মুহাম্মদ শাহাদৎ হোসাইন সিদ্দিকী, কৃষি প্রতিবেদক: অনেকের ধারণা ঢেঁড়স কেবল জমিতেই উৎপাদন সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে খুব সহজে টবে ঢেঁড়স চাষ করা যায়। চারা তৈরি করে অথবা সরাসরি মূল টবে বপন করে ঢেঁড়স চাষ করে পরিবারের চাহিদা খুব সহজেই মেটানো সম্ভব।

পাঠক আসুন জেনে নেয়া যাক পদ্ধতিগুলো। বীজ ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখার পর পানি ফেলে দিয়ে টিস্যুতে মুড়িয়ে রাখার পর বীজের মুখ ফেঁটে সাদা দেখাবে। সেগুলো মাটিতে বপন করলে পরের দিন চারা বের হয়।

যাহোক বীজ বপনের দুই একদিনের দিনের মধ্যে চারা গজাবে। চারা তৈরি করার জন্য ওয়ানটাইম গ্লাস, পলিব্যাগ, বাজারের ব্যাগ, গামলা, দুধের প্যাকেট, চানাচুর-বিস্কুটের প্যাকেট ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে।

গজানোর ১০ থেকে ১৫ দিন পর চারা মূল টবে স্থানান্তর করবেন। টব হিসেবে পাঁচ লিটার তেলের বোতল, ফলের ঝুড়ি, বালতি, মাটির টব ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়। একটি ফলের ঝুড়িতে চারটি গাছ ভালো হয়।

তেলের বোতলে একটিই চারা দিতে হবে। এক-দেড় মাস পর থেকেই ফুল আসা শুরু করবে। ফুল থেকে ঢেঁড়স ধরার দু-একদিন পরেই সেটি বড় হয়ে যায়। প্রতিদিনই প্রায় ঢেঁড়স সংগ্রহ করা যায়।

ঢেঁড়স গাছে সাদামাছি বা জাব পোকার আক্রমণ হতে পারে। যার দরুণ ভাইরাস রোগ হয়। একবার ভাইরাস রোগ হলে আর ভালো করার উপায় নেই। তাই, প্রতিদিন পর্যবেক্ষণ করে পোকা দমন করতে হবে।

অল্প পোকা হলে হাত দিয়ে পিষিয়ে দমন করাই উত্তম। বেশি আক্রমণ হলে, পোকা দমনের জন্য এডমায়ার বা ইমিটাফ বা রিপকর্ড বা একতারা ব্যবহার করতে পারেন।

প্রতি লিটার পানিতে এক মিলি হারে মিশাতে হবে। খাওয়ার উপযোগি ঢেঁড়স তোলার পর স্প্রে করতে হবে। স্প্রে করার ৩ থেকে ৫ দিন ফসল তুলা যাবে না।

ঢেঁড়স উচ্চ পুষ্টিমান সম্পন্ন সবজি। এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও আয়রন আছে। ঢেঁড়সের ভাজি ও তরকারি খেতেও খুব মজাদার।

লেখক: উপজেলা কৃষি অফিসার প্রেষণে সিনিয়র সহকারি পরিচালক জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি (নাটা), গাজীপুর ও  উদ্ভাবক, কৃষকের ডিজিটাল ঠিকানা মোবাইল এ্যাপ।