ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: পাহাড়ের পর পাহাড়ে সাজানো সবুজ অরণ্য দেশের যেকোনো অঞ্চল থেকে এ জনপদকে করেছে আলাদা। ভূপ্রাকৃতিক গঠনের ফলে স্বতন্ত্র এলাকা হিসেবে আলাদা মর্যাদা দিয়েছে। দেশের এ পাহাড়ি অঞ্চল পর্যটকদের কাছে বরাবরের মতই দারুণ আকর্ষণীয়। এ জনপদ পর্যটকদের কাছে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি স্থানীয়দের কাছে ‘ভূস্বর্গ’।

খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। তৈদুছড়া ঝরনা ও বাদুড় গুহার পরে দীঘিনালার সীমানা পাড়ায় সন্ধান মিলেছে প্রায় শত ফুট উঁচু ‘তুয়ারি মাইরাং ঝরনা’। যা ইতোমধ্যে পাহাড়ের পর্যটকদের কাছে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ নিতে নতুন সন্ধান পাওয়া শত ফুট উঁচু এ ঝরনা দেখতে স্থানীয় পর্যটনপিপাসু ছাড়াও বাইরে থেকে অনেকেই আসছেন। এসব পর্যটকদের নিরাপত্তা ও গাইড সুবিধা দিচ্ছে স্থানীয়রা।

লোকালয় থেকে হেঁটে দীঘিনালার সীমানা পাড়ার নতুন ঝরনায় পৌঁছতে সময় লাগে মাত্র ১ ঘণ্টা। প্রাকৃতিক লতা বেয়ে নামতে হয় পাহাড় থেকে। কয়েকটি পাথুরে জায়গা পারাপারে একমাত্র ভরসা সেই লতা। তবে এসব জায়গায় মোটা দড়ি ব্যবহার করা ঝুঁকিমুক্ত। পাহাড় থেকে লতা বেয়ে নেমে হাঁটতে হয় পাহাড়ি ঝিরিতে। পাহাড়ি ঝিরিতে গা ছমছম অনুভূতি।

ঝিরিতে শত বছর ধরে আটকে আছে বড় বড় পাথর খণ্ড। পাথর ও ক্যাসকেড বেয়ে নামছে পানির স্রোতধারা। উঁচু পাহাড় আর গভীর অরণ্যের কারণে ঝিরি পর্যন্ত পৌঁছে না সূর্যের আলো। ঝিরিপথে হাঁটার পরপরই দেখা মিলবে সুবিশাল এক ঝরনার। এতো উঁচু ঝরনা দেখে চোখ আটকে যাবে যে কারো। ঝরনার উল্টো দিকে পাথুরে পাহাড়। এমন ঝরনা দেখে মুগ্ধ হবেন পর্যটকরা।

দীঘিনালার এ ঝরনা দেখতে আসা পর্যটক মারিয়া, মুশফিকা ও শান্তু জানান, করোনার মধ্যে দীর্ঘদিন যান্ত্রিক জীবনে আটকে ছিলেন তারা। এ ঝরনায় এসে সেই যান্ত্রিক জীবনের মুক্তি মিলেছে তাদের। নাগরিক জীবনের ক্লান্তি দূর করতে অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকদের নতুন স্বাদ দেবে এ ঝরনা।

নেচার ট্র্যাভেলস বাংলাদেশের টিম লিডার ডা. মইনুল হাসান জানান, এটি অত্যন্ত সুন্দর ঝরনা। চারপাশটা বেশ রোমাঞ্চকর। পুরো পথজুড়ে অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ পাওয়া যায়। কোথাও কোথাও ঝিরি এবং ক্যাসকেড বেয়ে নামতে হয়। এসময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। বন্ধুর পথ পেরিয়ে ঝরনা দেখে মুগ্ধ হবেন যে কেউ।

পর্যটকদের যাতায়াতে অবকাঠামো উন্নয়নের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আগত পর্যটকদের গাইড সুবিধাও দেবেন তারা। স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য হতেন ত্রিপুরা জানান, এটি পাহাড়ের নতুন ঝরনা। স্থানীয়রা বেড়াতে আসলেও বাইরের পর্যটকদের কাছে খুব একটা পরিচিত নয়। এখানে যাতায়াত অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ। সরকারের পক্ষ থেকে রাস্তাসহ অবকাঠামো নির্মাণ করা হলে পর্যটকদের কাছে ভ্রমণের অন্যতম স্পট হিসেবে জায়গা করে নিতে পারবে। তৈরি হবে মানুষের নতুন কর্মসংস্থান।

ঝরনায় যাতায়াতে অবকাঠামো উন্নয়নের কথা জানিয়েছেন দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ উল্ল্যাহ। তিনি জানান, দীঘিনালায় তৈদুছড়া ঝরনা ও বাদুড় গুহাসহ বেশ কিছু পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। তবে দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে পর্যটকদের যাতায়াতে অসুবিধা হয়। তুয়ারি মাইরাং পর্যটকদের কাছে নতুন আর্কষণ হতে পারে বলে জানান ইউএনও।

ঘুরে আসুন তুয়ারি মাইরাং ঝরনা শিরোনামে তথ্যটি জাগো নিউজ থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার / এমবি