আবু খালিদ, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: পোল্ট্রি শিল্পের উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বয় রেখে কাজ করার জন্যে পোল্ট্রি বোর্ড চান উদ্যোক্তারা। যেখানে শিল্পটির সমস্যা সমাধান, সম্ভাবনা, দ্রুত সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণ, গবেষণাসহ সব ধরণের কাজ একটা বৃত্তের মধ্যে থেকে সম্পাদন হবে।

তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ইতিবাচক রয়েছে। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে প্রস্তাবনা পেলে গুরুত্বসহকারে দেখবে মন্ত্রণালয়। দেশের পোল্ট্রি শিল্পের ‍উদ্যোক্তা ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধতনদের সাথে কথা বলে এ তথ্য উঠে এসেছে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পোল্ট্রি শিল্পের উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারির সমন্বয় খুবই জরুরি। বোর্ডটি হলে আরও দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে শিল্পটি।

কেমন পোল্ট্রি বোর্ড চান উদ্যোক্তারা এমন প্রশ্নের উত্তরে ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখা এর সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আলী ইমাম বলেন, এমন একটা সংস্থা হবে যেখান থেকে সবকিছু লিঁয়াজো বা সমন্বয় করে কার্যক্রম সম্পাদন করা হবে।

যেমন গবেষণা, পরিসংখ্যান, বিশ্লেষণে যারা যুক্ত থাকবেন সংশ্লিষ্টদের সাথে যুক্ত হয়ে বিষয়টি সমন্বয় করবেন তারা। আবার উৎপাদনে যারা দায়িত্বে থাকবেন তারা শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে সবকিছু সম্পাদন করবেন। ট্যাক্সের বিষয়গুলো একজন দেখবেন, ট্যাক্স বিষয়ে কোন সমস্যা বা দরকার হলে উনার সাথে যুক্ত হয়ে সমাধান পেয়ে যাবেন।

মোটকথা এমন একটি সংস্থা হবে যেখানে গেলেই পোল্ট্রি শিল্প সংশ্লিষ্ট সব কিছুর সমাধান দ্রুত মিলবে। কেননা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত পেতে অনেক সময়ে কাজ করতে গিয়ে দেরি হয়ে যায়। এতে বেশ বিপাকে পরতে হয় সংশ্লিষ্টদের।

এ বোর্ডে যারা থাকবেন তারা পোল্ট্রির স্বার্থ নিয়ে কাজ করবেন। যে কোন কাজের জন্য দ্রুত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে তারা উদ্যোগ নিবেন। এর মাধ্যমে এখাতের দ্রুত গতিতে উন্নয়ন হবে।

উদ্যোক্তাদের এমন দাবি এগ্রিকেয়ার২৪.কম মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে প্রাণিসম্পদের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন এর কাছে তুলে ধরে।

এ বিষয়ে এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন, বর্তমান সরকার পোল্ট্রির উন্নয়নে খুবই ইতিবাচক। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে প্রস্তাবনা আসলে অবশ্যই আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখবো। এবং কীভাবে বোর্ডটি গঠন করা যায় তা আলোচনার মধ্যে দিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। তবে তাদের আসতে হবে।

ফিড ইন্ড্রাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ফিআব) সভাপতি এহতেশাম বি. শাহজাহান বলেন, সরকারের যে ডিপার্টমেন্টগুলো পোল্ট্রির সাথে যুক্ত, তাদের মধ্যে সমন্বয় পাওয়া খুব কঠিন হয়ে যায়। এর ফলে বিভিন্ন রকম হয়রানির শিকার হতে হয়।

তিনি বলেন, এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আমাদের একটা পোল্ট্রি উন্নয়ন বোর্ড থাকা উচিত। বোর্ড থাকলে এই বোর্ডের মাধ্যমে সরকারি-বেসরকারি-আধাসরকারি সবার একটা সমন্বয় থাকবে। দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হবে।

শুধু প্রোটিনের চাহিদা পূরণ নয়, প্রয়োজন স্বাস্থ্যকরভাবে উৎপাদন, বাজারজাত ও সরকারের সহয়তা। এজন্য পোল্ট্রি শিল্পের আলাদা বোর্ড গঠন দাবি যৌক্তিক মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, এ খাতে সঠিক ও উন্নত পরিকল্পনা অভাব রয়েছে। সেখান থেকে বিবেচনা করলে দেখা যাবে পোল্ট্রি বোর্ড দরকার। উদীয়মান পোল্ট্রি শিল্প সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বয়হীনতায় বেশ পিঁছিয়ে পড়ছে। এজন্যে সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে একটা সেতু বন্ধন তৈরি খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। আর তার সমাধান মিলবে একটি পোল্ট্রি বোর্ড গঠনের মধ্যে দিয়ে।