কৃষিবিদ মোহাম্মদ মারুফ, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: হাঁস-মুরগির কৃমি পরজীবী জনিত একটি রোগ। পশু-পাখির রক্ত আমাশয়ও একটি বড় সমস্যা। সমস্যায় করণীয় কী তা একান্ত জানা প্রয়োজন।

কৃমি মুরগির খাদ্যনালীর উপরের অংশে বিশেষ করে ইসোফেগাস এবং ক্রপ অংশে থাকে। এটি লম্বায় ১ হতে ৬ সেমি পর্যন্ত হতে পারে। এদের ডিম পায়খানার সাথে আসে এবং সুস্থ মুরগির খাদ্যের সাথে পেটের ভিতরে যায় এবং সেখানে প্রাপ্ত বয়স্ক কৃমিতে রুপান্তরিত হয়। মুরগি ছাড়া ও হাঁস,কবুতর, টারকি ও অন্যান্য বন্য পাখিতে ও এ রোগ হয়।

মুরগির গোল বড় কৃমি:

এই কৃমি দেখতে কেঁচোর মত হয় বলে এদেরকে কেঁচো কৃমি বলা হয়। এরা মুরগির ক্ষুদ্রান্তে বাস করে। এই কৃমি মুরগি ছাড়া ও গিনি ফাউল, র্টাকি, রাজহাঁস ও বন্য প্রাণিকে আক্রান্ত করে থাকে। কেঁচো ও ফড়িং এদের ডিম খেয়ে এ রোগ বিস্তারে সাহায্য করে। পূর্ণবয়স্ক মুরগির চেয়ে ছোট বাচ্চারা এ রোগে বেশি সংবেদনশীল হয়। গোল কৃমি লম্বায় ২-৫ ইঞ্চি হয়ে থাকে। বড় কৃমিরা খাদ্য নালীতে ডিম পাড়ে যা বিষ্ঠার সাথে বের হয়ে আসে এবং তা আবার খাদ্য বা পানির মাধ্যমে সুস্থ মুরগির দেহে প্রবেশ করে তাদেরকে আক্রান্ত করে।

পড়তে পারেন: মুরগির গামবোরো রোগের চিকিৎসা

লক্ষণ:

দৈহিক বৃদ্ধি ঠিকমত হবে না। আক্রান্ত মুরগিগুলি ঝিমাবে। পালক উসকো খুসকো হবে। পাতলা পায়খানা থাকবে। ডিম পাড়া কমিয়ে দেবে।

চিকিৎসা:

নিম্নোত্ত যে কোন একটি কৃমিনাশক ওষুধ আক্রান্ত মুরগিকে খাদ্য বা পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।এরপর ২১ দিন পর পুনরায় একই নিয়মে এ ওষুধ প্রদান করতে হবে।

১) এলবেন্ডাজল: প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১০-৪৫ মিগ্রা খাদ্য বা পানির সাথে প্রদান করতে হবে।

২) ফেনবেন্ডাজল: প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ৬.২৫-১৬ মিগ্রা খাদ্যের সাথে মিশিয়ে প্রদান করতে হবে।

৩) লিভামিজল: প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১৮-৩৬ মিগ্রা খাবার পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।

৪) মেবেন্ডাজল: প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ৫০ মিগ্রা খাদ্যবা পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।

পড়তে পারেন: ডিমের হালি ৪২, মুরগির কেজি ৫৫০ টাকা

৫) পাইপারাজিন এডিপেট: প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ০.৫-১ গ্রাম ।

৬) পাইপারাজিন হেক্সাহাইড্রেট: প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ০.৫ গ্রাম (লার্ভার বিরুদ্বে কাজ করে না) তবে ১.২ গ্রাম/কেজি দৈহিক ওজন হিসাবে ১০-৩০ দিন বয়সী কৃমির বিরুদ্বে কার্যকর।

৭) টেট্রামিজল হাইড্রোক্লোরাইড: প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ৪০-৬০ মিগ্রা সব বয়সের কৃমির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

মুরগির রক্ত আমাশয় হয়েছে কী করণীয়?
উত্তর : কসুমিক প্লাস পাউডার ১০০ মুরগির জন্য ২৫ গ্রাম হারে পানিতে মিশিয়ে ১২ ঘণ্টার মধ্যে বারবার খাওয়াতে হবে।

এক কথায় বলতে গেলে হাঁস-মুরগির কৃমির সমস্যায় কী করণীয়?
উত্তর : পাইপ্যারাজিন সাইট্রেট ১০০টি পাখির জন্য ১০ গ্রাম ওষুধ খাবার বা পানির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। প্রতি ৩-৪ মাস পর পর পুনরায় খাওয়াতে হবে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ