ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: চট্টগ্রামে লক্ষ্মীপুর জেলায় বছরে কোটি কোটি টাকার সুপারি বাণিজ্য হয়। অনুকূল আবহাওয়া ও রোগবালাই মুক্ত পরিবেশ হওয়ায় প্রতি বছরই সুপারি উৎপাদন বাড়ছে। বছরজুড়েই সুপারির ব্যাপক চাহিদা থাকায় বাণিজ্যিকভাবে দেশের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি সরবরাহ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে। এবার সুপারিতে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সুপারির দাম নিয়ে অনেকটা হতাশ কৃষক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলার পাঁচটি উপজেলায় এবার সাত হাজার হেক্টর জমিতে সুপারি উৎপাদন হবে ১৭ হাজার টন, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। সে হারে গত ১০ বছরের তুলনায় চলতি বছর ৪ হাজার ১৩৮ টন উৎপাদন বেড়েছে।

২০১০-১১ অর্থবছরে জেলার পাঁচটি উপজেলায় ৬ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে ১২ হাজার ৮৬২ টন সুপারি উৎপাদন হয়। সে তুলনায় ২০২০-২১ অর্থবছরে এসে সাত হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ১৭ হাজার টন সুপারি উৎপাদন হয় এ অঞ্চলে। পাঁচ বছরে এখানকার উৎপাদিত সুপারি থেকে ৩০০ কোটি টাকা আয় হলেও চলতি বছর দ্বিগুণ আয়ের সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

এক মাস ধরে বাগান থেকে জেলার বাজারগুলোতে পাকা সুপারি কৃষকরা আনতে শুরু করেছেন। এ অঞ্চলের সুপারি সাইজে বড় ও সুস্বাদু হওয়ায় জেলার বাইরে সুপারির চাহিদা বেশি। এখন জমজমাট বেচা-কেনা চলছে লক্ষ্মীপুরের বাজারগুলোতে।

৫ ও ৭ নভেম্বর লক্ষ্মীপুরের সুপারির বড় বাজার দালাল বাজার ও লক্ষ্মীপুর উত্তর তেমুহনী সুপারিবাজার ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বেপারিরা সুপারি কিনে বস্তা ভরছেন। চাষীরাও দরকষাকষি করে সুপারি বিক্রি করছেন। প্রতি পণ (৮০টি) সুপারি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকায়। মান ভালো হলে বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকায়। প্রতি কাহন (১৬ পণ) সুপারি এখানে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২৪০ টাকায়।

এছাড়া জেলার রায়পুর উপজেলার মোল্লার হাট, রাখালিয়া বাজার, সদর উপজেলার জকসিন, চন্দ্রগঞ্জ ও ভবানীগঞ্জ, রামগঞ্জ উপজেলার মিরগঞ্জ, রামগঞ্জ বাজারসহ কমলনগর ও রামগতি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সুপারির জমজমাট হাট বসে।

গত বছর সুপারিতে ১ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ছয় হাজার কাহন সুপারি ক্রয় করেন লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাসিন্দা (সুপারি বেপারি) আলমগীর হোসেন। ওই বছর জেলার বাইরে সুপারি সরবরাহ করে তিনি প্রায় ২০ লাখ টাকা লাভ করেন। তিনি বলেন, এ অঞ্চলের সুপারির ব্যাপক চাহিদা। তবে এবার চাহিদার তুলনায় সুপারির উৎপাদন বেশি, তাই দাম একটু কম। তবুও লাভের আশায় সুপারি কেনা-বেচা করছেন তিনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. জাকির হোসেন বলেন, এ অঞ্চলে সুপারির কোনো গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করলে দেশের অর্থনীতিতে আরো সহায়ক ভূমিকা রাখবে। সুপারি চাষ, পরিচর্যা, ফসল সংগ্রহ ও সংরক্ষণের বিষয়ে কৃষি বিভাগ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ