নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির সংকটে ধান চাষ ছেড়ে অনেক চাষি ফল চাষ করছেন। লাভজনক ফসলের দিকে নজর দিয়েছে এখানকার চাষিরা। মসলা ফসল পেঁয়াজ-রসুন চাষ বাড়ছে তুলনামূলকভাবে। চাষিরা বলছেন, এক একর জমিতে ৫০ হাজার খরচে রসুন চাষে প্রায় দেড় লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।

জানা যায়, রাজশাহীর তানোর,পবা, গোদাগাড়ী উপজেলাসহ জেলার কৃষকরা ব্যাপক হারে সাদা সোনা’ নামে খ্যাত রসুনের আবাদ করছেন। বিগত বছরগুলোতে রসুনের ভাল ফলন হওয়ায় চাষিরা উৎসাহী হয়েছেন। সাথে শেষ পর্যায়ে দাম কিছুটা কমলেও সারাবছরই রসুনের দাম থাকে তুঙ্গে।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, সেচ ও সারের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলায় রসুনের বাম্পার হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। উৎপাদিত রসুনের ভালো দাম পাওয়ায় এ মৌসুমেও তারা রসুন চাষে ঝুঁকেছেন বলেও জানায় সরকারি এ দপ্তর।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি একর জমিতে রসুন চাষে শ্রমিক ও চাষ বাবদ খরচ হয় প্রায় ২০ হাজার টাকা। আর বীজ, রাসায়নিক সার ও সেচ বাবদ খরচ হয় আরও ৩০ হাজার টাকা। সর্বমোট করে প্রতি একরে খরচ হয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে একরপ্রতি ৫৫ থেকে ৬০ মণ রসুন পাওয়া যায়। গড়ে প্রতি মণ রসুন আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা করে হলে দাম পাওয়া যায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা থেকে দেড় লাখ টাকা।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৫ হাজার ৪২৩ হেক্টর জমিতে রসুন রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যেখান থেকে ৬২ হাজার ৬৮৯ মেট্রিকটন রসুন উৎপাদন হতে পারে।

জেলার তানোর, বাঘমারা, পবার বিভিন্ন উপজেলার রসুন চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত মৌসুমের শুরুতে রসুনের ভালো দাম না থাকলেও শেষ সময়ে এসে রসুনের ভালো দাম পেয়েছে কৃষকরা। ফলে এ বছরও এ এলাকার কৃষকরা ব্যাপকহারে রসুন আবাদ করেছেন।  রসুন বীজের অঙ্কুরোদগমও ভালো হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করায় এবং প্রয়োজনীয় সেচ ও সার পাওয়ায় রসুনের চারা এখন দ্রত বেড়ে চলেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার রসুনের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।

তানোরের চাষি আব্দুর রাকিব বলেন, কাঁচা রসুন ঘরে তোলা, বাছাই ও বাজারজাতকরণে কিছু টাকা খরচ হয়। তবে ৮০ টাকা কেজির কম রসুন বিক্রি করলে মোটা অংকের লাভ আসে না। দামে রসুন বিক্রি করতে হলে মৌসুমের শুরুতেই বিক্রি না করে একটু অপেক্ষা করতে হয়। পরে দাম বাড়ে।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোছা: উম্মে ছালমা জানান, বর্তমানে জেলায় কৃষকরা রসুন চাষ লাভজনক মনে করায় অনেকেই চাষ করছেন। এছাড়া এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো আছে। খরচ কম ও অধিক লাভ হওয়ায় বর্তমানে এই ফসলের ব্যাপক হারে চাষ হচ্ছে। এবারও রসুনের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি। আমরা বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের সহযোগিতা করছি।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ