ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: মাত্র ৪৫ থেকে ৫০ দিনের মাথায় লাল রঙ্গের রোমান জাতের আলু তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার চাষিরা। তবে বাজারে নিয়ে যেতে হচ্ছে না নতুন আলু। মাঠেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। বেশি দাম পেয়ে খুশি এখানকার আলু চাষিরা।

স্থানীয় সূত্রমতে, কৃষির ওপর নির্ভরশীল ফুলবাড়ী উপজেলায় প্রায় দুই যুগ থেকে আগাম আলু চাষ করা হচ্ছে। এখানকার চাষিরা আগাম বিভিন্ন জাতের আলুর আবাদ করে নিজেদের সচ্ছলতা ফিরেয়ে এনেছেন। পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। এখানকার উৎপাদিত আগাম জাতের আলু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষের চাহিদা মেটাচ্ছে।

দেখা যায়, ফুলবাড়ী পৌরএলাকার পাইকারি ও খুচরা সবজি বাজারে প্রচুর চাহিদা এবং দাম বেশি থাকায় এ উপজেলায় আগেভাগে উঁচু সমতল জমিতে চাষিদের লাগানো আগাম জাতের আলু তোলার হিড়িক পড়েছে। আলু তোলা নিয়ে কৃষক-কিষাণীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। খেত থেকে আলু তুলে বস্তায় ভরছেন। এ সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকাররা মাঠে থাকা সেই বস্তাভর্তি আলু কিনে নিয়ে পিকআপ ভ্যান বা ট্রাকে ভরে নিয়ে যাচ্ছেন নিজ নিজ গন্তব্যে।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

রাজশাহীর বাজারে নতুন আলুর কেজি ২০০ টাকা

আলুর উচ্চফলনশীল ও দেশীয় যেসব জাতে বেশি লাভ

আলুর জমিতে ভেজাল পটাশ সার দিচ্ছেন না তো? চিনুন ৫ উপায়ে

লাভের আশায় ধরা রাজশাহীর আলুচাষিরা

উপজেলার ৭ নম্বর শিবনগর ইউনিয়নের গঙ্গাপ্রসাদ এলাকার আলুচাষি পলাশ হোসেন জানান, এ বছর তিনি ৩ বিঘা জমিতে রোমান ক্যারেট জাতের আলু চাষ করেছেন। এতে হালচাষ, বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ ও কৃষিশ্রমিকদের মজুরিসহ খরচ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা।

এ জমি থেকে তিনি পেয়েছেন প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কেজি আলু। তার উৎপাদিত আলু ক্ষেতেই পাইকারদের কাছে ৬২-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে প্রায় ৩ লাখ টাকার আলু বিক্রি হয়েছে। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে দুই লাখ টাকা লাভ হয়েছে। বেশি দাম পাওয়ার আশায় আগাম জাতের আমন ধান কাটামাড়াই করেই এ জমিতে আগাম আলু চাষ করেছিলেন তিনি।

একই এলাকার আলু চাষি রতন আলী ৮ বিঘা, মানিক হোসেন দেড় বিঘা ও গোলজার হোসেন দেড় বিঘা জমিতে রোমান ক্যারেট জাতের আগাম আলু চাষ করে আশানুরুপ লাভের মুখ দেখছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, উপজেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৯৯৪ হেক্টর জমিতে। ফলন ধরা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ২৩ দশমিক ৮৩ মেট্রিক টন। এতে মোট উৎপাদন ধরা হয়েছে ৪৭ হাজার ৫২০ মেট্রিক টন। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে।

এদিকে মাঠেই আলুর চড়া দাম পেয়ে কৃষক পরিবারে সমৃদ্ধি বয়ে আনছে। প্রতি বছর এ উপজেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক আমন ধান ঘরে তুলে আগাম বাজার পেতে আলুর চাষ করেন। বর্তমানে সেই ক্ষেত থেকে আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। বাড়তি ঝামেলা ছাড়াই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আগাম আলু। আগাম আলু চাষে এলাকার কৃষকরা লাভবান হওয়ায় আগামীতে আগাম আলু ব্যাপক জমিতে চাষাবাদ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। হাটে নয় মাঠেই ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে আলু সংবাদের তথ্য ইত্তেফাক থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ