জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: আসন্ন ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে কৃষি (কৃষি, মৎস্য, পোল্ট্রি, ডেইরি) ও শিল্প খাতের বিভিন্ন পণ্যের ওপর আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

আজ বৃহস্পতিবার (৭ জুন) দুপুরে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে জাতীয় সংসদে এ বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। তার আগে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর ওই প্রস্তাবে সই করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

কৃষি খাতে আমদানি ও রপ্তানীযোগ্য পণ্যের শুল্ক নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, কৃষিখাতের প্রধান উপকরণসমূহ, বিশেষ করে সার, বীজ, কীটনাশক ইত্যাদি আমদানিতে শুন্য শুল্কহার অব্যাহত রাখা হয়েছে।

কৃষকের উৎপাদিত ধান চালের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে চাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করে সর্বোচ্চ আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ এবং রেগুলেটরি ডিউটি ৩ শতাংশ পুনঃআরোপ করা হয়েছে।

কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত গম, ভূট্টা, আলু ও কাসাভা থেকে উৎপাদিত স্টার্চের শুল্ক হার যৌক্তিকীকরণ করে আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ এবং রেগুলেটরি ডিউটি ১০ শতাংশ হারে নির্ধারণের প্রস্তাব করছি।

মৎস্য, পোল্ট্রি ও ডেইরি সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, কৃষির অন্যতম উপখাত এবং দেশের মানুষের আমিষের প্রধান উৎস মৎস্য, পোল্ট্রি ও ডেইরি খাতের টেকসই উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে উক্ত খাতের খাদ্য সামগ্রী ও নানাবিধ উপকরণ আমদানিতে আমরা বিগত কয়েক বছর শুল্ক ও কর অব্যাহতি দিয়ে আসছি।

এই খাতে প্রদত্ত প্রণোদনা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি পোল্ট্রি ফিডের প্রয়োজনীয় উপকরণ সয়াবিন অয়েল কেক/ফ্লাওয়ারে শুল্ক হ্রাস করে শূন্য শতাংশ এবং রেগুলেটরি ডিউটি ৫ শতাংশ প্রস্তাব করছি।

শিল্প খাতের আওতায় এনে গুঁড়া দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ নিয়ে অর্থমন্ত্রী বক্তব্যে বলেন, পূর্ণ ননীযুক্ত গুঁড়াদুধের সমজাতীয় পুষ্টি উপাদানে তৈরি ফিল্ড মিল্ক পাউডার নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

এই বিবেচনায় পার্শ্ববর্তী দেশ যেমন- মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় উক্ত পণ্য আমদানিতে বিশেষ প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে গুঁড়া দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের কাঁচামাল ফিল্ড মিল্ক পাউডার বাল্ক আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশে হ্রাসের প্রস্তাব করছি।

খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী জানান, স্থানীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ বিভিন্ন শিল্প যেমন-মধু, চুইংগাম ও সুগার কনফেকশনারি, চকলেট ও কোকোয়া সমৃদ্ধ খাদ্য, বাদাম, সিরিয়াল, ওটস ইত্যাদির প্রতিরক্ষণের স্বার্থে এসমস্ত খাদ্য উপকরণ বাল্কে (Bulk) আমদানিতে হ্রাসকৃত শুল্কহার অব্যাহত রেখে খুচরা মোড়কে সরাসরি বিক্রয়ের জন্য আমদানিতে শুল্কহার ২৫ শতাংশে বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।

সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে তিনি জানান, সামুদ্রিক মৎস্য আহরণপূর্বক রপ্তানির মাধ্যমে আমরা উল্লেখযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ করি। একাজে ব্যবহার্য বিশেষায়িত ফিশিং নেট আমদানিতে শুল্ক প্রণোদনা প্রদানের প্রস্তাব করছি।

তামাক নিয়ে তিনি জানান, তামাক একটি কৃষিপণ্য হলেও জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিধায় তামাকের উৎপাদনকে সরকার সবসময় নিরুৎসাহিত করে আসছে। তাই তামাক জাতীয় সকল পণ্যের আমদানি, উৎপাদন ও বিক্রয়ে উচ্চহারে শুল্ক-কর আরোপিত আছে। তবে তামাক প্রক্রিয়াজাতপূর্বক রপ্তানি উৎসাহিত করতে তামাকজাত পণ্যের উপর আরোপিত ২৫ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করছি।

সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে ৪ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

পাঠক কৃষি, মৎস্য, ডেইরি, প্রাণিসম্পদ খাতে বাজেটে আরও কী কী থাকছে সেগুলো নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করবে এগ্রিকেয়ার২৪.কম। আমাদের নিউজগুলো পেতে ফেসবুক https://www.facebook.com/AgriCare24com-320632075085761/ পেজে লগইন করুন, প্রকাশিত নিউজ চলে যাবে আপনার ফেসবুক পেজে।