ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ইসলামী শরীয়তে পবিত্রতা বলতে আত্মিক ও শারীরিক পবিত্রতা দুটিকেই বোঝায়। পবিত্রতা হলো ইমানের অর্ধেক অংশ। হারাম বিষয়গুলো থেকে বেঁচে থাকাও পবিত্রতার অংশ। আল্লাহ তায়ালা বান্দার প্রয়োজন এবং সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি অবগত। আর তাই পবিত্র কোরআনে এবং রাসুল (সা.)-এর মাধ্যমে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি।

পবিত্র কোরআন মাজীদে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘সাফল্য লাভ করবে সে, যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে, আর তার প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে এবং নামাজ কায়েম করে। কিন্তু তোমরা তো দুনিয়ার জীবনকেই প্রাধান্য দাও অথচ আখিরাতই অধিক উৎকৃষ্ট ও স্থায়ী। (সুরা আল-আলা, আয়াত : ১৪-১৭)

তিনি আরও বলেন, ‘তার নিদর্শনের মধ্যে হলো এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তার কাছে শান্তি লাভ করতে পারো। আর তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে অবশ্যই বহু নিদর্শন আছে সেই সম্প্রদায়ের জন্য, যারা চিন্তা করে।’ (সুরা আর-রুম, আয়াত : ২১)

অন্য আয়াতে তিনি বলেন, ‘শপথ আকাশের এবং যিনি ওটা নির্মাণ করেছেন তার। কসম জমিনের এবং যিনি তা বিস্তৃত করেছেন। শপথ মানুষের এবং তার, যিনি তাকে সুঠাম করেছেন। অতঃপর তাকে তার অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞানদান করেছেন। সে-ই সফলকাম হয়েছে যে নিজ আত্মাকে পবিত্র করেছে। সে-ই ব্যর্থ হয়েছে যে নিজ আত্মাকে কলুষিত করেছে।’ (সুরা আশ-শামস, আয়াত : ৫-১০)

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘লোকরা তোমাকে ঋতু সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করছে। বলো, ‘তা অশুচি’। কাজেই ঋতুকালে স্ত্রী-সহবাস থেকে বিরত থাকো এবং যে পর্যন্ত পবিত্র না হয়, তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। তারপর যখন পবিত্র হবে, তখন তাদের সঙ্গে সহবাস করো, যেভাবে আল্লাহ অনুমতি দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাহকারীদের ভালোবাসেন আর পবিত্রতা অবলম্বনকারীদেরও ভালোবাসেন। (সুরা আল-বাকারা, আয়াত : ২২২)

তিনি বলেন ‘হে মুমিনরা! তোমরা যখন নামাজের জন্য উঠবে, তখন তোমাদের মুখমণ্ডল এবং কনুই পর্যন্ত উভয় হাত ধৌত করবে। আর তোমাদের মাথা মাসেহ করবে এবং পা গোড়ালি পর্যন্ত ধৌত করবে। তোমরা যদি অপবিত্র অবস্থায় থাকো তবে বিধিমতো পবিত্রতা অর্জন করবে। আর যদি পীড়িত হও বা সফরে থাকো অথবা তোমাদের কেউ যদি মলত্যাগ করে আসে অথবা যদি তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করো আর পানি না পাও, তাহলে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে এবং তা দিয়ে তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ করে নেবে। আল্লাহ তোমাদের ওপর সংকীর্ণতা চাপিয়ে দিতে চান না, তিনি তোমাদের পবিত্র করতে চান আর তোমাদের প্রতি তার নিয়ামত পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। (সুরা আল-মায়েদা, আয়াত : ৬)

আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, ‘হে ইমানদাররা! তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাজের নিকটবর্তী হয়ো না, যতক্ষণ না তোমরা যা বলো, তা বুঝতে পারো এবং অপবিত্র অবস্থায়ও (নামাজের কাছে যেও না) গোসল না করা পর্যন্ত (মসজিদে) পথ অতিক্রম করা ব্যতীত এবং যদি তোমরা পীড়িত হও কিংবা সফরে থাকো; অথবা তোমাদের কেউ শৌচস্থান থেকে আসে অথবা তোমরা স্ত্রী সঙ্গম করে থাকো, অতঃপর পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করো, আর তা দিয়ে তোমাদের মুখমণ্ডল ও উভয় হাত মাসহ করো; আল্লাহ নিশ্চয়ই পাপ মোচনকারী, ক্ষমাশীল।’ (সুরা আন-নিসা, আয়াত : ৪৩)

অন্য আয়াতে বলেন, ‘আর তোমরা যিনা-ব্যভিচারের কাছেও যেও না, তা হচ্ছে অশ্লীল কাজ আর অতি জঘন্য পথ।’ (সুরা আল-ইসরা, আয়াত : ৩২)

আরও বলেন, ‘নিশ্চয় যারা এটা পছন্দ করে যে, মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ুক, তাদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আজাব। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জানো না।’ (সুরা আন-নুর, আয়াত : ১৯)

‘যেদিন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কোনো কাজে আসবে না। কেবল (সাফল্য লাভ করবে) সে ব্যক্তি যে বিশুদ্ধ অন্তর নিয়ে আল্লাহর নিকট আসবে। আর জান্নাতকে মুত্তাকিদের নিকটবর্তী করা হবে।’ (সুরা আশ-শুআরা, আয়াত : ৮৮-৯০)

‘নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহর স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন যা তোমরা করো।’ (সুরা আল-আনকাবুত, আয়াত : ৪৫)

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর নিশ্চয় ইবরাহিম তার দীনের অনুসারীদের অন্তর্ভুক্ত। স্মরণ করো, সে তার রবের নিকট উপস্থিত হয়েছিল বিশুদ্ধ চিত্তে। (সুরা আস-সাফফাত/ ৩৭, আয়াত : ৮৩-৮৪)

রাসুল (সা.)-কে সম্বোধন করে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে বস্ত্রাবৃত! ওঠো, অতঃপর সতর্ক করো। আর তোমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করো। আর তোমার পোশাকপরিচ্ছদ পবিত্র করো।’ (সুরা আল-মুদ্দাসসির, আয়াত : ১-৪)

ইসলামে জানার ক্ষেত্রে লজ্জা না করে শিখে নেওয়া অধিক কল্যাণকর। আল্লাহ আমাদের ইসলামের বিধান অনুযায়ী পবিত্রতা রক্ষার তৌফিক দান করুন। ( আমিন)

আত্মিক ও শারীরিক পবিত্রতা লাভের উপায় শিরোনামে তথ্যটি দেশ রুপান্তর থেকে নেওয়া হয়েছে।