ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: লম্বা আকারের সবজি বরবটি। সাধারণত চাষ হয় শীতকালে। তবে বরবটির জন্য আর শীতকালের অপেক্ষা করে থাকতে হবে না। এখন থেকে চাষ করতে পারেন গ্রীষ্মকালেও। মৌসুম ছাড়া সবজির দাম সবসময়ই বেশি থাকে। ফলে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

বরবটি আমিষ সমৃদ্ধ একটি সবজি। প্রায় সারা বছরই এটি ফলানো যায়। তবে খরিপ তথা গ্রীষ্মকালে ভাল হয়। খুব শীতে ভাল হয় না।

মাটিঃ
দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি বরবটি চাষের জন্য উপযোগী।

জাতঃ
কেগরনাটকীই অনেকদিন পর্যন্ত বরবটি একটি উন্নত জাত হিসেবে চাষ হয়ে আসছে। এখন অবশ্য বেশ কয়েকটি জাত চলে এসেছে। লাল বেণী, তকি, ১০৭০, বনলতা, ঘৃতসুন্দরী, গ্রীন লং, গ্রীন ফলস এফ১, সামুরাই এফ১ ইত্যাদি কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কয়েকটি জাত। কেগরনাটকী জাতটি পৌষ-মাঘ মাস ছাড়া সারা বছরই চাষ করা যায়। মধ্য মাঘ থেকে মধ্য আশ্বিনে চাষ করা যায় ঘৃতসুন্দরী, গ্রীন লং। মধ্য ফাল্গুন থেকে মধ্য আশ্বিন পর্যন্ত চাষ করা যায় ১০৭০ জাতটি। উল্লেখিত জাতগুলোর রমধ্যে কেগরনাটকী ও লাল বেণী জাতের ফলন সবচেয়ে বেশি। তবে খেতে ভাল ঘৃতসুন্দরী।

পড়তে পারেন: জেনে নিন বরবটির পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

সময়ঃ
বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে সাধারণতঃ বীজবপন করা হয়। তাছাড়া আশ্বিন-অগ্রাহায়ণ মাসেও বীপবপন কর হয়। অন্যান্য সময়ও বোনা যেতে পারে।

বীজের পরিমাণঃ
প্রতি শতকে ১০০-১২৫ গ্রাম, হেক্টর প্রতি ৮-১০ কেজি।

জমি তৈরিঃ
৪ – ৫ টি চাষ ও মই দিয়ে ভালভাবে জমি তৈরি করতে হয়।

সারের মাত্রাঃ

সারের নাম সারের পরিমাণ
প্রতি শতকে প্রতি হেক্টরে
ইউরিয়া ১০০ গ্রাম ২৫০ কেজি
টি এস পি ৯০ গ্রাম ২২৫ কেজি
এমওপি ৭৫ গ্রাম ১৮৫ কেজি
গোবর ২০ কেজি ৫ টন

পড়তে পারেন: বরবটির পাতা হলুদ ও দাগ পড়া রোগের প্রতিকার

সার প্রয়োগ পদ্ধতিঃ
গোবর, টিএসপি সম্পূর্ণ পরিমাণ ও অর্ধেক এমওপি সার শেষ চাষের সময় জমিতে প্রয়োগ করতে হয়। পরে বীজ বোনার ২০ দিন পর ১০০ গ্রাম ইউরিয়া ও বাকি অর্ধেক এমওপি সার জমিতে উপরি প্রয়োগ করতে হবে।

বীজ বপনঃ
২ মিটার দূরত্বে সারি করে ২৫-৩০ সেমি. দূরে দূরে বীজ বুনতে হয়। জাত হিসেবে সারির দূরত্ব ১ মিটার বাড়ানো বা কমানো যায়।

পরিচর্যাঃ
চারা বড় হলে মাচা বা বাউনি দিতে হবে। জমিতে পানির যাতে অভাব না হয় সে জন্য প্রয়োজন অনুসারে সবসময় সেচ দিতে হবে। আগাছা পরিষ্কার রাখতে হবে। পোকামাকড় ও রোগ ব্যবস্থাপনা শিমের মতই। জাব পোকা, ফল ছিদ্রকারী পোকা ও মোজেইক রোগ বরবটি চাষের বড় সমস্যা।

ফসল সংগ্রহ ও ফলনঃ
বীজ বোনার ৫০ – ৬০ দিন পর থেকেই বরবটি সংগ্রহ করা যায়। শতক প্রতি ফলন ৩০ – ৬০ কেজি, হেক্টর প্রতি১০ – ১২ টন।

পড়তে পারেন: বরবটির পাতা ও গাছে সাদা পাউডারের মতো দেখা গেলে যা করণীয়

রোগ বালাই দমন ব্যবস্থাপনা

অনেক সময় বরবটির পাতা ও গাছে সাদা পাউডারের মতো দেখা যায়। এছাড়া পাতা হলুদ ও কালো হয়ে গাছ মারা যায়। আজ জানবো কিভাবে এ সমস্যার সহজে প্রতিকার করা যায়।

কারণ: ওইডিয়াম প্রজাতির এক ধরনের ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয় থাকে। আক্রমণ বেশি হলে গাছ মারা যেতে পারে।

প্রতিকার: বরবটির এ সমস্যা দূরকরণে প্রোপিকোনাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে রোগাক্রান্ত গাছে সঠিক নিয়মে স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যাবে। আর এ রোগের আক্রমণ রোধে আগাম বীজ বপন করা ও রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার এবং সুষম সার ব্যবহার করতে হবে।

শীতে নয় চাষ করুন বেশি দামের গ্রীষ্মকালীন বরবটি শিরোনামে সংবাদের তথ্য কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ