লেবু জাতীয় ফসলের চাষাবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: লেবু জাতীয় ফসলের চাষাবাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে; কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এ মন্তব্য করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯) রাজধানীর খামাড়বাড়ীর আকমু গিয়াস উদ্দিন মিলকী অডিটরিয়ামে লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প এর উদ্যোগে প্রকল্প অবহিতকরণ কর্মশালা-২০১৯তে তিনি এ মন্তব্য করেন।



কৃষিমন্ত্রী উৎপাদন বাড়িয়ে লেবু জাতীয় ফসলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে উল্লেখ করে বলেন, দেশে লেবু জাতীয় ফসলের উৎপাদন চহিদার চেয়ে অনেক কম, আমদানি নির্ভর। প্রতিবছর বিপুল পরিমান কমলা, মাল্টা আমদানি করতে হয়। দেশে আমদানিকৃত এসব কমলা নিম্ন মানের।

সিলেটের আগের সেই স্মৃতিময় সুস্বাদু কমলা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সিলেটের সেই সুস্বাদু কমলা ফিরিয়ে আনতে বাগান তৈরির উদ্যোগ নিলে সরকার প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

কৃষিমন্ত্রী জানান, আমদানিকৃত লেবুজাতীয় ফলের দাম বেশী হওয়ায় সবার পক্ষে ক্রয় করা সম্ভব না। এ প্রেক্ষিতে সরকার দেশের লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে দেশে লেবু জাতীয় ফসলের উৎপাদন দিনে দিনে বাড়ছে তবে চাহিদার তুলনায় অনেক কম। আবার কিছু পরিমান লেবু রপ্তানিও হচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশে মাল্টা, বাতাবি লেবু, কমলা, এলাচি লেবু, জারা লেবু, কলম্বো লেবু, সাতকরা, আদাজামিরসহ নানা ধরনের লেবুজাতীয় ফল রয়েছে। এসব ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য দেশ ব্যাপী বিপ্লব ঘটাতে হবে। এগুলোর প্রসার ও উন্নয়নে সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সাইট্রাস বা লেবুজাতীয় ফলের মধ্যে দেশে মাল্টা, কমলা ও বাতাবি লেবুর চাষের প্রচুর সম্ভাবনাও রয়েছে। বৃষ্টিবহুল ও উঁচু পাহাড়ী অঞ্চলে এ ফল ভাল হয়। লেবুজাতীয় ফলের চাষকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে।

মন্ত্রী এসময় উপস্থিত সংবাদ কর্মিদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশে ফসলের বিপ্লবের পিছনে মুলত: কৃষকদেরই অবদান বেশি। তবে এক্ষেত্রে সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীদের অবদানও কম নয়।

তাদের সাফল্যের কথাও প্রচার হওয়া দরকার। কৃষি বিজ্ঞানীদের বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে, তাদের সমস্যা সমাধানে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কথা বলবেন এবং সমস্যার সমাধান করবেন বলে জানান তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষি সচিব মো: নাসিরুজ্জামান বলেন, প্রকল্পের কার্যকারীতা সম্পর্কে বাস্তবায়নকারী ও উপকারভোগীদের সম্পৃক্ত করতে হবে। বছরে ১৭ কোটি টাকার কমলা ও মাল্টা আমদানি করতে হয়, আর রপ্তানি মাত্র ১০ কোটি টাকা।

আমদানি নির্ভরতা কমাতে না পারলে এ প্রকল্পের কোন গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। আগামীতে অন্তত পক্ষে মাল্টা যেন আমদানী না করতে এর জন্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে।

তিনি জানান, বারি মাল্টা-১ খুবই ভালো মানের মাল্টা। আমাদের কমলা ও মাল্টাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে হবে এবং রপ্তানির যোগ্যতা অর্জন করতে হবে এই লক্ষ্য নিয়ে সবাইকে কাজ করতে হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.মো: আবদুল মুঈদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্প পরিচালক ফারুখ আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রণালয়ের এপিএ পুলের সদস্য কৃষিবিদ মো: হামিদুর রহমান।

উল্লেখ্য এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৬ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে। প্রকল্পের মেয়াকাল ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই)। লেবুজাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ ও উৎপাদন বাড়াতে দেশের সাতটি বিভাগের ৩০টি জেলার ১২৩টি উপজেলায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

লেবু জাতীয় ফসলের চাষাবাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে; কৃষিমন্ত্রী শিরোনামের সংবাদটির তথ্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: কৃষিতে এমন যন্ত্র দেয়া হবে যেন সবাই ব্যবহার করতে পারে; কৃষিমন্ত্রী