বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় ১০০ বিঘা আয়তনের ধানখেতে ফুটিয়ে তোলা ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে স্থান নেওয়ার পর এবার সেই শস্য কাটার উৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামীকাল সোমবার (২৬ এপ্রিল ২০২১)।

ঐদিন স্বেচ্ছাশ্রমে কৃষকের ধান কাটতে এবং একই সাথে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে স্থান পাওয়া শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু আয়োজনের ধান কাটতে বগুড়া যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।

২৬ এপ্রিল ধান কাটা উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, উদ্বোধন করবেন ‘শষ্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ জাতীয় পরিষদের আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এবং কৃষকলীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ।

‘শষ্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ জাতীয় পরিষদের উদ্যোগে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তুলতে চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দা গ্রামে প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে চীন থেকে আনা ডিপ ভায়োলেট রঙের হাইব্রিড ও দেশের ডিপ গ্রিন ধানের হাইব্রিড চারা রোপণ করা হয়। উচ্চ ফলনশীল দুই ধরনের ধানের চারা রোপণের মাধ্যমে এই কর্মযজ্ঞের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং চারা রোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতিদিন ১২০ থেকে ১৩০ জন নারী শ্রমিক কাজ করেছেন। তাদের সঙ্গে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন পুরুষ শ্রমিক ছিলেন। এ শস্যচিত্রের জন্য স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে জমি ইজারা নেওয়া হয়েছে।

ধানের গাছ ছোট অবস্থায় উঁচু থেকে ড্রোন দিয়ে ছবি তোলার পর বঙ্গবন্ধুর অবয়ব ফুটে উঠতে দেখা যায়। ধান চারা যতই বড় হয়েছে ততটাই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ফুটে উঠেছে। গত ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনের আগেই ১৬ মার্চ বিশ্বের সর্ববৃহৎ ‘শস্যচিত্র’ হিসেবে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর’ প্রতিকৃতি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান লাভ করে।

শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর আয়তন ছিল ১২ লাখ ৯২ হাজার বর্গফুট। শস্যচিত্রের দৈর্ঘ্য ৪শ’ মিটার এবং প্রস্থ ছিল ৩শ’ মিটার। ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ গিনেজ বুকে স্থান পেয়ে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশের জন্য। প্রতিদিন শত শত মানুষ শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি দেখতে প্রকল্প এলাকায় ভিড় করছেন।

গাঢ় বেগুনীগাছে বেগুনী ও সবুজ ধানগাছে সোনালী রঙের ধান শীষে ভরে উঠেছে। শীষগুলো বাতাসে দোল খাচ্ছে। পুরো ধানের মাঠ বাতাসে দুলছে উপর থেকে দেখলে মনে হবে বঙ্গবন্ধুর চিত্রটিও দুলছে। রোদ পড়ে চকচক করছে ধানের শীষগুলো। বিশ্বরেকর্ড গড়ার পর এবার ধান কাটার সময় হয়ে পড়েছে।

বিশ্বরেকর্ডে স্থান করে নিয়ে ইতিহাস গড়া বঙ্গবন্ধুর চিত্রটি এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শস্যচিত্র।বিএনসিসি ও কৃষিবিদদের নিপুণ কারুকাজে তৈরি শস্য চিত্রের বিশাল ক্যানভাসে বঙ্গবন্ধু। বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দা গ্রামে ধানের ক্ষেতে তৈরিকৃত ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ ক্ষেতের একশ’ বিঘা জমির ধান কাটা হবে আগামী ২৬ এপ্রিল। ধানকাটার পর সেগুলোর একটি অংশ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে এবং বাকি অংশ কৃষক ও কৃষক সংগঠনের মাঝে শুভেচ্ছা স্বরূপ বিতরণ করা হবে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ‘শষ্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ জাতীয় পরিষদের আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনা শুরু থেকেই আমাদের পরামর্শ দিয়ে সাহস যুগিয়েছিলেন বলেই এই কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করে আমরা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের স্বীকৃতি পেয়েছি। এই অর্জন বাঙালি জাতির। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে এ অর্জন মাইলফলক হয়ে থাকবে। আমরা আগামী ২৬ এপ্রিল স্বেচ্ছাশ্রমে কৃষকের ধান কাটবো এবং শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু উৎসবের ধান কাটা কার্যক্রমের উদ্বোধন করবো।”

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে স্থান পেল শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: সর্ববৃহৎ শষ্যচিত্র (লার্জেস্ট ক্রপ ফিল্ড মোজাইক) ক্যাটাগরিতে গিনেজ রেকর্ডসে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশের ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’। বগুড়ার শেরপুরে ১০০ বিঘা ধানের খেতে তৈরি করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সবচেয়ে বড় প্রতিকৃতি।

আজ মঙ্গলবার (১৬ মার্চ ২০২১) গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের ওয়েবসাইটে এই রেকর্ডটি যুক্ত হয়েছে। বিষয়টি এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের পৃষ্ঠপোষক এবং প্রধান সমন্বয়ক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

আজ সন্ধ্যায় আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, অফিশিয়ালি মেইলের মাধ্যমে আজ বিকেল পৌনে ৪টায় গিনেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমাদের জানায়। তাদের ওয়েবসাইট ও বিষয়টি প্রকাশ করা হয়েছে। বিস্তারিত তথ্য ওয়েবসাইটে দুয়েকদিনের মধ্যে আপলোড করা হতে পারে।

শস্য ক্ষেতে মধ্যে বঙ্গবন্ধুর অবয়ব ফুটিয়ে তোলার কার্যক্রম ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়ার পথেই ছিল। ধানের চারায় জাতির পিতার চিত্র ফুটিয়ে তোলার এই কাজ চলছে বগুড়ার শিবগঞ্জের শেরপুর উপজেলার বালেন্দা গ্রামে। এটি ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় শস্য চিত্র’ হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান করে নিতে পারবে বলে আশা করছিলেন আয়োজকরা।

‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’র কার্যক্রমের আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম গণমাধ্যমকে বলেন, গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে আমাদের বিষয়টি (রেকর্ড) জানিয়েছে। তাদের ওয়েবসাইটে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর তথ্য প্রকাশ করেছে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে আমাদের অভিনন্দন জানিয়েছে। এটি একটি বড় অর্জন। দেশের জন্য বড় অর্জন। বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে এটিও তার একটি মাইলফলক।

গিনেস বুক ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের ওয়েবসাইটে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলেও সেখানে কোন ছবি রাখা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক ফয়জুল সিদ্দিকী বলেন, ‘গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের ওয়েবসাইটে ছবি দেখা যাবে না। গিনেস কর্তৃপক্ষ ছবি আপলোড করে না। চূড়ান্তভাবে গিনেস কর্তৃপক্ষ শস্যচিত্র বঙ্গবন্ধুকে রেকর্ড হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এটিই এখন লার্জেস্ট ক্রপ ফিল্ড মোজাইকের বিশ্ব রেকর্ড।’

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকেয়ার নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদ’ দুই মাস আগে ১০৫ বিঘা জমিতে এই কাজের প্রস্তুতি শুরু করে। কোনো নেতার গিনেস বুকের ‘লার্জেস্ট ক্রপ ফিল্ড মোজাইক (ইমেজ)’ শাখার নতুন রেকর্ড এটি। এর আগের রেকর্ডটি চীনের দখলে। ১৯১৯ সালে ৭৯ হাজার ৫০৫ দশমিক ১৯ বর্গমিটার আয়তনের জমিতে চার রঙের ধানের চারায় কাউ ফিশের ছবি ফুটিয়ে তোলে সাংহাইয়ের লেজিদাও টুরিজম ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিডেট ওই রেকর্ড গড়েছিল।

গত ৯ মার্চ বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বালেন্দা গ্রামে এই কার্যক্রম পরিদর্শন করে গেছে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডের প্রতিনিধি দল। একসপ্তাহ পরই সেটি গিনেস বুকে অন্তর্ভুক্ত হলো রেকর্ড হিসেবে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ