ইউসুফ আলী সুমন, মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: দেশের অন্যতম ধান-চালের মোকাম নওগাঁর মহাদেবপুরে ফের বেড়েছে চালের দাম। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ঊর্ধ্বোমুখী হচ্ছে চালের বাজার। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি পাঁচ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়।

সিন্ডিকেট করে দাম বৃদ্ধি নিয়ে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন অজুহাত দেখালেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন মিলে চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। আর মিল মালিকরা বলছেন অফ সিজনে বাজারে ধানের সংকট। অধিক লাভের আশায় ধান কিনে বড় বড় মিলার ও ব্যবসায়ীরা মজুত করেছেন। তাই দিন দিন বাজার অস্থির হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

ছোট-বড় মিলে উপজেলাজুড়ে প্রায় ৬০০টি অটোমেটিক-হাসকিং রাইস মিলে উৎপাদিত লাখ লাখ মেট্রিক টন চাল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সরবরাহ করা হয়। এ কারণে মহাদেবপুর মোকামে চালের দাম বৃদ্ধি পেলে অস্থির হয়ে ওঠে সারা দেশের বাজার। এদিকে ক্রমেই চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ।

উপজেলার মেসার্স শিউলি অটো রাইস মিলের মালিক আব্দুল জব্বার জানান, গত সপ্তাহে চিকন জিরা শাইল চাল বিক্রি করেছেন কেজিপ্রতি ৫৪ টাকা, মিনিকেট ৫৬ টাকা ও কাটারি ভোগ ৫৮ টাকায়। বর্তমানে সবগুলোতেই কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা বেড়েছে। খুচরা চাল বিক্রেতা আখতার হোসেন জানান, চিকন চাল মিলগেটে কিনেছেন প্রতিকেজি ৬২ টাকায়। বিক্রি করছেন ৬৩-৬৫ টাকায়।

বাংলাদেশ অটোরাইস মিল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান গণি জানান, বড় বড় ব্যবসায়ীরা ধান কিনে মজুত করেছেন। অধিক লাভের আশায় বাজারে ছাড়ছেন না। অফ সিজনে কৃষকের ঘরে ধান না থাকায় মিলারদের চড়া দামে মজুতদারদের কাছ থেকে ধান কিনতে হচ্ছে।

উপজেলা সদরের ভ্যানচালক লোকমান হোসেন জানান, এযাবৎ কালের সর্বোচ্চ দামে চাল বিক্রি হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন। একই কথা বলেন জাহাঙ্গীর আলম, তাহের আলী, ফারুক হোসেনসহ ৩০-৩৫ জন নিম্ন আয়ের মানুষ।

মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলন জানান, অকারণে কেউ দ্রব্যমূল্য বেশি নিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই বাজার নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং ও মজুতদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছেন বলেও জানান তিনি।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ