গরুর মাংস আমদানির আত্মঘাতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: গরুর মাংস আমদানির আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন দেশিয় উদ্যোক্তা-খামারিরা। তাদের দাবি, এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন উদ্যোক্তা ও খামারিরা।

দেশিয় উদ্যোক্তারা বলছেন, বিদেশ থেকে গরুর মাংস আমদানি হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষ, মাংস উৎপাদনকারী, খামারি ও এর সাথে জড়িতরা।



তাই সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে হিমায়িত গরুর মাংস আমদানি বন্ধ করতে হবে। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বক্তব্য তুলে ধরেন দেশের উদ্যোক্তা, খামারিরা।

সংবাদ সম্মেলনে হিমায়িত গরুর মাংস আমদানির বিরুপ প্রভাব নিয়ে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শরীফ আহমেদ চৌধুরী।

পরিসখ্যানের আলোকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জনপ্রতি দৈনিক ১২০ গ্রাম মাংসের চাহিদা হিসেবে বার্ষিক মোট চাহিদা ৭২ দশমিক ৯৭ লাখ মেট্রিক টন।

২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি থেকে মাংস উৎপাদিত হয়েছে ৭৫ দশমিক ১৪ লাখ মেট্রিক টন। অর্থাৎ ২ দশমিক ১৭ লাখ মেট্রিক টন উদ্বৃত্ত হয়েছে। এর মধ্যে গরু-ছাগলের মাংস উৎপাদনের ৫৫ শতাংশ।

তারা বলেন, দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে বিদেশ থেকে হিমায়িত গরুর মাংস আমদানি-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা বর্তমান সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে।

এটি বাস্তবায়ন হলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দেশিয় খামারি, উৎপাদনকারী ও সংশ্লিষ্টরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শুধু তাই নয় পরিবেশ ও কৃষিতে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, এনিমেল হেলথ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আহকাব) সভাপতি ডা. এম নজরুল ইসলাম, প্রাক্তন সভাপতি মোমিন উদ দৌলা, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি অ্যাসোসিয়েশনের (বিভিএ) মহাসচিব ড. মো হাবিবুর রহমান মোল্লা, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মাসের (বিডিএফএ) মহাসচিব শাহ ইমরান, বেঙ্গল মিটের হেড অব কমার্শিয়াল অ্যান্ড এক্সপোর্ট সাইদুল হক ভূইয়াসহ অনেকে।

উল্লেখ্য দক্ষিণ আমেরিকার বাণিজ্য জোট মারকোসারভুক্ত চার দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি নিয়ে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) গত ৮ আগস্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি ধারণাপত্র পাঠিয়েছে।

তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ব্রাজিল নেবে আরও পোশাক এরপাশাপাশি ব্রাজিল থেকে বাংলাদেশ গরুর মাংস আমদানি করবে। এর ফলে উভয় দেশই লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে এ জন্য অবশ্য দুই পক্ষকেই পরস্পরের পণ্যের ওপর শুল্ক হার কমাতে হবে।

এমন পরিস্থিতিতে গরুর মাংস আমদানির আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন দেশিয় উদ্যোক্তা-খামারিদের।