নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাজশাহীর তানোরে ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করার পর এক হাজার বিঘা জমির আলুর ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।এতে অন্তত উপজেলার অর্ধশতাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন বলে জানা গছে।জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তারা এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন।

কৃষকরা জানিয়েছেন, আলুক্ষেতে ছত্রাক ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে তারা ‘এন্ট্রাকল’ নামের একটি ওষুধ স্প্রে করেছিলেন। এরপরই তাদের আলুগাছ হলদে হয়ে মরে যেতে শুরু করেছে। অনেকের আলুক্ষেত একেবারে ফাঁকা হয়ে গেছে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা এর কোন সমাধান দিতে পারছেন না।

আরও পড়ুন: আলুর লেইট ব্লাইট অথবা মড়ক রোগ ও তার প্রতিকার

তানোরের চাষিরা উপজেলা সদরের ‘মেসার্স সৈয়ব আলী ট্রেডাসর্’ থেকে এই ওষুধ কিনেছিলেন। প্রতিষ্ঠানটির মালিক সৈয়ব আলী ওষুধ কোম্পানিটির পরিবেশক। শনিবার রাতে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন চাষি তার কাছে ছুটে আসেন। তারা সৈয়ব আলীকে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান। সেখানে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন।

উপজেলা সদরে আসা শুকদেবপুর গ্রামের কৃষক শামিম হোসেন বলেন, এ বছর তিনি সাড়ে তিন বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। সব ধরনের ছত্রাক আর মোড়ক থেকে আলুগাছ রক্ষার জন্য শুক্রবার তিনি জমিতে ওষুধ স্প্রে করেন। শনিবার সকালে জমিতে গিয়ে দেখেন সব আলুগাছ পুড়ে গেছে।

আরেক চাষি আসমত আলী বলেন, তিনিও এ বছর দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। তারও একই অবস্থা। তারা বলেন, তাদের এলাকার ৫০ থেকে ৬০ জন আলু চাষির অন্তত এক হাজার বিঘা আলুর ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। তারা এখন ক্ষতিপূরণ চান। নইলে মামলা করবেন।

আরও পড়ুন: আলু চাষে সার প্রয়োগ ও পরিচর্যা

ওষুধটি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘বেয়ার ক্রপসায়েন্স লিমিটেড’ এর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। প্রতিষ্ঠানটির তানোরের পরিবেশক সৈয়ব আলীও কোন কথা বলতে চাননি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামিমুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, কী পরিমাণ জমির ক্ষতির হয়েছে সেটা সরে জমিনে গিয়ে দেখতে হবে।এ বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সেখানে সরে জমিনে যাওয়ার কথা রয়েছে। তারপর একটা সমাধানে আসা যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। ওষুধটি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘বেয়ার ক্রপসায়েন্স লিমিটেড’ এর কর্মকর্তারা ক্ষতি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন।

তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকুবল হাসান এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, এ ব্যাপারে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করি নি।অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও কৃষি অফিসার বিষয়টির দায়িত্ব নিয়েছেন।

এগ্রিকেয়ার/এমবি