নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: প্লাস্টিক পণ্যের বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যবহার সর্বত্র করার পাশাপাশি সরকার কাঁচা পাট রফতানির সকল বাধা দূর করবে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।

আজ বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশনের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।

গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, পাট আমাদের আদীকালের পণ্য। পাটই চিল একমাত্র বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনকারী খাত । পাটখাতের বৈষম্যদূরীকরণের প্রেক্ষাপটে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিলো। কারণ পাকিস্তান বাংলাদেশের উৎপাদিত পাট থেকে অর্জিত বৈদেশিক মূদ্রা  দেশের উন্নয়নে সঠিকভাবে করত না।

পাটশিল্পের শ্রমিকগণ ন্যায্য মজুরী পেত না। জাতির পিতা এসব বৈষম্য বিরুদ্ধে শোচ্চার ছিলেন। তার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। আর সেই পাট এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। এটা হতে পারে না। সারাবিশ্বে এখন প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদেরও প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে পাটের পণ্যের ব্যবহার করা হবে।

সরকার কাঁচা পাট রফতানির সকল বাধা দূর করবে। তিনি আরও বলেন, কাঁচা পাট রফতানির বাধা সমূহ চিহ্নিত করে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া কথা ভাবছে সরকার। বাংলাদেশে উৎপাদিত কাঁচা পাট অত্যন্ত উন্নতমানের হওয়ায় বিশ্বে দেশের পাটের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।

এ সকল রপ্তানি সম্ভাবনা গুলো খতিয়ে দেখা হবে। পাট চাষিকে বাঁচাতে সরকার বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন,পণ্য ও কাঁচা পাট রপ্তানীর সকল বাধা দূর করার উদ্যোগ নেবে। এছাড়া বিজেএমসি অনেক পাটব্যবসায়িদের সঠিক সময়ে তাদের পাওনা টাকা পরিশোধ করতে পারেনি।

যার কারণে অনেকে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ব্যাংকগুলো থেকেও মিল মালিক বা রপ্তানিকারকরা যাতে সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা পায় সে বিষয়ে সরকার কাজ করছে।

এদিকে এন্টি ডাম্পিং এর বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ভারত  পাট পণ্য রপ্তানিতে এন্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করেছে । এটা করা হয় দেশীয় শল্পকে বাঁচানোর জন্য। তারা তাদের শিল্পকে বাঁচানোর জন্য সেটা করতে পারে। এর পরও বৈদেশিক বাণিজ্যিক যুক্তি থাকায় ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য আমরা ভারতের সঙ্গে এন্টি ডাম্পিং শুল্ক প্রত্যাহারের নিয়ে আলোচনা করব।

এদিকে দুপুরে বাংলাদেশ কটন এসোসিয়েশনের সঙ্গে এক আলোচনাসভায় গোলাম দস্তগীর বলেন, তামাক বর্জন করে তুলার চাষ বাড়ানো হবে। যেখানে তামাক চাষ করা হয় সেখানে মানুষ যেন তুলা চাষ করে সেটার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে। আর তামাকের চাহিদা মেটানোর জন্য বিদেশ থেকে আমদানি করা হবে। এতে করে দেশের ট্যারিফও বাড়বে।

মন্ত্রী আরও বলেন, তুলা শিল্পকে বাঁচাতে সরকার কাজ করবে। কারণ গার্মেন্টস শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে তুলা ব্যবহার করা হয়। তুলা না থাকলে আমাদের শিল্পখাতে অনেক সমস্যা হবে। বৈদেশিক আয় কমে যাবে। সেজন্য আমরা তুলা চাষ বৃদ্ধি এবং একই সাথে বৈদেশিকভাবে কিভাবে আরও বেশি আয় করা যায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

আলোচন সভায় বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ কটন এসোসিয়েশনের নেতৃাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।