গত দশকে পোল্ট্রি ও

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: গত দশকে পোল্ট্রি ও ডেইরি খাতে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে; কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, গত দশকে দুধ, মাছ, মাংস, ডিমের উৎপাদনও হয়েছে।

আজ বুধবার (১১ ডিসেম্বর, ২০১৯) রাজধানীর খামারবাড়ী কৃষিবিদ ইনস্টিটউশনের কনভেনশন হলে আয়োজিত Launching Ceremony of Climate Smart Agriculture Investment Plan (CSAIP) & Livestock and Dairy Development Project (LDDP) অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেছেন, পুষ্টির অন্যতম প্রধান উৎস হলো মাছ, মাংস, দুধ ডিম। আমাদের মাথাপিছু যে আয় তা দিয়ে সবার পক্ষে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা সম্ভব না। মাথাপিছু আয় বাড়াতে হলে কৃষিকে আধুনিক কৃষিতে নিয়ে যেতে হবে এবং প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানি করতে হবে।

তিনি বলেন, শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে এর পাশাপাশি উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে হবে। কৃষিই এ দেশের কৃষ্টি।  কৃষিই এ দেশের অর্থনীতির প্রধান হাতিয়ার।

জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বিরূপ প্রভাব পড়ে জীববৈচিত্র্যে। নষ্ট হয় কৃষি ও শষ্যক্ষেত। নানা ধরনের অসুবিধায় পড়ে পশু-পাখি, হাঁস-মুরগি।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, একসময় বাংলাদেশের বাজেটের ১৫-২০ শতাংশ বিদেশি সাহায্য নির্ভর ছিল, বর্তমানে তা ২ শতাংশ। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রে পুষ্টিমানের বিষয়টি আগে আসে।

আমাদের প্রতিনিয়ত আমিষের চাহিদা মেটাতে দুধ, মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে সফলতা এসেছে। মাঠের কর্মিদের কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করবো। উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে উন্নত রাষ্ট্রের মর্যাদা অর্জন করবো।

কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, বিগত দশকে পোল্ট্রি ও ডেইরি খাতে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। দুধ, মাছ, মাংস ও ডিমের উৎপাদনও বেড়েছে। জলবায়ুর ক্রমাগত পরিবর্তনের লাগামকে টেনে ধরতে না পারলে কৃষির উৎপাদন মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং সমগ্র বিশ্বে খাদ্য সংকট প্রকট আকার ধারন করবে।

জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে হচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবনাক্ততা ঘুর্ণিঝড় সহ অনেক ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এর ফলে উপকূলীয় এলাকায় লবনাক্ততা বাড়ছে, কৃষি জমি কমে যাচ্ছে বলেন কৃষি মন্ত্রী।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সবার আগে পড়ে শস্য জাতীয় ফসল, মাছ ও প্রাণিজ সম্পদ খাতে। এসব খাতে ব্যাপক সাফল্য আসলেও যেকোনো সময় তা ম্লান হতে পারে।

এমডিজি’র অধিকাংশ লক্ষ্য অর্জন করেছি ঠিক একইভাবে এসডিজিও অর্জন করবো। বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান ২১০০ গ্রহণ করেছে যার ফলে জলবায়ু জনিত সমস্যা মোকাবেলায় সক্ষম হবে।

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন; দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দানাদার খাদ্যশস্য উৎপাদনে বিশ্বে রোল মডেল, দুধ উৎপাদন ৯মিলিয়ন টন মাংস উৎপাদনেও এসেছে সফলতা।

আশার কথা হচ্ছে দেশের দক্ষ কৃষিবিজ্ঞানীদের অদম্য চেষ্টার ফলে লবণাক্ততা সহিষ্ণু, খরা-বন্যা সহিষ্ণু, সময় নিরপেক্ষ ও স্বল্পকালীন উন্নতজাতের কিছু ফসলের জাত উদ্ভাবিত হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে কৃষিকে নতুন মাত্রা দিতে কোন অঞ্চলের জন্য কোন ধরনের ফসল প্রয়োজন তা চিহ্নিত করে আবাদ করতে হবে।

পানির সুষ্ঠু ব্যবহার করে সেচ পানির অপচয় কমাতে হবে। প্রতিটি জেলায় উপযোগী সুনির্দিষ্ট ফসলকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদেরকে শুধু বর্তমান নিয়ে থাকলে হবে না, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভাবতে হবে।

বিশ্ব ব্যাংক ৫শ মিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে যা জলবায়ু পরিবর্তন জনীত সমস্যা মোকবেলায় সহায়ক হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্য করেন মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো: আশরাফ আলী খান খসরু।

স্বাগত বক্তব্য করেন মোঃ তৌফিক আরিফ যুগ্ম সচিব (ব্লু ইকোনমি)। আরও বক্তব্য করেন বিশ্ব ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডাইরেক্টর Dandan Chen;  Regnal Drector south Asia sustainable Development, john roome. সভাপতিত্ব করেন মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: রইছউল আলম মন্ডল।

গত দশকে পোল্ট্রি ও ডেইরি খাতে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে; কৃষিমন্ত্রী এ মন্তব্যের সাথে সবাই একমত পোষণ করেন।