পাবদা মাছ চাষ করে সাতক্ষীরা চাষীদের সাফল্য
পাবদা মাছ চাষ করে সাতক্ষীরা চাষীদের সাফল্য

পাবদা মাছ চাষ করে সাতক্ষীরার মৎস্য চাষীরা চমৎকার সাফল্য অর্জন করেছেন। মাত্র ৫-৬ মাসের মধ্যে এই মাছ বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে, ফলে বছরে দুইবার চাষ করা সম্ভব হচ্ছে। দেশের বাজার ছাড়াও বিদেশে এর চাহিদা বেড়েছে, যা চাষীদের জন্য লাভের নতুন দ্বার উন্মোচন করছে।

মৎস্য চাষীদের মতে, পাবদা মাছ অল্প সময়ে উচ্চ উৎপাদন দেয়, যা তাদের আগ্রহের মূল কারণ। সাদা মাছের তুলনায় পাবদা মাছ চাষে তিনগুণ বেশি ফলন পাওয়া যায় একই জমিতে, তবে সঠিক পরিচর্যা ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার প্রয়োজন। মিশ্র চাষের মাধ্যমে উৎপাদন আরও বাড়ছে, এবং একই জমিতে বছরে দুইবার পাবদা চাষ করা সম্ভব হওয়ায় কৃষকরা আরও লাভবান হচ্ছেন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার খানপুর গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা নাজমুল হুদা ২০১৮ সালে লেখাপড়া ছেড়ে ৬ বিঘা জমিতে পাবদা মাছ চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি ৪টি খামারের মালিক এবং তার উৎপাদিত পাবদা মাছ দেশের পাশাপাশি ভারতের বাজারেও সুনাম অর্জন করেছে। প্রতি মণ মাছের দাম ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকায় পৌঁছেছে, যা তাকে উদ্যোক্তা হিসেবে সফল করে তুলেছে।

মাও. রেজাউল ইসলাম নামের আরেক সফল চাষী ১০ বিঘা জমিতে পাবদা চাষে ২০-২২ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন, এবং ৪-৫ মাস পর তার প্রত্যাশিত বিক্রয় মূল্য ৩৫-৪০ লক্ষ টাকা। এ ধরনের লাভজনক চাষের ফলে সাতক্ষীরার আরও চাষীরা পাবদা চাষে ঝুঁকছেন।

সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্বে) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরা উপকূলীয় জেলা হিসেবে মৎস্য সম্পদে একটি উদ্বৃত্ত জেলা। এ জেলায় ১ লক্ষ ৪৯ হাজার মেট্রিকটন চিংড়ি ও সাদা মাছ উৎপাদন হয়। এখানে চিংড়ি মাছের পাশাপাশি সাদা মাছের উৎপাদনও লক্ষনীয়। প্রায় ৬৫ হাজার মেট্রিকটন কার্প জাতীয় মাছ সাতক্ষীরা জেলায় উৎপাদন হচ্ছে। এখানে পাবদা ও তেলাপিয়া মাছের উৎপাদন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে, ইদানিং সাতক্ষীরা সদর, তালা ও কলারোয়া উপজেলায় পাবদা মাছ বেশী উৎপাদন হচ্ছে কারণ এটা বিদেশে রপ্তানী হচ্ছে। বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশ ভারতে এটি বেশী যাচ্ছে। রপ্তানী হওয়ার কারনে চাষীরা ও ভালো দাম পাচ্ছেন। প্রতি কেজি ৩’শ থেকে সাড়ে ৩ ’শ টাকা বিক্রি হচ্ছে। চাষীরা খুব স্বল্প সময়ে ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যে লাভ তারা তাদের ঘরে তুলতে পারছেন। আর তাই লাভজনক হওয়ায় পাবদা মাছের চাষ সাতক্ষীরায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদেশে রপ্তানী যোগ্য হওয়ায় মৎস্য অফিস থেকে চাষীদের পাবদা চাষে উদ্বুদ্ধসহ তাদের নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে আরো জানান এ মৎস্য কর্মকর্তা।

বাসস
আআ/এগ্রিকেয়ার