নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা সংলগ্ন পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে। সেই সাথে এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে সাপ আতঙ্ক। সাপের ভয়ে অনেকে রাতে ঘুমোতে পারছে না। ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানিয়েছে, দীর্ঘস্থায়ী বন্যা দেখা দেওয়ায় মূলত এসব প্রাণীর উপদ্রব বেড়েছে।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উজান থেকে বয়ে আসা বন্যার পানিতেই মূলত বাড়ছে পদ্মানদীর পানি এবং সেই সাথে ভেসে আসছে বিভিন্ন প্রজাতীর সাপ। বিশ্বের সবচেয়ে যে কয়েকটি বিষধর সাপ রাসেল ভাইপারের দেখা মিলেছে এই এলাকায়। ধারণা করা হতো এ সাপ বাংলাদেশ থেকে অন্তত ২৫ বছর আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। গত এক বছরে এ সাপের কামড়ে অন্তত তিন থেকে চার জন মারা গেছে এই উপজেলায়।

জানা যায়, সাপের কামড়ে আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন আরো অনেকে। পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী উপজেলা চারঘাট। গত নভেম্বর মাসে পদ্মা নদীর পানি কমতে শুরু করলে উপজেলায় সাপের উপদ্রব বাড়তে থাকে।

গত ০২ নভেম্বর উপজেলা প্রশাসন বড়াল সংলগ্ন বালুঘাট থেকে একটি রাসেল ভাইপার সাপ উদ্বার করে বন্য ও প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করেন। তার এক সপ্তাহ পর আরো দুইটি রাসেল ভাইপার সাপ চর সংলগ্ন লোকালয়ে চলে আসলে স্থানীয়রা মেরে ফেলে।

পরবর্তীতে গত ৩০ শে নভেম্বর রাসেল ভাইপার কামড়ে মারা যায় উপজেলার গোপালপুর গ্রামের মৃত সাদেক মানিক এর ছেলে জামাল উদ্দীন(৩২)। মৃত্যুর আগে সাপে কাটার পরে জামাল উদ্দীন ৭দিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

এছাড়াও উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নের সিপাইপাড়া গ্রামের একজন ও রাওথা গ্রামের একজন পদ্মার চরে গিয়ে সাপের কামড়ে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

অতীতের মতোই এ বছরের শুরু থেকেই নদীর পানি বাড়তে থাকায় দুশ্চিন্তা ও আতংকের মধ্যে দিন কাটছে পদ্মার পাড়ে বসবাসরত এলাকাবাসীর।

উপজেলার চন্দন শহর এলাকার বাসিন্দার সুমন আলী (৩৫) এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, রাসেল ভাইপার আতঙ্কে দিন কাটাতে হচ্ছে পদ্মাপাড়ের মানুষদের। কেউ এখন পদ্মার চরে যেতে সাহস পাচ্ছেন না। যদিও চরের অধিকাংশ বিলীন হয়ে গেছে। বিশেষ করে তার জন্যেই দুশ্চিন্তায় আছি আমরা।

এদিকে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটা রোগীদের জীবন রক্ষাকারী ইঞ্জেকশন অ্যান্টিভেনম থাকলেও নেই তার ব্যবহার।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশিকুর রহমান এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, উপজেলা পর্যায়ে সাপে কাটা রোগীদের জন্য অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ আছে। তাই হাসপাতালে সাপে কাটা রোগী এলে প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া হবে। এতে অনেকেরই জীবনের ঝুঁকি কমবে ।