাতের আম রয়েছে। নানা রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরেও গাছে প্রচুর আম আছে। প্রশাসনের পরিকল্পনা অনুযায়ী সঠিক সময়ে আম পাড়া শুরু করা হয়েছে। এখন যদি সঠিকভাবে আমগুলো বাজারজাত করতে পারি তাহলে লাভবান হওয়া যাবে।

পরানপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম জানান, করোনা দুর্যোগের কারণে বাইরের ব্যবসায়ীরা বাগানে আম কিনতে কম আসছে। তবে বাজারে আমের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমান সময়ের মত থাকলে চাষী ও ব্যবসায়ীরা লাভবান হবে বলে জানান তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুনজুর রহমান এগ্রিকেয়ার২৪.কম জানান, এ বছর চারঘাট উপজেলায় আম চাষ হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে। সব ঠিকঠাক থাকলে ৪৮ হাজার মেট্রিক টন আমের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে । আম বাজারজাতকরণে প্রশাসনসহ কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি আম বাজারজাতকরণ জটিলতা কাটাতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে ডাক বিভাগ এবং বাহিরের ব্যবসায়ীদের জন্য থাকবে করোনা কালীন বিশেষ ব্যবস্থাপনা। প্রকৃতির তান্ডবের পরেও চারঘাটে আম এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে বলে জানান তিনি।

এদিকে চারঘাট-বাঘা আসনের সংসদ সদস্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের প্রচেষ্টায় “ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে” চারঘাট-বাঘার আম যাচ্ছে ঢাকায়। শুক্রবার সন্ধায় বাঘা উপজেলার আড়ানী স্টেশন থেকে তিন ব্যবসায়ীর আম নিয়ে ট্রেনে ঢাকায় আমের যাত্রা শুরু হয়েছে।

রাজশাহীতে আমের দাম সর্বনিম্ন গুটি, সর্বোচ্চ গোপালভোগ হলেও করোনায় সংক্রমণের ভয়ে মানুষ স্বত:ফূর্তভাবে বাজারে আসতে না পারায় আমের বেঁচাকেনা তেমন বাড়েনি। তবে, খুব শীঘ্রই আমের বাজারে আম আমদানি হবে বলে মনে করছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।