মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিকারী ও

ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিকারী ও ১৫ আগষ্টের খুনিদের কোন ক্ষমা নয়; কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এ মন্তব্য করেছেন। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর, ২০১৯) রাজধানীর অফীসার্স ক্লাবে আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেছেন।

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অস্তিত্ব প্রকাশের দিন আজ (১৬ ডিসেম্বর)। ৪৮ বছর আগে এই দিনে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী হাতের অস্ত্র ফেলে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়েছিল বিজয়ী বাঙালির সামনে। আর বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল বাঙালির।

বাঙালির মুক্তি এসেছিল অনেক রক্ত ঝরিয়ে, শোষণ-বঞ্চনা আর যন্ত্রণার শেষে লাখো মানুষের আত্মাহুতি ও বাংলা মায়ের আত্মদানের বিনিময়ে। আজকের দিনটি আমাদের জন্য আনন্দের দিন, গৌরবের দিন শ্রেষ্ঠতম অর্জনের দিন।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিকারীদের কোন ক্ষমা নয়, ১৫ আগষ্ঠের খুনিদের কোন ক্ষমা নয়। স্বাধীনতার পর ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ আখ্যায়িত করে যারা অপমান করেছিল, সেই তাদের কণ্ঠেই এখন বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা। দারিদ্র্য আর দুর্যোগের বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের পথে।

মন্ত্রী বলেন; বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তরের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার সামনে দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেন তিনি এবং বলেন শত্রুদের মোকাবিলা করার জন্য যার কাছে যা আছে, তা-ই নিয়ে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। একাত্তর সালের ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পথ বেয়ে এসেছে বাঙালির বিজয়।

পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৪ বছরের মুক্তির সংগ্রাম ও একাত্তর সালের ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পথ বেয়ে এসেছে বাঙালির বিজয়।

সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে সৃষ্ট পাকিস্তানে ১৯৪৭ সালেই বাঙালির

ওপর প্রথম আঘাত এসেছিল। রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার ঘোষণা দিয়েছিলেন পাকিস্তানি শাসকেরা। ১৯৫২ সালে বুকের তাজা রক্তে রাজপথ রাঙিয়ে বাংলার বীর সন্তানেরা মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছিলেন।

ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধিকারের চেতনার যে স্ফুরণ ঘটেছিল, কালক্রমে তা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে রূপ নেয়।

মন্ত্রী আরও বলেন; স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এ অর্জনের পেছনে রয়েছে শোষণ-বঞ্চনা এবং রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের ইতিহাস। লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই।

দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে

দেশ, গণতন্ত্রবিরোধী সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে আমরা শান্তি ও সমৃদ্ধশালী একটি সেনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবই। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ আর্থ-সামাজিক প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশ যে অগ্রগতি গত কয়েক বছরে অর্জন করেছে, উন্নয়নের সেই ধারা অব্যাহত রাখতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের  মধ্যদিয়ে আমরা কাঙ্খিত লক্ষে পৌছাব।

মন্ত্রী পরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধ বিষয়ক বিশেষ কমিটির সদস্য সচিব মোঃ আব্দুল হাই। আরও বক্তব্য রাখেন অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন খান।  অনুষ্ঠান শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিকারী ও ১৫ আগষ্টের খুনিদের কোন ক্ষমা নয়; কৃষিমন্ত্রী সংবাদটির তথ্য কৃষিমন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন।