জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: দেশে প্রথমবারের মতো বীমার আওতায় আসছে গবাদিপশু। ফার্মটেক অ্যাপের মাধ্যমে গবাদিপশু শনাক্তকরণ ও তালিকাভুক্ত করে বীমা সেবায় নিয়ে আসা হচ্ছে।

এ লক্ষ্যে প্রযুক্তির সাহায্যে গবাদি পশু সনাক্তকরনের জন্য পাইলট প্রজেক্টে একসাথে কাজ করবে গ্রীন ডেল্টা ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক ফিনটেক কোম্পানি ইনফোকর্প টেকনোলজিস।

আজ বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে এ বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ইনফোকর্প টেকনোলজিসের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও মি: রয় লাই এবং গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ফারজানা চৌধুরী তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের হয়ে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে সংশ্লিষ্টরা জানান, গবাদিপশুর স্বাস্থ্যসহ সার্বিক পরিস্থিতি প্রযুক্তির মাধ্যমে জানা যাবে। এ বীমার আওতায় গবাদিপশুর দূর্ঘটনার জন্যেও ক্ষতিপূরুণের আবেদন করতে পারবেন বীমাকারীরা।

এ প্রকল্পের মাধ্যমে গবাদিপশু ফিজিক্যালি এসেটে পরিণত হবে। প্রযুক্তির সাহায্যে পশুর অবস্থান নির্ণয় করতে পারবে ব্যাংক। এছাড়া খামারি নিজেও খুব সহজে প্রযুক্তিটি ব্যবহার করে খামারের উন্নয়ন করতে পারবেন। খামারিদের মাঝে সচেতনতাও তৈরিও এ প্রকল্পের অন্যতম বড় উদ্দেশ্যে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গবাদিপশুর কানে একটি ট্যাগ লাগানো থাকবে। মোবাইল এ্যাপসের মাধ্যমে ওই গবাদিপশুর যাবতীয় বিষয় শনাক্ত করা যাবে। ট্যাগে প্রাথমিকভাবে খরচ হবে এক ডলারের (৮৫ টাকার মতো) মতো। ভবিষ্যতে এ খরচ আরও কমবে।

অনুষ্ঠানে ফারজানা চৌধুরী বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষি আরও শক্তিশালী ভূমিকাতে রুপ নিতে পারবে। এক সময়ে আমদানি করা এই ট্যাগ নিজেরাই তৈরি করতে পারবো। আর মোবাইল ফোন তো ইতিমধ্যে তৈরি হয়েই গেছে। ফলে আর্থ সামাজিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে এ প্রকল্প।

তিনি জানান, গ্রীন ডেল্টা ইন্সুরেন্স অত্যাধুনিক প্রযুক্তির পথে হেঁটে বাংলাদেশের গবাদিপশুদের জন্য বীমার আওতায় আনার ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। যার মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নতি ঘটবে এদশের কৃষকদের।

ইনফোকর্পের সিইও মি. রয় লাই বলেন, গ্রীন ডল্টো ইন্স্যুরন্সে লিমিটেডের অংশীদার হয়ে আমরা আমাদের ব্লকচেইন প্ল্যাটফর্মকে বাংলাদেশে নিয়ে আসতে পেরে খুবই আনন্দিত। মায়ানমারের পর বাংলাদেশে আমাদের দ্বিতীয় বাজার।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাষ করি যে, এ অংশীদারিত্ব একটি অর্থনৈতিক বাস্তুতন্ত্র তৈরি করবে যেখানে গবাদীপশুর বীমা ইস্যুর ক্ষেত্রে পরিচয় এবং মালিকানা সনাক্তকরনের ব্যবস্থা থাকবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে ফার্মটেক অ্যাপের মাধ্যমে গবাদিপশু সনাক্তকরন ও তালিকাভুক্ত করার সেবা প্রথমবারের মতো শুরু হচ্ছে। এর ফলে গবাদি পশু লালন ও পালনের জন্য পুঁজি অবমুক্তি করা হবে এবং লাভবান হবে পশু মালিকেরা।

যার মাধ্যমে সামাজিক ও এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের দিকে এগিয়ে যাবে দেশের আড়াই কোটি গবাদিপশুর মালিকেরা। সিঙ্গাপুরভিত্তিক ফিনটেক কোম্পানি ইনফোকর্প টেকনোলজিস এবং গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের যৌথ অংশীদারিত্বে একটি যৌথ পাইলট প্রকল্প প্রনয়ন করা হয়েছে।

যেখানে ইনফোকর্পের ফার্মটেক অ্যাপের মাধ্যমে গবাদিপশু ও তাদের মালিকদের পরিচয়, গবাদীপশু বীমা ইস্যুকরন এবং এনএফসি ট্যাগের মাধ্যমে গবাদিপশুর ট্র্যাকিং ও সনাক্তকরন করা যাবে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গ্রীন ডেল্টা ইনস্যুরেন্স প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেড এর উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাসির এ চৌধুরী ও অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং কোম্পানী সচিব সৈয়দ মইনুদ্দিন আহমেদ।

উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড ইন চার্জ ব্র্যান্ড অ্যান্ড কমিউনিকেশন মো. মনিরউজ্জামান খান।

প্রকল্পের সার্বিক কার্যক্রম ও অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনায় ছিলেন গ্রীন ডেল্টা ইনস্যুরেন্স প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেড এর ডেপুটি সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (ডিএসভিপি) আলী তারেক পারভেজ।