নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাজশাহীর ‘আমান কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেড’ নামের এক হিমাগারের আলুতে পচন ধরেছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে হিমাগারে থাকা আলুতে পচন ধরে নষ্ট হওয়ার কারণে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

হিমাগার কর্তৃপক্ষ জানান, জেলার পবা উপজেলার মদনহাটি এলাকায় অবস্থিত এ হিমাগারে চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৬৬ হাজার বস্তা আলু রাখা হয়েছে। শ্রম আইন মেনে প্রতিটি বস্তায় ৫০ কেজি করে আলু রাখা হয়। বর্তমান বাজার অনুযায়ী ৫০ কেজির আলুর বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। সেই হিসেবে প্রতিবস্তায় ৫০ কেজি আলুর হিসাব করে দাম আসে ৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ মালিক সমিতির সভাপতি হাজী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, কোন কোল্ড স্টোরেজের আলু পচে গেছে কিংবা কোন ক্ষতিগ্রস্ত হলে ঐ মালিক তার ক্ষতিপূরণ দিবে। আর এটা স্বাভাবিক কৃষকদের ক্ষতি হলে তা মালিক পক্ষ দেখবেই। আলু পচে যাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নাই। যদি এরকম হয়েই থাকে তাহলে কৃষকদের চিন্তার কোন কারণ নাই। তারা ক্ষতিপূরণ পাবেন আশা করছি।

পড়তে পারেন: বাড়িতে বালু দিয়ে দীর্ঘদিন আলু সংরক্ষণের কৌশল

এদিকে কৃষকরা আলু পচে যাওয়ায় ক্ষতিপূরণের দাবিতে হিমাগারের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন। বিপুল পরিমাণ আলু পচে যাওয়ার ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দিতে রাজী হয়েছে হিমাগার কর্র্তৃপক্ষ। আগামী ১০ দিনের মধ্যে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। গতকাল বুধবার সকালে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গুদাম ঘর থেকে আলুর বস্তা বের করতে গিয়ে বিষয়টি নজরে আসে। তারপর থেকেই বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।

তানোর উপজেলার আলুচাষি রেজাউল করিম বলেন, আমি এবার ২ হাজার বস্তা আলু রেখেছি। আমান কোল্ড স্টোরেজে রাখিনি। তামান্না কোল্ড স্টোরেজে রেখেছি তারপরও কোন ভরষা পাচ্ছি না। এবার সব কোল্ড স্টোরেজ ওভারলোড আলু নিয়েছে। পচন যে ধরবে না তার কোন নিশ্চয়তা নাই।

একই এলাকার হাফিজুর রহমান আমান কোল্ড স্টোরেজে আলু রেখেছিলেন দুইশ বস্তা। তার দাবি আলু এক বস্তায় পচন ধরলে সব আলুই পচে যায়। আর আলু পচে গেলে দাম দিয়ে দিবে তাতে তো আর ক্ষতিপূরণ হলো না। ফসল করার জন্য রাখা হয়েছিল। এখন দূর্ঘটনা হিসেবেই মেনে নিতে হবে।

পড়তে পারেন: বীজ আলু সংরক্ষণের কয়েকটি কৌশল

হিমাগারে দেখা যায়, যে বস্তা খোলা হচ্ছে সেখান থেকেই বের হচ্ছে পচা আলু। হিমাগারের সামনে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, হিমাগারের গ্যাস মেশিন খারাপ থাকার পরও আলু লোড করা হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে দুর্বল মেশিন ঠিকমতো গুদাম ঠান্ডা রাখতে পারেনি। ফলে কৃষকের আলু পচে গেছে। এগুলো আর বাজারে বিক্রির উপযোগী নেই।

কথা হয় হিমাগারের ব্যবস্থাপক ফারুক হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, আলুতে পচন ধরার নির্দিষ্ট কোন কারণ থাকে না। বিভিন্ন কারণে এটা হতে পারে। রোগাক্রান্ত আলু স্টোরেজে রাখলে সেখান থেকেও পচন ধরতে পারে। এখন পর্যন্ত আলু পচে যাওয়ার কারণ জানা যায়নি। টাকার হিসেবে কত টাকার আলু নষ্ট হয়েছে তা আমরা ক্ষতিয়ে দেখছি। চাষিদের ক্ষতিপূরণ বিষয়েও ভাবছে কর্তৃপক্ষ।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ