নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, সনাতন কৃষি উৎপাদন পদ্ধতির পরিবর্তে দেশে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে ওঠায় দেশের কৃষি উৎপাদন বাড়ছে এবং পেশা হিসেবে কৃষি জীবিকা নির্বাহের স্তর থেকে বানিজ্যিক স্তরে উন্নীত হয়েছে।

এ সময়ে কৃষি মন্ত্রী আউশের আবাদের বৃদ্ধির আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আউশ মৌসুমে পানির সহজলভ্যতা থাকে। এ সময় ফটোপিরিয়ড বেশি পাওয়া যায়। তাই অল্প খরচে বেশি পরিমানে আউশ ধান উৎপাদন সম্ভব।

আজ বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ একাডেমি অব এগ্রিকালচার এর ২৫ বছর পূর্তিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, বর্তমানে আমাদের লক্ষ্য টেকসই খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশের জনগণের জন্য পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সেজন্যে কৃষি সংশ্লিষ্ট সকলকে তাঁদের মেধা ও শ্রম ঢেলে দেশের কৃষিকে আরো এগিয়ে নিতে হবে।

কৃষিমন্ত্রী জানান, সরকার চেয়েছে খাদ্যে স্বয়ংস্বপূর্নাতা অর্জন করতে এবং সেলক্ষ্যে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে আজ দেশ খাদ্যে স্বয়ংসপূর্ণ হয়েছে। এরই ধারাবাহিতকায় কৃষি ক্ষেত্রে গবেষণাকে অগ্রাধিকার দিয়ে খাদ্য উৎপাদনে আধুনিক, উন্নত ও লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ ব্যবহার জোরদার করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

কৃষির সাথে সংশ্লিষ্ট কৃষক, কৃষি বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণ কর্মীসহ বাংলাদেশ একাডেমি অব এগ্রিকালচার এর কৃষিবিদগণের কার্যকর ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

কৃষিমন্ত্রী তার বক্তব্যে আউশ এবং আমন উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দেন। তিনি বলেন, কৃষিক্ষেত্রে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমাতে হবে। আমাদের দেশে পানির স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে।

মন্ত্রী উল্লেখ করেন, বরেন্দ্র এলাকায় যখন নির্বিচারে ডিপ টিউবওয়েল বসানো হয়েছিলো তখন কেউ প্রতিবাদ করেনি। ফলে এখন পানির স্তর ধীরে ধীরে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। সেজন্য ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বাড়ানোর জোর তাগিদও দেন তিনি।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার সরকার কৃষিতে বিভিন্ন সময় ভর্তুকি ও কৃষি উপকরণ কৃষকের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়ায় চাল উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসংম্পূর্ণ। কৃষিতে বিশ্বের কাছে আমরা একটি প্রশংসার জায়গায় পৌঁছে গেছি। আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে দেশের কৃষিবিদরা।

এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলোর সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, হাইব্রিড নিয়ে দেশের এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো বেশ সমালোচনা করে আসছিলো।  কিন্তু আমরা হাইব্রিডের কারণে অসময়ে লাউ, শিম, টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি খেতে পারছি। সেজন্য বিজ্ঞানকে সাহিত্যের দৃষ্টিতে না দেখে বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে দেখলেই মঙ্গল।

জাতীয় এমিরিটাস সাইন্টিস্ট কাজী এম বদরুদ্দোজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আলী আকবর। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ একাডেমি অব এগ্রিকালচারের সহ-সভাপতি আনওয়ারুল কাদের শেখ। আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ একাডেমি অব এগ্রিকালচারের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. আমিনউদ্দিন মৃধা।

কৃষিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ১১টি কৃষি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, ৭ জন প্রথিতযশা বিজ্ঞানী ও ৭জন কৃষককে স্ব স্ব ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ক্রেস্ট অব মেরিট প্রদান করা হয়।