ডাঃ ভবতোষ কান্তি সরকার, জেলা (যশোর) প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: প্ৰতি বছর পবিত্ৰ ঈদ উল আযহা উপলক্ষে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে কোরবাণীর পশু উৎপাদন, সুস্থ সবল পশু নিরাপদে-নিৰ্বিঘ্নে বাজারজাতকরণ, পশু উৎপাদনকারী/খামারিদের ব্যয়ের সাথে সঙ্গতি রেখে উপযুক্ত মূল্য প্ৰাপ্তির পরিবেশ সৃষ্টি এবং দেশের ধৰ্মপ্ৰাণ মানুষের কাছে তাদের চাহিদানুযায়ী কোরবাণীর পশু তুলে দেওয়ার নৈতিক দায় বৰ্তায় প্ৰাণিসম্পদ বিভাগের কাঁধে।

গণপ্ৰজাতণ্ত্ৰী বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্ৰাণিসম্পদ মন্ত্ৰণালয়ের কাৰ্যকর নেতৃত্বে প্ৰাণিসম্পদ বিভাগ তার মাঠ পৰ্যায়ের জনবল নিয়ে এই সুবিশাল কৰ্মযজ্ঞটি সাধ্যমত সম্পাদন করে আসছে।

বিগত বছরগুলোতে দেশে ভারতীয় গরুর অনুপ্ৰবেশ প্ৰায় বন্ধ হওয়ায় সরকারের অতিমাত্ৰায় সতৰ্ক ভূমিকা এবং দেশীয় খামারিদের পশু তৈরিতে ইতিবাচক উৎসাহ-উদ্দীপনা মন্ত্ৰণালয় ও বিভাগের দায়িত্ব বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে নি:সন্দেহে।

চার মাসের অধিক সময় ধরে ঘরে ঘরে গিয়ে হৃষ্টপুষ্টকরণ খামারি তালিকা প্ৰস্তুত ও উৎপাদিত পশুর সঠিক সংখ্যা নিরুপণ, নিরাপদ পশু তৈরিতে প্ৰশিক্ষণ, উঠান বৈঠক, মতবিনিময় সভা, খামারি সংযোগ ও খামার পরিদৰ্শনের মাধ্যমে খামারিদের সবধরণের প্ৰযুক্তিগত সহায়তা ও পরামৰ্শদান এবং শেষ মূহুৰ্তে প্ৰতিটি কোরবাণীর হাটে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কৰ্তৃক পশুস্বাস্থ্য পরীক্ষার মত গুরুত্বপূৰ্ণ কৰ্মকাণ্ডগুলো বাস্তবায়ন করতে হয় প্ৰাণিসম্পদ বিভাগের মাঠ পৰ্যায়ের কৰ্মকৰ্তা- কৰ্মচারীদের।

সরকারের এই অতি জনগুরুত্বসম্পন্ন বিভাগের মাঠ পৰ্যায়ে বৰ্তমানে প্ৰায় রাজস্ব কৰ্মচারীশুন্য। দু’একটি প্ৰকল্পে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবীরাই এখন বিভাগের মাঠ পৰ্যায়ের কৰ্মকাণ্ডের মূল হাতিয়ার।

প্ৰকল্পের নিৰ্ধারিত দায়িত্বের অতিরিক্ত এইসব কাজ করতে যারা বাধ্য নয়, মাঠ পৰ্যায়ের কৰ্মকৰ্তাগণ ব্যক্তিগত দক্ষতাবলে সুকৌশলে সকল বিভাগীয় কৰ্মকাণ্ড বাস্তবায়নে তাদের কাজে লাগাচ্ছেন। তারপরেও শতভাগ স্বেচ্ছাসেবীদের সংগত কারণেই কাজে লাগানো সম্ভব নয় এবং শতভাগ কৰ্মকৰ্তাদের সেই কারিশমা থাকবে এমনটাও নয়।

এমনই রূঢ় বাস্তবতায় এই বিভাগের কৰ্মকৰ্তা- কৰ্মচারীরা আলাদীনের আশ্চৰ্য প্ৰদীপের সহায়তা নিয়ে বিভাগের প্ৰতি, দেশের প্ৰতি, দেশের মানুষের প্ৰতি দায়বদ্ধতা থেকে কাজ করে যাচ্ছে। বিভাগের সৃষ্টিলগ্নের জনবল কাঠামো আজও সম্বল।

জনগণ, দেশ, সময়ের চাহিদা সব উপেক্ষিত এই একটি বিভাগের ক্ষেত্ৰে। দীৰ্ঘকাল ধরে আলোয় আসার জন্য অপেক্ষমান একটি যুগোপযোগী ‘প্ৰাণিসম্পদ বিভাগীয় জনবল কাঠামো প্ৰস্তাবনা’। সরকারের উচ্চ পৰ্যায়ের রাজনৈতিক আশ্বাস আছে। তথাপিও তা বাস্তবায়নের ভবিষ্যত পরিণতি সম্পৰ্কে আমাদের কিছু জানা নেই।